শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪

দিল্লির হিংসার ঘটনায় অভিযুক্ত আনসারের আদি বাড়ি বাংলায়! তার জীবনযাপন অবাক করার মতোই

আত্রেয়ী সেন

প্রকাশিত: এপ্রিল ১৯, ২০২২, ০৯:০৪ পিএম | আপডেট: এপ্রিল ২০, ২০২২, ০৩:০৮ এএম

দিল্লির হিংসার ঘটনায় অভিযুক্ত আনসারের আদি বাড়ি বাংলায়! তার জীবনযাপন অবাক করার মতোই
দিল্লির হিংসার ঘটনায় অভিযুক্ত আনসারের আদি বাড়ি বাংলায়! তার জীবনযাপন অবাক করার মতোই

বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ সম্প্রতি হনুমান জয়ন্তীর দিন দিল্লিতে একটি ধর্মীয় শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করে অশান্তির সৃষ্টি হয়। যা কিছুক্ষণের মধ্যেই সংঘর্ষের রূপ নেয়। দুই গোষ্ঠীর এই সংঘর্ষে অনেকেই আহত হন। তাঁদের মধ্যে সাধারণ পথচলতি মানুষের পাশাপাশি আহত হন পুলিশ কর্মীও। আহত হন দুই গোষ্ঠীর অনেকেই। 

এবার দিল্লির সেই হিংসার ঘটনার মূল অভিযুক্ত আনসারকে গ্রেফতার করা হল। এই আনসারের সঙ্গে যোগ মিলল বাংলার। শুধু আনসারই নয়, অন্য অভিযুক্ত আসলামেরও বাংলার সঙ্গে যোগ মিলেছে। জানা গিয়েছে, এই দুই অভিযুক্তের আদি বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুরে। পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়া শিল্পাঞ্চল এলাকার বাসিন্দা আনসার এবং শেখ আসলামের বাড়ি মহিষাদলের কাঞ্চনপুরে। মূল অভিযুক্ত আনসারের হলদিয়াতে একটি বাড়ি রয়েছে। তবে, এই বাড়িতে খুব একটা থাকত না আনসার। এই আনসারের জীবনযাত্রা দেখলে চোখ কপালে ওঠার মতোই। 

গায়ে মোটা সোনার হার, আংটি। হাতে গোছা গোছা টাকা। এভাবেই আনসারকে দেখে অভ্যস্ত তার পরিচিতরা। হনুমান জয়ন্তীতে দিল্লির জাহাঙ্গীরপুরীতে হিংসার মূল অভিযুক্ত আনসারের বিলাসবহুল জীবনযাপন দেখলে অবাক না হয়ে উপায় নেই। এই জীবনেই অভ্যস্ত আনসার। সোশ্যাল মিডিয়ায় পাওয়া তার একাধিক ছবিতেই তা স্পষ্ট। সেইসব ছবিতেই কখনও তাকে পানপাত্র হাতে, কখনও গোছা গোছা টাকা হাতে আবার কখনও বিলাসবহুল গাড়ি নিয়ে নিজের বৈভব প্রকাশ করতে দেখা গিয়েছে। সেইসব ছবিতে খোশমেজাজেই দেখা গিয়েছে আনসারকে। 

উল্লেখ্য, এই আনসার একটা সময় বাংলাতেই থাকত। এই বাংলার বুকে পূর্ব মেদিনীপুরে তার আদি বাড়ি। এহেন বিলাসবহুল জীবনযাপন করা এবং খোশমেজাজে থাকা আনসার কেন এমন হামলা চালাতে গেল, এখন তা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন। এই মুহূর্তে তার সঙ্গে কোনও সংগঠনের যোগ রয়েছে কিনা তা খোঁজ করছে পুলিশ। পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়ায় আনসারের আদি বাড়ি। তার গ্রামের বাসিন্দারা কোনোভাবেই বিশ্বাস করতে পারছেন না যে, আনসার কোনও হিংসার ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে। তার প্রতিবেশীরা উল্টে বলছেন যে, আনসার ভালো ছেলে। পাড়ায় যখনই সে আসত হাত খুলে দানধ্যান করত। 

জানা গিয়েছে, আনসারের গ্রামের বাড়ি হলদিয়ার কুমারগ্রামে। সেখানে আনসারের একটি দোতলা বাড়ি রয়েছে। যা এই মুহূর্তে বন্ধ রয়েছে। কারণ বেশ কয়েক বছর আগে আনসাররা সপরিবারে দিল্লিতে গিয়ে থাকতে শুরু করে। তবে, দিল্লিতে থাকলেও এখনও তারা হলদিয়ার ভোটার। প্রতিবার নির্বাচনের সময় এখানে আসত আনসাররা। তাছাড়া ঈদেও আসত আনসার। ঈদে গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দানধ্যান করত। আনসার দামি দামি জিনিস দান করত। এমনটাই জানিয়েছেন গ্রামবাসীরা। 

এহেন আনসারের সোনার গয়না খুব পছন্দের। আনসারের গ্রেফতারিতে হতাশ তার হলদিয়ার গ্রামের প্রতিবেশীরা। তাঁদের একটাই দাবি, আনসার ভালো ছেলে। তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে। যদিও আনসার কী ব্যবসা করত সে বিষয়ে কিছুই বলতে পারেননি কুমারগ্রামের তার প্রতিবেশীরা। তবে, জানা গিয়েছে, পুরনো জিনিসপত্র কেনাবেচার ব্য়বসা করত। কিন্তু যার জোরে এত বৈভব সেই টাকা, ব্যবসার এত টাকার উৎস কী? উঠছে প্রশ্ন। 

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, শনিবার দিল্লির জাঙ্গাগীরপুরীতে হনুমানজয়ন্তী উপলক্ষে শোভাযাত্রা বের হয়েছিল। অভিযোগ, ওই শোভাযাত্রার উপর হামলা চালায় একদল দুষ্কৃতী। ঘটনায় মূল অভিযুক্ত আনসার ও সোনু শেখকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতার হওয়ার পরও দাপট অব্যাহত আনসারের। রোহিনির আদালতে পুলিশের হেফাজতে যাওয়ার সময় ‘পুষ্পা’র নকল করতে দেখা গিয়েছে তাকে।