বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ থেমে গেল লড়াই! ১২ দিনের যমে-মানুষে টানাটানিও শেষ। মৃত্যু হল ময়নাগুড়ির নির্যাতিতা নাবালিকার। চলতি মাসের ১৪ তারিখ আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই নাবালিকাকে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। এরপর থেকেই শুরু হয় বাঁচার লড়াই। নির্যাতিতার শরীরের অধিকাংশ আগুনে পুড়ে যাওয়ার কারণে প্রতিদিন একটু একটু করে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে।
এই ক’দিন ধরে হাসপাতালের বার্ন বিভাগের ওই নাবালিকার চিকিৎসা চলছিল। শেষরক্ষা হল না। আজ ভোর ৫ টার সময় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে নির্যাতিতা ওই নাবালিকা।
ঘটনাটা ঘটেছিল মাস দেড়েক আগে। জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়ি এলাকায় এক নাবালিকাকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ ওঠে স্থানীয় এক যুবকের বিরুদ্ধে। অভিযোগ ছিল, বাড়িতে নির্যাতিতা নাবালিকাকে ফাঁকা পেয়ে অভিযুক্ত প্রথমে ধর্ষণের চেষ্টা করে। পরে, আবার তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ প্রত্যাহার না করলে, খুনের হুমকি দেওয়া শুরু করে। সেই খুনের হুমকি সইতে না পেরেই গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে নির্যাতিতা নাবালিকা।
এরপর গুরুতর জখম অবস্থায় নাবালিকাকে প্রথমে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায়, সেখান থেকে তাকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয়।
নির্যাতিতা নাবালিকা ময়নাগুড়ি ধর্মপুর এলাকার বাসিন্দা। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি বাড়ি ফাঁকা হওয়ার সুযোগে ওই নাবালিকাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে স্থানীয় যুবক অজয় রায়। নাবালিকার জামাকাপড় ছিঁড়ে দেয় শুধু নয়, নাবালিকার গোপনাঙ্গে গোপনাঙ্গে হাত পর্যন্ত দেয়। কিন্তু নাবালিকা চিৎকার করা শুরু করলে, অভিযুক্ত যুবক পালিয়ে যায়। এরপরেই ময়নাগুড়ি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে নির্যাতিতার পরিবার। ঘটনার পরই পালিয়ে যায় অভিযুক্ত।
এখানেই শেষ নয়, নির্যাতিতা নাবালিকার পরিবার থানায় অভিযোগ দায়েরের কিছুদিন পরেই আদালত থেকে জামিনও নেয় অভিযুক্ত যুবক। অভিযোগ, এরপর ২ যুবক তাঁদের বাড়িতে এসে ফের হুমকি দেয়। সেই সময়ও ওই নাবালিকা বাড়িতে একাই ছিল। ওই দুই যুবক নাবালিকাকে অভিযোগ তুলে নিতে বলে। হুমকি দেয়, অভিযোগ তুলে না নিলে, তাঁদের বাড়ির সকলকে খুব করা হবে। এরপরই বাড়িতে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে ওই নাবালিকা। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে ইতিমধ্যে।