বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ কুসংস্কারের অন্ধকার ছায়া! ১৮ ঘণ্টা অন্ধকার ঘরে বন্দি মৃত সন্তানকে রেখে বাঁচানোর চেষ্টা। বাঁচার পরিবর্তে মৃত শিশুর দেহে ধরল পচন, এমনকি পিঁপড়েও ধরে যায় শিশুটির নিথর দেহে। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগণার পাথরপ্রতিমা জেলার রাক্ষসখালি এলাকায়।
এদিকে, এই ঘটনার কথা জানাজানি হতেই ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার বিকেলে জলে ডুবে মৃত্যু হয় গৌরব মাইতি নামে বছর ৩ এর ওই শিশুটির। শিশুটির বাবা গৌরাঙ্গ মাইতি দাবি, করেছেন, দুপুরে মায়ের সঙ্গে ঘুমিয়ে ছিল শিশুটি। আচমকাই বেলা ৩ টের সময় শিশুটির মা লক্ষ করেন যে, ছেলে তাঁর কাছে নেই। এরপর অনেক খোঁজাখুঁজির পরে পুকুরে ভাসতে দেখা যায় শিশুটিকে। সঙ্গে সঙ্গে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় মাধবনগর গ্রামীণ হাসপাতালে। কিন্তু চিকিৎসকরা শিশুটিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এরপর মৃত সন্তানকে নিয়ে বাড়ি ফিরে আসেন গৌরাঙ্গ এবং তাঁর স্ত্রী। এদিকে, তাঁরা বাড়িতে ফিরে আসার পরে, কয়েকজন ওঝা তাঁদের বাড়িতে আসে। শিশুটির পরিবারকে তাঁরা জানায়, শিশুটি মরেনি, বেঁচে আছে। তাঁরা মৃত শিশুটিকে নিয়ে ঘরের মধ্যে ঢুকিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়। এরপর রাত ১২ টা নাগাদ ওই ওঝারা চলেও যায়। যাওয়ার আগে তাঁরা নির্দেশ দেয়, কেউ যেন দরজা না খোলে। পাশাপাশি এও আশ্বাস দেয় যে, সকাল হলেই শিশুটি মা বলে ডেকে উঠবে।
কিন্তু সকাল হলেও, শিশুটি ওঝাদের দাবি মতো মা বলে ডেকে ওঠেনি। এরপরই অশান্তি শুরু হয়ে যায়। বাড়ির লোক দরজা খুলে ঘরের ভিতরে প্রবেশ করে দেখেন, মৃত শিশুটির দেহে ততক্ষণে পচন ধরেছে। এমনকি তার শরীরে পিঁপড়েও ধরেছে। এই খবর জানাজানি হওয়ার পরই প্রচার মানুষ এলাকায় এসে দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। পাশাপাশি অভিযুক্তদের গ্রেফতারির দাবিও তোলা হয়।
আজকের দিনেও কুসংস্কারের অন্ধকার ছায়া মানুষের মনের গভীরে যে বাসা বেঁধে রয়েছে, তা আরও একবার প্রমাণ করে দিল দক্ষিণ ২৪ পরগণার পাথরপ্রতিমা জেলার রাক্ষসখালির এই ঘটনা।