নিজস্ব প্রতিবেদন, বর্ধমানঃ বর্ধমানে বিষমদের ঘটনায় ফের বাড়ল মৃতের সংখ্যা। আরও দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। এই নিয়ে এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৮ জনের। মৃতদের নাম হল, খাগড়াগড়ের পূর্ব পাড়ার বাসিন্দা, ২৬ বছরের মীর মেহবুব ওরফে বাপ্পা এবং বছর ২৮-এর বাপন শেখ। এরা দুজনেই বর্ধমান কলেজ মোড় এলাকার তারামা হোটেল থেকে মদ খেয়েছিল বলেই পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার ওই হোটেল থেকে মদ খাওয়ার পরেই ওই দুজন অসুস্থ বোধ করতে শুরু করেন। ক্রমাগত বমি এবং পেতে অসহ্য যন্ত্রণা হচ্ছিল বলেই জানিয়েছে পরিবার। এও জানা গিয়েছে যে, এরা প্রায়ই কলেজ মোড়ের ওই হোটেল থেকে মদ খেত।
২৬ বছরের মীর মেহবুব ওরফে বাপ্পাকে বর্ধমান হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছিল, আর বাপন শেখকে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে। কিন্তু চিকিৎসা চলাকালীন উভয়েরই মৃত্যু হয়। এদিকে, এই ঘটনার পর পুলিশ এবং আবগারি দফতরের বিরুদ্ধে নিস্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছেন খাগড়াগরের বাসিন্দারা। তাঁদের মূল অভিযোগ, পুলিশ এবং আবগারি দফতরের সঠিক নজরদারি থাকলে, এমন ঘটনা ঘটত না। তাঁরা প্রশ্ন তুলেছেন, কীভাবে ওই হোটেলে খাবারের সঙ্গে মদ বিক্রি করছেন? সেই সঙ্গে মৃতদের পরিবারগুলিক আর্থিক সাহায্য করার দাবিও তুলেছেন এলাকার বাসিন্দারা।
এদিকে, মদ খাওয়ার পরে মৃত্যুর ঘটনায় জেলা জুড়ে বিভিন্ন জায়গায় বেআইনিভাবে মদ বিক্রি ঠেকাতে অভিযান চালায় পুলিশ। এখনও পর্যন্ত পূর্ব বর্ধমান জেলার বিভিন্ন থানা অভিযান চালিয়ে, গত দু’দিনে, ৬৯ জনকে গ্রেফতার করেছে। এর পাশাপাশি বিপুল পরিমাণে দেশি ও বিদেশি মদ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার ও শনিবার দিনভর অভিযান চালিয়ে আউসগ্রাম থানার পুলিশ ২ জনকে গ্রেফতার করেছে। আউসগ্রামের ছোড়া ফাঁড়ি এলাকায় ৩ জন ব্যাক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গুসকরা থানায় ১ জন, মাধবডিহি থানায় ৫ জন, জামালপুরে ৯ জন, দেওয়ানদিঘি থানায় ৩ জন, শক্তিগড়ে ২ জন, রায়নায় ৬ জন, মেমারিতে ৪ জন, খণ্ডঘোষে ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সূত্রের খবর, এর মধ্যে সব থেকে বেশি বেআইনি মদ উদ্ধার হয়েছে। আবার খণ্ডঘোষ থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে ২০ বোতল বিয়ার, ৯০ বোতল দেশি মদ ও ২৩০ লিটার চোলাই মদ উদ্ধার করা হয়েছে। একইসঙ্গে ১০০০ লিটার চোলাই মদ তৈরির সামগ্রী নষ্ট করেছে পুলিশ। আবার অন্যদিকে, গলসি থানাও গত দুদিন ধরে অভিযান চালিয়েছে বেআইনি মদ বিক্রি রুখতে। এই অভিযানে ১৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পাশাপাশি গলসি থানার পুলিশ দেশি ও বিদেশি মিলিয়ে মোট ৩৫৯ বোতল মদ বাজেয়াপ্ত করেছে। ধৃতদের প্রত্যেককেই শনিবার বর্ধমান আদালতে তোলা হয়। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে আগামীতেও বেআইনি মদ বিক্রি রুখতে, এই ধরনের অভিযান চলবে।