বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ রাজ্যে একের পর এক নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। এই ঘটনাগুলিকে কেন্দ্র করে রাজ্য-রাজনীতি উত্তপ্ত। বিরোধীরা রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলছে বারবার। এবার রাজ্যে নারী ‘নির্যাতন’ নিয়ে মুখ খুললেন সাংসদ সৌগত রায়। এই মুহূর্তে রাজ্যে হাঁসখালি, বীরভূম, মেটিয়া, ইংরেজবাজার ধর্ষণের ঘটনার তালিকা ক্রমশ দীর্ঘ হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যে একের পর এক ধর্ষণ ইস্যুতে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন খোদ শাসকদলের সাংসদ সৌগত রায়।
বৃহস্পতিবার দক্ষিণেশ্বর থানার উদ্বোধন করেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। সেখানেই তিনি রাজ্যে ক্রমাগত ঘটে চলা নারী নির্যাতন প্রসঙ্গে মুখ খোলেন। তিনি এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মহিলা সেখানে নারী নির্যাতনের ঘটনা লজ্জার। পুলিশকে বলব নজর দিতে।’ স্পষ্ট কথা বর্ষীয়ান এই নেতার। তিনি বলেন, ‘রাজ্যে মহিলা নির্যাতনের ঘটনা নিয়ে সকলেই চিন্তিত। এখানে একদম জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করতে হবে। কখনও কোনও ঘটনা ঘটলে, কঠোরতম ব্যবস্থা নিতে হবে। যে রাজ্যে মহিলা মুখ্যমন্ত্রী, সে রাজ্যে একটা ঘটনা ঘটলেও তা লজ্জার। আমি আশা করি পুলিশ প্রশাসন সেদিকে নজর রাখবে।’
এদিকে, সৌগত রায়ের আজকের এই মন্তব্যকে সমর্থন জানিয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলের নেতারা। রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার তৃণমূল সাংসদকে সমর্থন করে বলেন, ‘আপনি যা বলছেন, তা সম্পূর্ণ ঠিক। কালীঘাটে গিয়ে আগে এই কথাটি বোঝান।’ আবার বাম নেতা সুজন চক্রবর্তীর দাবিও প্রায় একই রকম। তাঁর কথায়, ‘তৃণমূল সাংসদ একেবারে সঠিক কথাই বলেছেন। বরং মুখ্যমন্ত্রী হাঁসখালি কাণ্ড নিয়ে যা বলেছেন তা হাস্যকর।’ অন্যদিকে, কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্যও সৌগত রায়ের মন্তব্যকে সমর্থন জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এর আগে হাঁসখালি ধর্ষণকাণ্ড নিয়ে মুখ খোলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি হাঁসখালির কিশোরী ধর্ষিতা হয়েছে, নাকি অন্তঃস্বত্ত্বা সে বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন। এখানেই শেষ নয়, কেন মৃত্যুর ৫ দিনের মাথায় পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হল? কেনই বা তড়িঘড়ি দেহ পুড়িয়ে দেওয়া হল সে বিষয়েও প্রশ্ন তোলেন। তিনি সেদিন বলেছিলেন, ‘ধর্ষণ নাকি অন্তঃসত্ত্বা, তড়িঘড়ি দেহ দাহ করলে প্রমাণ মিলবে কোথা থেকে? প্রেমের সম্পর্ক আটকানো যায় না।’এখানেই শেষ নয়, তিনি আরও বলেছিলেন যে, ‘রেপ হয়েছে, নাকি প্রেগন্যান্ট ছিল বা অন্য কোনও কারণ হয়েছে, নাকি কেউ ধরে দুটো চড় মেরেছে, তাই শরীরটা খারাপ হয়েছে। লাভ অ্যাফেয়ার্স তো ছিলই... এখন যদি কোনও ছেলে-মেয়ে কেউ কারও সঙ্গে প্রেম করে, সেটা আমার পক্ষে আটকানো সম্ভব নয়।’ মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যের পরই বিতর্কের ঝড় ওঠে। সমালোচনায় সরব হয় বিরোধীরা।