বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ সম্প্রতি কোচবিহারের বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা তথা কেএলও জঙ্গি জীবন সিংহ বাংলা ভাগের দাবি তুলেছিল। তাছাড়া প্রায়শই বিজেপির কিছু নেতা বঞ্চনার অভিযোগ তুলে উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্য হিসাবে গড়ার কথা বলেন। এনিয়ে বিস্তর বিতর্ক হয়েছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২ দিনের উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর এই সফরের আগেই কেএলও জঙ্গি জীবন সিংহ’র স্পষ্ট হুঁশিয়ারি ছিল যে, কামতাপুর পৃথক রাজ্য চাই। এই দাবিতে আন্দোলন জারি থাকবে। এখানেই শেষ নয়, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়য়ের উদ্দেশে হুমিক দেওয়া হয় যে, কোচ-কামতাপুরে পা রাখলেই শেষ করে দেওয়া হবে। এদিন সেই হুমকির জবাব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এই মুহূর্তে আলিপুরদুয়ারে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। দু’দিনের উত্তরবঙ্গ সফরে আজ আলিপুরদুয়ার প্যারেড গ্রাউন্ডের দলীয় কর্মীসভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী বাংলা বিভাজনের তীব্র বিরোধিতা করে গর্জে ওঠেন। তিনি বলেন, ‘বাংলা ভাগ না করলে আমায় মেরে ফেলবে বলেছে, আমার বুকে বন্দুক ঠেকিয়ে দেখাক। আমিও জানি কীভাবে বন্দুকের নল ভোঁতা করে দিতে হয়।’ মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, এর নেপথ্যে বিজেপির মদত রয়েছে। পাশাপাশি এদিন মুখ্যমন্ত্রী এও বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, তৃণমূল সরকার যতদিন ক্ষমতায় আছে, বঙ্গভঙ্গের স্বপ্ন অধরাই থেকে যাবে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের।
এদিন আলিপুরদুয়ারের সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আলিপুরদুয়ার, কোচবিহারের মানুষকে বলব আমরা সবাই এক। কোনওভাবেই বাংলা ভাগ হতে দেব না। আমি রক্ত দেওয়ার জন্য তৈরি। রবীন্দ্রনাথ, নজরুল,পঞ্চানন বর্মাকে ভাগ করতে পারবেন? কিছু নেতার কাজকর্ম নেই আমাকে ভয় দেখাচ্ছে। বলছে উত্তরবঙ্গকে ভাগ না করলে আমাকে মেরে দেবে। আমি বলি তোমার ক্ষমতা থাকলে আমার বুকে বন্দুক ঠেকাও। এতবড় ক্ষমতা তোমাদের?’
এখানেই থেমে যাননি মুখ্যমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, ‘আমি অনেক বন্দুক দেখে এসেছি। এসব বন্দুক আমাকে দেখিও না। এসব বন্দুক ভোঁতা করতে আমি জানি।’ উল্লেখ্য, সম্প্রতি বেশ কিছু বিজেপি নেতা, সাংসদ, বিধায়ক উত্তরবঙ্গকে প্রথক রাজ্য হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার ডাক দিয়েছেন। উত্তরবঙ্গের একাংশের এই বাংলা ভাগের দাবিতে অশান্তির আঁচ ক্রমশ উসকে উঠছে। এদিন প্যারেড গ্রাউন্ডের সভা থেকে এর বিরোধিতা করে সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী। রীতিমতো হুঙ্কার দিয়ে তিনি বলেন, ‘রক্ত দেব, প্রাণ দেব, তবু বাংলা ভাগ হতে দেব না।’
অন্যদিকে, বিজেপিকে আক্রমণ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিজেপি কী করেছে? ভোটের আগে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, বন্ধ হওয়া চা বাগান খুলে দেবে। খুলেছে? শুধু শুধু বাংলা ভাগে ইন্ধন দিচ্ছে। কী ভাগ করবে? পাহাড় ভাগ করতে পারবে? গোর্খাদের ভাগ করবে? কোচবিহারের পঞ্চানন বর্মা, চিলা রায়কে ভাগ করতে পারবে? আমাদের সরকার সব কাজ করে, করবেও। আমাদের কাজে কোনও ভুল হলে আমাদেরই বলুন। কিন্তু বিজেপি বা সিপিএমের কথা শুনে কিছু বিশ্বাস করবেন না।’
এর পাশাপাশি এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তরবঙ্গের জন্য তাঁর তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার কী কী করছে তার খতিয়ান তুলে ধরেন। প্রতিটি স্থানীয় ভাষা, জনজাতিদের উন্নতির জন্য আলাদা আলাদা করে গুরুত্ব সহকারে কাজ হয়েছে। এলাকার নেতাদের সামনে সেসবের উদাহরণ তুলে এদিন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলের সুপ্রিমো বলেন, ‘ঘর থেকে বেরিয়ে আসুন, মানুষের কাছে গিয়ে কাজ করুন।’