বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবার বড় পদক্ষেপ নিলেন। গতকালই বিধানসভায় তোলপাড় হয়েছে। শাসকদলের বিধায়ক এবং বিজেপি বিধায়করা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছিলেন। সেই ঘটনায় আহত হয়েছেন ২ বিধায়ক। শুভেন্দু অধিকারী-সহ বিজেপির ৫ বিধায়ককে সাসপেন্ডও করা হয়। এবার এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপির বিরুদ্ধে গণতন্ত্রকে আক্রমণ করার অভিযোগ আনলেন। তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রের উপর হামলা করছে বিজেপি’। আর এই অভিযোগকে সামনে রেখে সমস্ত বিরোধী দলের নেতা এবং অ-বিজেপিশাসিত রাজ্যের মোদী বিরোধী মুখ্যমন্ত্রীদের একজোট হওয়ার ডাক দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই উদ্দেশ্যে তিনি বিরোধী নেতা ও মুখ্যমন্ত্রীদের চিঠিও দিলেন। লোকসভা নির্বাচনের প্রেক্ষিতে তৃণমূল সুপ্রিমোর এই পদক্ষেপ যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
জানা গিয়েছে, চিঠিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, ‘বিজেপির হাতে যেভাবে দেশের গণতন্ত্র আক্রান্ত তাতে আমি উদ্বিগ্ন। ইডি, সিবিআই, আয়কর, ভিজিল্যান্স কমিশনকে ব্যবহার করা হচ্ছে বিরোধীদের হেনস্থা করার জন্য। শীত অধিবেশেন দুটি বিল পাস করিয়েছে কেন্দ্র। এর বলে ইডি, সিবিআই ডিরেক্টরদের কার্যকালের মেয়াদ ৫ বছর করা হয়েছে। এটা একেবারেই সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বিরোধী।’
উল্লেখ্য, সম্প্রতি তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে তলব করেছে ইডি। শুধু অভিষেকই নয়, অনুব্রত মণ্ডলকেও তলব করেছে সিবিআই। এই পরিস্থিতিতে বিরোধী মুখ্যমন্ত্রীদের একজোট হওয়ার বার্তা দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চিঠিতে আরও লিখেছেন, ‘বিজেপি যেভাবে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোকে ব্যবহার করছে তা আমাদের আটকাতে হবে। ভোট এলেই কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলি অতি সক্রিয় হয়ে ওঠে। বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলিকে কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলির আওতায় বাইরে রাখা হয়। সরকার চালানোর ক্ষেত্রে স্বচ্ছতায় বিশ্বাস করি আমরা, কিন্তু তা বলে বিজেপির এই প্রতিহিংসার রাজনীতিকে সমর্থন করা যায় না। বিচারব্যবস্থার উপরে শ্রদ্ধা রেখেই বলছি, মানুষ ন্যায় বিচার পাচ্ছে না। গণতন্ত্র, বিচার ব্যবস্থা, মিডিয়া, জনগণ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এর একটাও যদি ভেঙে যায় তা হলে গণতন্ত্র ভেঙে পড়বে। কেন্দ্রের বিজেপি সরকার যা অন্যায় করছে তার প্রতিবাদ করার গণতান্ত্রিক দায় রয়েছে আমাদের। এর জন্য আমি চাই বিরোধীরা সবাই একসঙ্গে এসে বৈঠকে বসুন। এই অত্যাচারী শক্তিকে ঠেকাতে হবে।’
মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘এই অত্যাচারী সরকারের বিরুদ্ধে সমস্ত প্রগতিশীল শক্তিগুলিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’ রাজনৈতিক মহলের একাংশ এই চিঠির বার্তাকে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে। তবে, এই প্রথমবার নয়, এর আগেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়- সহ অন্যান্য তৃণমূল নেতারা অভিযোগ তুলেছিলেন, বিভিন্ন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করছে কেন্দ্রের মোদী সরকার। এবারও সেই একই অভিযোগ তুললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।