বাংলায় বনেদী বাড়ির পুজোগুলির মধ্যে অন্যতম হল হাওড়ার মাকড়দহ শ্রীমানী বাড়ির পুজো। ১০৪ বছর ধরে মাকড়দহ শ্রীমানী বাড়িতে পূজিত হচ্ছেন মা দুর্গা। তবে এখানে দেবী দশভূজা রূপে নয়, দেবী পূজিত হন হরগৌরী। এখানে দেবী স্বপরিবারে অর্থাৎ মহাদেব সহ লক্ষ্মী, গণেশ, সরস্বতী ও কার্তিক কে নিয়ে পূজিত হন।
তবে হাওড়ার মাকড়দহ শ্রীমানী বাড়ির পুজোতে নেই কোনও প্রকার বলির প্রথা। এখানে নারকেলের তৈরি নানা রকমের মিষ্টি দেবীকে নিবেদন করা হয়। এছাড়া থাকে নানা রকমের ফল, নৈবেদ্য। করোনা আবহের পর থেকে পুজোর আয়োজন কমে আসছে। আগে প্রত্যেক বছর জন্মাষ্টমীর দিন –এ বাড়ির দালানে কাঠামোপুজো করা হত। আর তার পরই বাড়ির দালানে তৈরির কাজ শুরু হত।
তবে বর্তমানে করোনা আবহের জেরে বাড়ির দালানে প্রতিমা আর তৈরি করা হয় না। কুমারটুলি থেকেই আনা হয় প্রতিমা। তবে পুজোর আয়োজন কমলেও পুজোর আচারে বদল আসেনি। সাবেকি রীতি মেনেই হরগৌরীর পূজা হয়ে আসছে হাওড়ার এই বনেদী বাড়িতে।
কিন্তু কিভাবে শুরু হল এখানকার পুজো? ১৯১৮ সালে হাওড়া মাকড়দহ অঞ্চলে শর্করা ও ঘিয়ের ব্যবসায়ী কেদারনাথ শ্রীমানী বাস করতেন। তাঁর সংসারে ছিলেন হরিপদ ও পুত্র বিশ্বনাথ। একদিন ভোরে বিশ্বনাথ শ্রীমানীর স্ত্রী হরগৌরীর কাঠামো দেখতে পান বাড়ির দালানে। আর এরপর থেকেই ঠাকুরের আদেশ মনে করেই হাওড়ার মাকড়দহ শ্রীমানী বাড়িতে ধুমধাম করে শুরু হয় হরগৌরীর পুজো।
বর্তমানে কাজের সূত্রে প্রায় অনেকেই বাড়ির বাইরে থাকেন। তবে পুজো শুরুর আগে সকলেই চলে আসেন বাড়ি। পুজোর চার পাঁচ টা দিন সকলে হইহুল্লর করেই কাটান। আগের মত অত ভিড় না থাকলেও পুজোর যে ঐতিহ্য তা এখনও রয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :