বংনিউজ২৪×৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ সংসারে ব্যাপক অর্থাভাব। স্বামী কর্মসূত্রে বাইরে থাকলেও সময় মত টাকা পাঠান না। এক সংসারে চারজন সদস্য। প্রত্যেকের মুখে দু’বেলা অন্ন জোগাতে রীতিমতো কালঘাম ছোটে। দিনের পর দিন অর্থনৈতিক টানাপোড়েনের জেরে নাজেহাল অবস্থা মা ও তিন সন্তানের। কিন্তু এভাবে আর কতদিন চলবে? এই চিন্তাই গ্রাস করেছিল তাঁদের। অভাবের তাড়নায় শেষমেষ চরম পদক্ষেপ নিলেন মা। নিজে তো বিষ খেলেনই, উপরন্তু তিন সন্তানের মুখেও তুলে দিলেন বিষ।
ঘটনার জেরে ইতিমধ্যেই মৃত্যু হয়েছে দুই মেয়ের। অন্যদিকে মৃত্যুর সঙ্গে হাসপাতালে পাঞ্জা লড়ছেন মা ও তাঁর একমাত্র ছেলে। এই মর্মান্তিক ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বীরভূম জেলার কীর্ণাহার থানার অন্তর্গত কালীনগর গ্রামে। জানা গিয়েছে, দুই মৃতা মেয়ের নাম হাসি খাতুন (১৩) ও খুশি খাতুন (১০)। অন্যদিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন মা সেরিনা বিবি ও ছোটো ছেলে ইরফান শেখ (৮)।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে খবর, দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে ওই অঞ্চলে বসবাস করতেন সেরিনা বিবি। ৩০ বছর বয়সী মহিলার স্বামী হোসেন শেখ কর্মসূত্রে আরবে থাকেন। প্রতিবেশীদের দাবি, গোটা পরিবার বরাবরই আর্থিক অনটনের মধ্যে দিন কাটাত। এমনকি বিগত সাত মাস ধরে কোনও টাকাই পাঠায়নি ওই মহিলার স্বামী। যার ফলে ব্যাপক অর্থাভাব গ্রাস করে। এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতেই সপরিবারে বিষ খায় বলে ধারণা প্রতিবেশীদের।
সূত্রের খবর, ওই চার জনের আত্মহত্যার খবর পেয়ে আত্মীয়রা মিলে তাঁদের তড়িঘড়ি নিয়ে যান বর্ধমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে। তাঁদের মধ্যে এক আত্মীয় জানান, হাসপাতালে নিয়ে আসার কিছুক্ষণের মধ্যেই মৃত্যু হয় দুই মেয়ে হাসি ও খুশির। তবে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন সেরিনা বিবি ও ছেলে ইরফান শেখ। তাঁদের অবস্থাও অত্যন্ত আশঙ্কাজনক বলে জানা গিয়েছে।
সেরিনা বিবির শ্বশুরবাড়ি মুর্শিদাবাদের সুন্দরপুর এলাকায়। তাঁর স্বামী হোসেন শেখ গত পাঁচ বছর ধরেই আরবে বসবাস করেন। কিন্তু একটানা ৭ মাস ধরে বাড়িতে একটা কানাকড়িও পাঠাননি তিনি। এই টাকা না পাঠানো নিয়ে প্রায়শই ফোনে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া লেগেই থাকত। প্রতিবেশীদের ধারণা, শুক্রবার রাতেও তাঁদের মধ্যে এমনই কিছু একটা ঘটে। তারপরেই সন্তানদের বিষ খাইয়ে নিজেও বিষ পান করে আত্মঘাতী হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন সেরিনা বিবি।