বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ এবার শুভেন্দু অধিকারীর মুখে ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’-নিয়ে ভূয়সী প্রশংসা। সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে বহু চর্চিত এবং বিতর্কিত চলচ্চিত্র ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’। এই চলচ্চিত্রটি রাজনীতি থেকে বিনোদন জগত সর্বত্র হইচই ফেলে দিয়েছে। এদিকে এই চলচ্চিত্রের প্রশংসায় পঞ্চমুখ কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। পাশাপাশি বিজেপিশাসিত একাধিক রাজ্যে এই চলচ্চিত্রকে করমুক্ত ঘোষণাও করা হয়েছে। অসমে বিজেপিশাসিত হিমন্ত বিশ্বশর্মার সরকার এই ছবি দেখার জন্য সরকারি কর্মীদের অর্ধদিবস ছুটিও ঘোষণা করেছেন কয়েকদিন আগেই। এ রাজ্যের বিজেপি নেতারাও এই ছবির প্রশংসায় পঞ্চমুখ। এবার এই ছবির প্রশংসায় পঞ্চমুখ হলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এই ছবি দেখার পাশাপাশি তিনি হিন্দুদের জাগ্রত হয়ে জোটবদ্ধ হওয়ার বার্তা দিয়েছেন। শুভেন্দু বলেন, ‘জাগো হিন্দু জাগো। নাহলে আমাদের অবস্থাও ইউক্রেনের মতো হয়ে যাবে।’
রবিবার এগরা বিধানসভার অন্তর্গত বাসুদেবপুরে বসন্ত উৎসব অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। সেই অনুষ্ঠান থেকেই তিনি হিন্দুদের জাগ্রত হওয়ার বার্তা দেন। তিনি সকলকে ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’ চলচ্চিত্রটি দেখার বার্তা দিয়ে বলেন যে, “রাজ্যে একাধিক জায়গায় সনাতনীদের উপর আক্রমণ হচ্ছে। পারলে ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’ দেখে আসুন। ৩০ বছর আগে কাশ্মীরে হিন্দুদের উপর কী অত্যাচার করা হয়েছে, সেটা দেখে আসবেন। ৩০ বছর পরে যাতে হিন্দুদের সেই অবস্থা না হয়, তার জন্য বিশ্ব হিন্দুকে একজোট হতে হবে।”
এই অনুষ্ঠান থেকেই শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেন যে, রাজ্যের একাধিক জায়গায় সনাতনীদের আক্রমণ হচ্ছে। আর এই অভিযোগ তুলেই তিনি হিন্দুদের এক হওয়ার বার্তা দিয়েছেন। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা বলেন, ‘এ রাজ্যে হিন্দুরা বিপন্ন। হিন্দু জাগরণের সময় এসেছে। দেশকে আফগানিস্তান হতে দেবেন না। টাকা করলেন, সোনা-দানা, ভালো বাড়ি বানালেন। কিন্তু, দেশ না থাকলে কী করবেন সম্পত্তি নিয়ে। না হলে ইউক্রেনের মতো অবস্থা হবে। দেশ ছেড়ে পালাতে হবে।’ এখানেই শেষ নয়, তিনি রাজ্যের সনাতনী হিন্দুদের শুধুমাত্র ‘হিন্দু’ এবং ‘ভারতীয়’ বলে পরিচয় দেওয়ারও বার্তা দিয়েছেন।
উক্ত অনুষ্ঠান থেকেই শুভেন্দু অধিকারী প্রতি হিন্দু ঘরে গীতা রাখা এবং এর সঙ্গে নাম-সংকীর্তন করারও কথা বলেন। ঘরে হিন্দু ধর্মগ্রন্থ গীতা রাখার বার্তা দিয়ে তিনি বলেন যে, ‘গীতা কেবল ধর্মগ্রন্থ নয়, এটি বিজ্ঞান। প্রত্যেক বাড়িতে গীতা রাখা উচিত, পড়া উচিত। গুজরাট সরকার ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত গীতা পড়ানো বাধ্যতামূলক করেছে।’ বাংলাতেও এমনটা চালু হবে বলেও আশাবাদী শুভেন্দু অধিকারী। ওই অনুষ্ঠানে শুভেন্দু অধিকারী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ কাঁথির বিধায়ক অরূপ কুমার দাস, ভগবানপুরের বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ মাইতি প্রমুখরা।
প্রসঙ্গত, চলতি মাসের ১১ তারিখ মুক্তি পেয়েছে বিবেক অগ্নিহোত্রী পরিচালিত ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’। ৯০-এর দশকে যেভাবে কাশ্মীরে হিন্দুদের উপত্যকা ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছিল, পাশাপাশি এর জের কী ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল, সেটাই এই ছবির বিষয়বস্তু। আর এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করেই দেশব্যাপী আরও একবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে হিন্দু-মুসলিম বিবাদ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর থেকে দরাজ সার্টিফিকেট পাওয়ার পরই এই ছবি নিয়ে জোরকদমে প্রচারে নেমে পড়েছে বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলি। এই ছবির জন্য, কোথাও মিলছে বিশেষ কর ছাড়, আবারও কোথাও মিলছে ছুটি। এই অবস্থায় দেশের বিরোধী দলগুলি এই ছবিতে দেখানো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে উঠেপড়ে লেগেছে।
এখনও পর্যন্ত মোট আটটি রাজ্য এই ছবিটিকে করমুক্ত ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে রয়েছে, হরিয়ানা, গুজরাট, মধ্যপ্রদেশ, কর্নাটক, গোয়া, ত্রিপুরা, উত্তরপ্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ড। প্রতিটি রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রীরা সিনেমাটি দেখার জন্য অনুরোধ জানিয়ে টুইটও করেছেন ইতিমধ্যেই।