নিজস্ব প্রতিনিধি, মালদহঃ একটু একটু করে, মাথার ঘাম পায়ে ফেলে জমিয়েছিলেন টাকা। পরিমাণ প্রায় লক্ষাধিক টাকা। দিল্লিতে সেলাই কারখানায় শ্রমিকের কাজ করে টাকা পাঠাতেন বাড়িতে, সেই টাকা থেকেই আলাদা করে কিছু টাকা জমিয়েছিলেন স্বামী। ইচ্ছে ও পরিকল্পনা ছিল, বেশ খানিকটা টাকা জমিয়ে একটা টোটো কিনবেন। কিন্তু ভাগ্যের পরিহাসে ঠকলেন স্ত্রীর কাছেই। রক্তজল করা সেই পরিশ্রমের টাকা, বাড়িতে রাখা গয়না নিয়ে প্রেমিকের সঙ্গে পালালেন স্ত্রীই।
এমনই চাঞ্চল্যকর ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকায়। এই ঘটনাটি ঘটেছে হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার ভিঙ্গল গ্রাম পঞ্চায়েতের ইসাদপুর গ্রামে। জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরেই দিল্লিতে এক সেলাই কারখানায় কাজ করতেন হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার ইসাদপুরের বাসিন্দা সোহরাব আলী। কষ্টের রোজগারের থেকে বেশ কিছুটা টাকা বাড়িতে পাঠাতেন। তার থেকে কিছু টাকা জমিয়েও ছিলেন। ইচ্ছে ছিল, অনেকটা টাকা জমলে, টোটো কিনে হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকায় চালাবেন। তাই দিয়েই চালাবেন সংসারের খরচ।
কিন্তু সোহরাব আলীর সেই ইচ্ছেতে জল ঢাললেন তাঁরই স্ত্রী। জানা গিয়েছে, সোহরাবের জমানো লক্ষাধিক টাকা নিয়ে পালিয়ে গিয়েছে তাঁর স্ত্রী রুবি বিবি, প্রেমিকের সঙ্গে। এদিকে, স্বামী এবং শাশুড়ির অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই এলাকারই একটি ছেলের সঙ্গে রুবি বিবির সম্পর্ক ছিল। সোহরাবের স্ত্রী রুবি শুধুমাত্র লক্ষাধিক টাকাই নিয়ে পালাননি, নিয়ে গিয়েছেন বাড়িতে রাখা সোনার গয়নাও। এই সোহরাব আলী এবং রুবি বিবির আবার দুই পুত্র সন্তান রয়েছে। রুবি দুই পুত্রকে অবশ্য নিয়ে যাননি।
এদিকে, এই ঘটনা প্রসঙ্গে রুবির শাশুড়ি সায়রাবানু জানিয়েছেন যে, ‘বৌমার সঙ্গে আমার সম্পর্ক খুব ভাল ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে এই ধরনের কাজ ও কেন করল বুঝতে পারছি না। টাকাপয়সার সঙ্গে আমার সোনা গয়না নিয়েও পালিয়ে গিয়েছে। বাড়িতে ছোট দুটি ছেলে। এখন ওদের কি বলবো। পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছি।’
অন্যদিকে, মেয়ের কাণ্ড সম্পর্কে রুবি বিবির মা রাহেলা বিবি জানিয়েছেন, ‘২০১১ সালে আমার মেয়ের সঙ্গে দেখাশোনা করে সোহরাবের বিয়ে হয়েছিল। প্রথম দিকে পরকীয়ার জন্য মেয়ের সঙ্গে ঝামেলা হতো। কিন্তু পরে সব মিটমাট হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ করে মেয়ে এই ধরনের সিদ্ধান্ত কেন নিল পুলিশ তদন্ত করে দেখুক।’
স্ত্রীর এই ধরনের কাজ সম্পর্কে কী বলছেন খোদ স্বামী সোহরাব আলী? তিনি জানিয়েছেন, দিল্লিতে থাকাকালীন এলাকার এক ছেলের সঙ্গে ও পরকীয়া সম্পর্কে আবদ্ধ হয়েছিল। আমি সাবধান করার পরে আমার স্ত্রী আমাকে বলেছিল, সে ভালো হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এতদিন ধরে ওটা যে অভিনয় করে গিয়েছিল এখন সেটা বুঝলাম। আমার জমানো সমস্ত টাকাও নিয়ে চলে গেছে এখন কি করে টোটো কিনব। আবার আমাকে ভিন রাজ্যে গিয়ে শ্রমিকের কাজই করতে হবে।’ এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ।