বংনিউজ ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ পুরভোটে সবুজ ঝড় অব্যাহত। রাজ্যে ১০৮ পুরসভার মধ্যে ১০০ পার করেছে রাজ্যের শাসকদল। ১০২ পুরসভাই গেছে তৃণমূলের দখলে। একটিতে জয়ী হয়েছে বামেরা আর একটিতে জিতেছে অন্যান্যরা। ৩ টি পুরসভা ত্রিশঙ্কু। এদিন উত্তরপ্রদেশ যাওয়ার আগে দমদম বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘বাংলার মানুষ আমায় আশীর্বাদ করেছেন, ভালোবাসা দিয়েছেন। তাঁদের ধন্যবাদ জানাই। আমরা যেন আরও ভদ্র-নম্র-শান্ত হই। দার্জিলিংয়ে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার আমি খুশি। এবার GTA নির্বাচনও করিয়ে দেব।’
এদিকে, ‘অধিকারী গড়’ হিসেবে পরিচিত কাঁথি পুরসভার উপর থেকে নিয়ন্ত্রণ হারালেন শিশির অধিকারী এবং তাঁর পরিবার। ফলাফল বলছে কাঁথিতে বোর্ড গঠন করতে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। দীর্ঘদিনের ক্ষমতা রক্ষা করতে কম চেষ্টা করেনি অধিকারী পরিবার। কিন্তু পুরভোটে রাজ্যজুড়ে সবুজ ঝড় প্রভাবে শেষপর্যন্ত ভেঙে চুরমার হয়ে গেল অধিকারী গড়। উল্লেখ্য, চার দশক পর অধিকারী পরিবারের হাতছাড়া কাঁথি পুরসভা। কাঁথি পুরসভার ২১ টি ওয়ার্ডের মধ্যে মাত্র ২ টি দখল করতে পেরেছে গেরুয়া শিবির। বাকি ১৮ টি ওয়ার্ডে জিতেছে তৃণমূল প্রার্থীরা। একটি ওয়ার্ডের দখল নিয়েছে নির্দল প্রার্থীরা। কাঁথি পুরসভার সম্ভাব্য পুর প্রধান হতে চলেছেন সুপ্রকাশ গিরি। ইনি আবার ঘটনাচক্রে রাজ্যের মন্ত্রী অখিল গিরির পুত্র।
শুভেন্দু অধিকারী এই মুহূর্তে নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক এবং রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। তাই তাঁর প্রার্থীদের হয়ে গেরুয়া শিবিরের দিকে জনসমর্থন টানার যথাসাধ্য চেষ্টা করেছিলেন শিশির অধিকারী। ভোটের দিন, রবিবার বর্ষীয়ান সাংসদ শিশির অধিকারীকে এও বলতে শোনা যায় যে, তৃণমূল সাফ হয়ে যাবে।
কিন্তু বুধবারের ফল অন্য কথা বলল। আজ পুরসভার ফল প্রকাশের পর দেখা গেল, শিশিরবাবুর ‘ভবিষ্যৎবাণী’ ভুল প্রমাণিত হল। তৃণমূল সাফ হওয়া তো দূর হওয়া, ভেঙে পড়ল অধিকারী গড়। মাত্র ২ টি ওয়ার্ডে পদ্ম ফুটেছে। এদিকে, যে ওয়ার্ডে অধিকারী বাড়ি সেই ওয়ার্ডে জিতেছেন তৃণমূল প্রার্থী তনুশ্রী চক্রবর্তী ভট্টাচার্য। ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে জিতেছেন অখিল গিরির ছেলে।
প্রসঙ্গত, কাঁথি পুরসভার ভোট নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছেন শুভেন্দুর ভাই তথা বিজেপি নেতা সৌম্যেন্দু অধিকারী। সৌম্যেন্দু অধিকারী এর আগে কাঁথি পুরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন। আদালতে তিনি ভোটগণনা স্থগিত রাখার আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু আদালত সেই নির্দেশ দেয়নি। আদালতের পক্ষ থেকে বলা হয় যে, গণনা জারি রাখতে হবে।
উল্লেখ্য, ১৯৬৯ সাল থেকেই কাঁথি পুরসভার সঙ্গে জড়িয়ে অধিকারী পরিবারের নাম। কাঁথি পুরসভায় প্রথম পা রাখেন শিশির অধিকারী ১৯৬৯ সালে কমিশনার হিসেবে। সেই সময় থেকেই ১৯৮০ সাল পর্যন্ত পুরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি। পরে ১৯৮৬-২০০৯ সাল পর্যন্ত ফের পুরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি। পরে আবার শিশির অধিকারীর ছেড়ে যাওয়া আসনে ২০১০-২০২০ পর্যন্ত বসেছিলেন সৌম্যেন্দু। ২০২০ সালের পর ওই পুরসভার প্রশাসকও হন সৌম্যেন্দু।
তবে, এই পুরভোটে নির্বাচন এবং ভোটের ফল যত ঘোষণা হয়েছে, ততোই স্পষ্ট হয়েছে বিজেপির ভাঙা চেহারা। কাঁথির পুরভোটে নিজেদের ক্ষমতা ধরে রাখতে পুরোপুরি ব্যর্থ বিজেপি।