নিজস্ব প্রতিবেদনঃ নগরায়নের যুগে পৃথিবী থেকে ক্রমশই নিশ্চিহ্ন হচ্ছে সবুজ। একের পর এক গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে, ধ্বংস হচ্ছে অরণ্য। কিন্তু বর্তমান সমাজে দাঁড়িয়ে সুন্দর, সবুজ পৃথিবী ক’জন গড়ে তুলতে চান? তবে কিছু মানুষ আছেন যারা এখনও সবুজ ও নির্মল পৃথিবীর স্বপ্ন দেখেন। তাদেরই মধ্যে একজন হলেন প্রসেনজিৎ পাল ওরফে জিৎ। ‘সবুজায়ন’ নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা প্রচারে পায়ে হেঁটেই লাদাখের পথে চলেছেন তিনি।
৩৩ বছর বয়সী প্রসেনজিৎ চন্দননগরের বাসিন্দা। বাবা শিবুরাম পাল ২০১৪ সালেই পরলোক গমন করেন। এবং মা অনিমা পাল মিড-ডে-মিলের রান্নার কাজে নিযুক্ত। প্রসেনজিৎ পেশায় ডেলিভারি বয়। সময়মতো জিনিস গ্রাহকের হাতে পৌঁছে দেওয়াই তাঁর কাজ। পেশার তাগিদে সারাদিনই তাঁকে ছুটে বেড়াতে হয়। এখনও তিনি ছুটে চলেছেন। গন্তব্য লাদাখ এবং লক্ষ্য সুন্দর ও সবুজ পৃথিবী গড়ে তোলা।
জিৎ জানিয়েছেন, গত ১ আগস্ট ভোরবেলা হাওড়া ব্রিজ থেকে তিনি হাঁটা শুরু করেন। ৯০ দিনে পায়ে হেঁটে লাদাখ পৌঁছানোর পরিকল্পনা নিয়েছেন প্রসেনজিৎ। প্রতিদিন ৩০ কিলোমিটার অতিক্রম করে ৯০ দিনেই পৌঁছে যাবেন লাদাখে। সবুজায়নই তাঁর লক্ষ্য। এর পাশাপাশি প্লাস্টিক মুক্ত পরিবেশও গড়ে তুলতে চান তিনি।
প্রসেনজিতের মনে এই ইচ্ছা কীভাবে জাগ্রত হল? তিনি জানিয়েছেন, কাজের সুত্রে তাঁকে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াতে হয়। বহু জায়গায় গিয়ে তিনি দেখেছেন, নির্বিচারে গাছ কাটা হচ্ছে। ফলস্বরূপ বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমছে। ক্রমশই উষ্ণ হচ্ছে পরিবেশ। এই বিষয়টি তাঁকে দীর্ঘদিন ধরেই ভাবাত।
এছাড়াও ছোটবেলায় বাবার সঙ্গে পাহাড়ে বেড়াতে গেলে সেখানকার পরিবেশ তাঁকে ভীষণভাবে আকর্ষণ করে। তখনই প্রসেনজিৎ ঠিক করে ফেলেন, পাহাড়ের মত শান্ত পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে। তবে একার পক্ষে তো কিছুই সম্ভব নয়। তাই এই ভাবনা বাকিদের মধ্যেও সঞ্চারিত করার চেষ্টা করছেন তিনি। এভাবেই মানুষের মধ্যে সচেতনতা জাগাতে চান প্রসেনজিৎ।
এছাড়াও তাঁর আরও একটি উদ্দেশ্য রয়েছে। দীর্ঘদিনের ইচ্ছে, লাদাখে গিয়ে সেখানকার কর্মরত সৈনিক ও বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করবেন তিনি। প্রসেনজিতের মতে, ঘরবাড়ি, পরিবার-পরিজন ছেড়ে দীর্ঘদিন তারা দেশের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। তাই তাদের জন্য এইটুকু স্বার্থত্যাগ তো করাই যায়।