শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪

মা‍‍`য়ের দর্শনে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন ভক্তরা! রইল ইন্দ্রগাছার জাগ্রত বামাকালীর কাহিনী

মৌসুমী মোদক

প্রকাশিত: অক্টোবর ২০, ২০২২, ০৭:০৭ পিএম | আপডেট: অক্টোবর ২১, ২০২২, ০১:২৪ এএম

মা‍‍`য়ের দর্শনে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন ভক্তরা! রইল ইন্দ্রগাছার জাগ্রত বামাকালীর কাহিনী
মা‍‍`য়ের দর্শনে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন ভক্তরা! রইল ইন্দ্রগাছার জাগ্রত বামাকালীর কাহিনী

হাতে আর মাত্র কয়েকটা দিন। তারপরই দীপান্বিতা অমাবস্যা। আগামী সোমবার,  দীপান্বিতা অমাবস্যার দিন কালীর আরাধনায় মেতে উঠবেন আপামর বাঙালি। আর এই রাজ্যে এমন কিছু কালী মন্দির রয়েছে যেগুলিকে খুবই জাগ্রত বলে মনে করা হয়। তার মধ্যে অন্যতম ইন্দ্রগাছা গ্রামের বামাকালী।

 বছরের পর বছর ধরে ভক্তদের কাছে জাগ্রত কালীপুজো হিসাবেই গণ্য হয়ে আসছে ইন্দ্রগাছার বামাকালী। গ্রামের নাম ইন্দ্রগাছা থেকেই এই বামা কালীর নাম হয়েছে। যদিও চলতি ভাষায় এই গ্রামকে বলা হয় ইনগাছা। ভক্তদের ধারণা, বামাকালীর আরাধনা করলে খালি হাতে ফিরতে হয় না। মন্দিরের জাগ্রত মা কালী সকলের মনোবাঞ্ছা পূর্ণ করেন। 

প্রতিবছর ইন্দ্রগাছায় বামাকালীর যে মৃন্ময়ী মূর্তি তৈরি করা হয় তার উচ্চতা আনুমানিক ২২ ফুট। দুর্গাপুজোর পর ত্রয়োদশীর দিন থেকেই প্রতিমা তৈরি করার কাজ শুরু হয়ে যায়। মূল মন্দির থেকে সামান্য দূরে গঠন মন্দিরে হয় এই কাজ। প্রতিমার গায়ে রং দেওয়ার কাজ শুরু হয় কালীপুজোর আগের দিন অর্থাৎ বারের দিন থেকে। অলংকার এবং অন্যান্য সব কাজ হয়ে যাওয়ার পর অমাবস্যার মধ্যরাতে সবার শেষে হয় চক্ষুদান।

পূজোর দিন মধ্যরাতে গঠনমন্দির থেকে মূল মন্দিরে কাঁধে করে আনা হয় মায়ের এই বিশাল এই মৃন্ময়ী মূর্তি। ৫০-৬০ জনের বেশি মানুষ শাল কাঠের উপর চাপিয়ে ইন্দ্রগাছা বামাকালীকে মূল মন্দিরে নিয়ে আসেন। গঠন মন্দির থেকে মূল মন্দিরে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে সময় লাগে মাত্র কয়েক মিনিট। মশাল জ্বালিয়ে, নিজস্ব ঢাকের বোল বাজিয়ে এবং কিছু গান গেয়ে মূল মন্দিরে নিয়ে আসা হয় বামাকালীকে।

বামাকালীর পুজো কীভাবে শুরু তা জানতে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হরকুনার গভীর জঙ্গলে সাধনা করতে গিয়ে মায়ের সাক্ষাৎ পান সাধক রামকানাই। মায়ের জীবন্ত সাক্ষাৎ রূপ তিনি থালায় এঁকে নেন। সেই রূপের ছবি দেখে বানানো হয় মায়ের মৃন্ময়ী মূর্তি।  যে থালায় মায়ের জীবন্ত রূপ দেখে ছবি এঁকেছিলেন সে থালা আজও বহু গোপনে সযত্নে রেখে দিয়েছে ইন্দ্রগাছা গ্ৰামের বাসিন্দারা। পাশাপাশি রামকানাই পুজোর জন্য একটি প্রার্থনা মন্ত্র লিখেছিলেন। সেই মন্ত্র রামকানাইয়ের পুঁথি হিসেবে পরিচিত। এই মন্ত্রেই পূজিতা হন মা।