নিজস্ব প্রতিনিধি, নদিয়াঃ মাত্র দুই মাসের দাম্পত্য জীবন! তাঁর মধ্যেই করুণ পরিণতি এক দম্পতির। মাত্র দুই মাসের বিবাহিত জীবনে অশান্তি ছিল নিত্যদিনের সঙ্গী। এই অশান্তির পরিণতি হল ভয়ানক। স্ত্রীকে খুন করে আত্মঘাতী হলেন স্বামী। ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার চাকদহে।
সূত্রের খবর, মাত্র দুই মাস আগে উত্তর ২৪ পরগণার পাল্লা গ্রামের বাসিন্দা দেবাশিস রায়ের সঙ্গে বিয়ে হয় সম্বন্ধ করে, নদিয়ার চাকদহের নারকেলডাঙার বাসিন্দা দেব কুমার ঘোষের মেয়ে বর্ণালীর। দেবাশিসবাবু কাঁচরাপাড়া ওয়ার্কশপে গ্রুপ ডি পদে কর্মরত। অন্যদিকে, দেবাশিসবাবুর স্ত্রী বর্ণালী জেআইএস কলেজে বিএড পাঠরতা।
অভিযোগ, বিয়ের পর, দেবাশিসবাবু তাঁর স্ত্রীকে নিজের বাড়িতে রাখতে চাইতেন। কিন্তু বর্ণালী শ্বশুরবাড়িতে থাকতে চাইতেন না। এই নিয়েই স্বামী- স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই অশান্তি হতো। কিছুদিন আগেই দেবাশিস চাকদার রথতলায় একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। ভাড়া বাড়িতেই বিয়ে হয়েছিল বর্ণালীর সঙ্গে। বিয়ের পর, এই বাড়িতেই মা এবং স্ত্রীকে নিয়ে থাকতেন দেবাশিস বাবু।
শনিবার সকালে চাকদা স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় দেবাশিসবাবু তাঁর মা নীহারবালা দেবীকে নিয়ে আত্মহত্যা করতে গিয়েছিলেন বলে সূত্রের খবর। নীহারবালা দেবী কোনওক্রমে প্রাণে বেঁচে গেলেও, ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হয় দেবাশিস রায়ের।
এদিকে, সকাল থেকেই বর্ণালীর বাড়ির লোকজন তাঁকে ফোন করেও পাচ্ছিলেন না। এরপর তাঁকে ফোনে না পেয়ে, বর্ণালীর বাড়ির লোকজন সন্ধ্যায় রথতলায় সেই ভাড়া বাড়িতে যান মেয়ের খোঁজে। সেখানে পৌঁছে দেখেন, ঘরের দরজা বাইরে থেকে তালা দেওয়া। কিন্তু জানলা দিয়ে তাঁরা দেখতে পান, বর্ণালী রক্তাক্ত অবস্থায় মেঝেতে পড়ে রয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সকালেই মাকে নিয়ে বেরিয়ে গিয়েছিল দেবাশিস। এদিকে, থানায় খবর দেওয়া হলে, চাকদহ থানার পুলিশ গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে রাত ৯ টা নাগাদ।
বর্ণালীর বাবার অভিযোগ, মেয়ে বি এড করছিল বলে, বাপের বাড়ি থেকে পড়াশোনা করতে চাইত। যেটা নিয়ে আপত্তি ছিল দেবাশিসের পরিবারের। তাঁর অভিযোগ দেবাশিসের বোনেরা এবং তাঁর পরিবারের অন্যান্যরা এ বিয়য়ে তাঁকে ক্রমাগত চাপ দিত। সেই কারণেই দেবাশিস এই কাণ্ড ঘটিয়েছে।
পুলিশ সুত্রে খবর, আগে স্ত্রীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে খুন করে, ঘর বন্ধ করে রেখে আত্মঘাতী হয়েছেন। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, পারিবারিক অশান্তির কারণে স্ত্রীকে খুন করে নিজে আত্মঘাতী হয়েছেন দেবাশিস।