বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ বিয়ের আগে আড়াই বছরের প্রেম। তারপর সেই প্রেমিককেই ভালোবেসে ঘর বেঁধেছিলেন। সেই দাম্পত্য জীবনেও কেটে গেছে ৫ বছর। কিন্তু ভরসা বা বিশ্বাসের জায়গাটাই মজবুত হল না। বর্তমান স্ত্রীকে ভালোবেসে বিয়ে করলেও, তাঁকে বিশ্বাস-ভরসা করা তো দূর, তাঁর সাফল্যটাও মেনে নিতে পারলেন না স্বামী।
সেই স্বামী যে স্ত্রীর সাফল্যে এতোটা হিংস্র হয়ে উঠতে পারে, তা কল্পনাই করতে পারেননি বর্ধমানের কেতুগ্রামের গৃহবধূ তথা নার্স রেণু খাতুন। শারীরিক যন্ত্রণার থেকে এখন আতঙ্কই বেশি রেণুর মনে। ডান হাতের কব্জিটাই কেটে নিয়েছেন তাঁর স্বামী। এক বেসরকারি হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকা রেণুর এখন একটাই দাবি, স্বামী এবং তার বন্ধুদের যেন কঠোর শাস্তি হয়। পাশাপাশি রেণু জানিয়েছেন, সরকারি চাকরিটা এখনও সে পেতে চায়। তিনি সুযোগ পেলে আরও পড়াশোনা করতে চান বলেও জানিয়েছেন।
অন্যদিকে,আর তিনি স্বামীর সংসারে ফিরতে চান না বলেই জানিয়েছেন পূর্ব বর্ধমানের কোজলসার বাসিন্দা রেণু খাতুন। স্বামী শের মহম্মদ, তার বন্ধুদের পাশাপাশি শ্বশুরবাড়ির অন্যান্য সদস্যদেরও কড়া শাস্তির দাবি করেছেন। স্ত্রীর উপর হামলা করার পর থেকেই পলাতক অভিযুক্ত স্বামী।
ভয়ঙ্কর এই ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রাম থানার কোজলসা গ্রামে। ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত স্বামী পলাতক। গুরুতর জখম রেনু খাতুন বর্তমানে দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। রেণু জানিয়েছেন, ‘আমি চাই যে আমার এই অবস্থা করেছে তাঁদের কঠিনতর শাস্তি হোক। ওদের সকলকে খুঁজে বার করা হোক। ওর বন্ধুরা ওকে মগজধোলাই করেছে।’ তিনি আরও জানিয়েছেন, ‘ ও বলত, তুমি চাকরি পেলে আমাকে ছেড়ে চলে যাবে। কিন্তু আমি ওকে অনেক বুঝিয়েছি, ও শোনেনি।’ উল্লেখ্য, সম্প্রতি সরকারি চাকরির নিয়োগপত্র পেয়েছেন রেণু।
জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত স্বামী সরিফুল শেখ কেতুগ্রামের বাসিন্দা। পেশায় মুদি দোকানদার। ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে সরিফুলের সঙ্গে রেণুর প্রেম করে বিয়ে হয়। বিয়ের পর বেসরকারি এক নার্সিংহোমে কাজ করতেন রেণু। পরে আরজিকর থেকে ট্রেনিং নেন। তারপরই সরকারি হাসপাতালে নার্সিংয়ের চাকরি পান রেণু খাতুন।
কিন্তু অভিযোগ, স্ত্রী রেণুর এই সাফল্য মেনে নিতে পারেননি স্বামী সরিফুল। রেণুর দাবি, তাঁর চাকরিতে খুশি হওয়ার বদলে স্বামী ‘নিরাপত্তাহীনতায়’ ভুগতে শুরু করেন। সরকারি চাকরি পেয়েই স্বামীকে ছেড়ে চলে যেতে পারে রেণু। এমন বদ্ধমূল ধারণা হয় সরিফুলের। রেণুর দাবি, তাঁর বন্ধুরা এই ধরনের কথা স্বামীর মনে গেঁথে দেয়। রেণুর বক্তব্য অনুযায়ী, শনিবার রাতে রাত্রিতে বন্ধুদের সঙ্গে বাড়িতেই ফিস্ট করেছিল সরিফুল। এরপর রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় রেণুর মুখে বালিশ চাপা দিয়ে হাতুড়ি দিয়ে থেঁতলে পরে ডান হাতের কবজি কেটে নেওয়া হয়।