বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ একে তো কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছেন, তার উপরে আবার বাপের ঘর থেকে পণের টাকাও আনতে পারেনি। এটাই স্ত্রীর অপরাধ। আর এই ‘অপরাধ’-এর শাস্তি হিসেবে স্বামী স্ত্রীর মাথা ন্যাড়া করে শাস্তি দিল। এমন অমানবিক ঘটনা ঘটেছে মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়া থানার সোলুয়া বিলধারি পাড়া এলাকায়।
কন্যা সন্তানের জন্ম সেই সঙ্গে টাকাও দিতে দিতে পারেনি, এ অপরাধেই স্ত্রীর উপর চলছিল মানসিক অত্যাচার। এরপরই স্ত্রীর মাথার সব চুল কামিয়ে দিল স্বয়ং গুণধর স্বামী। ইতিমধ্যেই স্ত্রীকে মারধর করে ভয় দেখিয়ে মাথা ন্যাড়া করার অভিযোগে ওই অভিযুক্ত স্বামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ইসালামপুরের নসিপুর এলাকার রাকিবা খাতুনের দেড় বছর আগেই বিয়ে হয় হরিহরপাড়ার সলুয়া বিলধারী পাড়া এলাকার আব্দুল্ল শেখ নামের ওই যুবকের সঙ্গে। অভাব সত্ত্বেও মেয়ের বাবা মেয়েকে সোনা-টাকা এবং আসবাবপত্র দিয়েছিলেন। কিন্তু বিয়ের কিছুদিন ভালো চললেও, কন্যা সন্তান হওয়ায়, পরিবেশ সম্পূর্ণ পাল্টে যায়। কন্যা সন্তান হওয়ায় অভিযুক্ত স্বামী বাপের বাড়ি থেকে ফের টাকা নিয়ে আসার জন্য চাপ দিতে শুরু করে। টাকা আনতে না পারায় শুরু হয় অত্যাচার। আবার অভিযোগ ওই যুবকের অন্য এক মহিলার সঙ্গেও সম্পর্ক আছে।
এদিকে, টাকা দিতে না পারায় ১৮ জুন তরুণীর হাত-পা বেঁধে, আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে অভিযুক্ত আবদুল্লা শেখ স্ত্রীকে মাথা ন্যাড়া করে দেয়৷ এমনটাই অভিযোগে বলা হয়েছে। লজ্জায় বাড়ি থেকে বেরোতেও পারছিল না ওই নির্যাতিতা গৃহবধূ৷ পরে সে বাবা ও মাকে কোনও রকমে খবর দেয়৷ জানা গিয়েছে, বাবা, মা প্রতিবন্ধী হওয়ায় মুম্বইতে ভিক্ষুকের কাজ করতেন৷ সেখান থেকে মেয়ের ঘটনার খবর শুনে বুধবার তাঁরা বাড়িতে এসে বৃহস্পতিবার হরিহরপাড়া থানায় স্বামী-সহ শ্বশুর, শাশুড়ির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এরপরই গ্রেফতার করা হয় তাকে।
মেয়ের উপর জামাইয়ের এই আচরণের তীব্র নিন্দা করেছেন মেয়ের মা। তিনি জামাইয়ের কঠিনতম শাস্তি দাবি করেছেন। ওই তরুণীর মা বলেন, ‘মেয়ে সন্তান হওয়ায় এক লক্ষ টাকা দিতে না পারায় মেয়ের উপর এ রকম অত্যাচার চালিয়েছে জামাই।’ যদিও অভিযুক্তের সাফাই, মাথায় উকুন হওয়াতে মাথা ন্যাড়া করে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ সুপার কে শবরী রাজকুমার বলেন, ‘অভিযুক্ত গ্রেফতার হয়েছে।’ বিডিও বলেন, ‘সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত প্রধানকেও বলা হয়েছে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে।’ তবে, এই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলেই দাবি করেছেন অভিযুক্ত স্বামী আবদুল্লা শেখ। লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে হরিহরপাড়া থানার পুলিশ।