বংনিউজ২৪×৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ বিগত কয়েকদিন ধরেই উত্তরবঙ্গে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত চলছে। কিন্তু রবিবার উত্তরবঙ্গের একাধিক অংশে রীতিমতো ঝড়ের তান্ডব চলেছে। লন্ডভন্ড হয়েছে কোচবিহারের বিভিন্ন এলাকা। ব্যাপক ঝড় ও শিলাবৃষ্টির জেরে কোচবিহারে অন্ততপক্ষে ২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
জানা গিয়েছে, রবিবার বিকেল থেকেই শুরু হয় মেঘের গর্জন ও ঝোড়ো হাওয়া। এরপর কিছুক্ষণের মধ্যেই শুরু হয় বৃষ্টি। সন্ধ্যা ৭ টা নাগাদ কোচবিহার, ফালাকাটা, ইটাহার সহ একাধিক জায়গায় শিলাবৃষ্টি শুরু হয়। ঝড়-বৃষ্টির দাপটে উড়ে যায় একাধিক বিদ্যুতের খুঁটি। উপরে যায় বহু গাছ। বহঙ বাড়ির টিনের ছাউনি অবধি উড়ে যায়। উড়ে যায় পুলিশ ফাঁড়ির চালও। স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে খবর, ঝড়ের দাপটে ঠিক কত পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা এখনও সঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না।
জানা গিয়েছে, হাজার-হাজার বাড়ির চাল উড়ে গিয়েছে। টিনের ছাউনি উড়ে গিয়ে পড়েছে বিভিন্ন জায়গায়। কোচবিহারের ১ নং ব্লকের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলমের উপর একটি টিনের ছাউনি আচমকাই উড়ে এসে পড়ে। যার জেরে মৃত্যু হয় ওই ব্যক্তির। অন্যদিকে বাজ পড়ে মৃত্যু হয় ঘুঘুমারি এলাকার বাসিন্দা দেবদাস পালের।
টাপুররহাটের কাকিনা রোডের ওপর ১০০ বছরের একটি বিশালাকার গাছ ভেঙে পড়ে। রাজ্য সড়কের ওপর গাছটি বহুক্ষণ পড়ে থাকায় দিনহাটার সঙ্গে ওই অঞ্চলের যোগাযোগ কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়েছে। এমনকি গাছ ভেঙে পড়ার জেরে আশেপাশের কয়েকটি বাড়ি ও দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ঝড়ের তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পুলিশ ফাঁড়িও। এক পুলিশকর্মী জানিয়েছেন, সান্ধ্য ডিউটির জন্য তৈরী হওয়ার সময় আচমকাই শুরু হয় ঝড়-বৃষ্টি। পুলিশকর্মীদের দুজন আহত হয়েছেন বলে খবর। এমনকি তাদের অস্ত্রশস্ত্র কী অবস্থায় রয়েছেন সেই বিষয়েও কোনও ধারণা নেই।
স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হতেই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বহু বাড়ি ভেঙে গিয়েছে। উপড়ে পড়েছে ১১ হাজার ভোল্টের বিদ্যুতের তারের লাইন। স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে নিরাপদ স্থানে। খুলে দেওয়া হয়েছে স্কুল বাড়িগুলি। বহু আহতকে ভর্তি করা হয়েছে হাসপাতালে। এমনকি শিলাবৃষ্টির জেরে চাষের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। সব মিলিয়ে কার্যত লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছে কোচবিহার সহ উত্তরবঙ্গের একাংশ।