থিমের চমকে টেক্কা দিতে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে টক্কর দিচ্ছে প্রত্যেকটি পুজ মণ্ডপ। কিন্তু এর মধ্যে যদি বাস্তব জীবনের কারোর ছবি ফুটিয়ে তোলা যায় নিজেদের থিমের মধ্যে দিয়ে তাহলে তার মাহাত্মই হয় আলাদা। সেই রকমই এবার বাগুইআটির অশ্বিনী নগর বন্ধু মহল ক্লাব। এবারে তাদের ভাবনা `ভাগাড়ের মা`।
জীবন মানে বাঁচার লড়াই। ভাগ্য তাড়িত এরকম বহু মানুষ আছেন আমাদের চারেপাশে। সদ্যজাত শিশু থেকে অশীতিপর বৃদ্ধ-বৃদ্ধা। হয়ত একটু সাহায্য, একটু সহানুভূতি পেলে এই মানুষগুলোর জীবনও ভরে উঠবে, এক চিলতে আনন্দে।যে ভাগাড়ের দিকে আপনি আমি ফিরে তাকাই না অবধি। সেই ভাগাড়ে তিনি ফুল ফোটান। নদীয়ার রানাঘাটের শ্রীমতী পাপিয়া কর। স্বামী সন্তান সংসার সামলে, যিনি হাসি ফোটান অগণিত সহায় সম্বলহীন মানুষের মুখে। এবার পাপিয়া দেবীর অদম্য ইচ্ছে কে সম্মান জানাতেই অশ্বিনী নগর বন্ধু মহলের ক্লাবের এবারের থিম।
২০০৮ সাল, তখন থেকেই শুরু। অন্নপূর্ণা সরাই ঘর তৈরি করেন পাপিয়া দেবী। সেখান থেকেই স্টেশনের অবাঞ্ছিত মানুষদের মুখে খাবার তুলে দেন তিনি। বিয়ে বাড়ির উদ্বৃত্ত খাবার জোগাড় করে স্টেশনে থাকা দুঃস্থ মানুষদের নিজের হাতেই খাইয়ে দেন। এছাড়াও কলকাতার রাজপথের দুস্থ শিশুদের প্রতি রবিবার নিয়ম করে ক্লাস করান পাপিয়া। ছাড়াও একের পর এক নানান সমাজসেবামূলক কাজেও এগিয়ে আসতে দেখা গিয়েছে তাকে।
গোটা মণ্ডপকে সাজিয়ে তোলা হয়েছে একেবারে স্টেশনের আদলে। সেখানে রয়েছে এক এক প্লাটফর্ম থেকে অন্য প্লাটফর্মে যাওয়ার জন্য ওভারব্রিজ। রয়েছে টিকিট কাউন্টার, চায়ের দোকান, বুক স্টল। পাপিয়া দেবীর একটি কাঠের মূর্তিও তৈরি করা হয়েছে। একই সঙ্গে থাকছে অন্নপূর্ণা সরাইঘরও।
যাকে ঘিরে এই গোটা কর্মকাণ্ড তিনি জানাচ্ছেন, এই থিমের কথা জানতে পেরে তিনি অভিভূত। তাকে এত বড় সম্মান দেওয়া হবে সেটা তিনি আশা করেননি। বাগুইআটি অশ্বিনী নগর বন্ধু মহল ক্লাব এর কাছে তিনি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ।
আপনার মতামত লিখুন :