ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং-র প্রভাব কাটতে না কাটতেই ফের চোখ রাঙাচ্ছে আরো এক ঘূর্ণিঝড়। ইতিমধ্যেই বঙ্গোপসাগরে তৈরি হয়েছে এক ঘূর্ণাবর্ত। যা পরিণত হয়েছে নিম্নচাপে। এবার সেই নিম্নচাপে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে চলেছে। জানা গিয়েছে তামিলনাড়ু ও পুদুচেরিতে এর প্রভাব পড়বে সবচেয়ে বেশি। তাই ওই দুই জায়গায় ইতিমধ্যেই প্রস্তুত করা হয়েছে নৌ সেনা ও বিপর্যয় মোকাবিলা দলকে। উদ্ধারকাজে ঝাপানোর জন্য তৈরি রয়েছে জাহাজ ও বিমানও।
হাওয়া অফিস জানাচ্ছে, এই মুহূর্তে বঙ্গোপসাগরের দক্ষিণ-পূর্ব দিকে এবং চেন্নাই থেকে ৯০০ কিলোমিটার দূরে দক্ষিণ পূর্বে গভীর নিম্নচাপ হিসেবে অবস্থান করছে মান্দাস। এই নিম্নচাপি ধীরে ধীরে পরিণত হবে ঘূর্ণিঝড়ে। এরপর আগামীকাল তামিলনাড়ু ও অন্ধ উপকূলে দিকে যাবে এই ঘূর্ণিঝড়। এরপর ৪৮ ঘন্টায় পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিমের দিকে ক্রমে অগ্রসর হতে থাকবে মান্দাস।
ইতিমধ্যেই এই ঘূর্ণিঝড়ের জন্য অগ্রিম সর্তকতা জারি করা হয়েছে। আগামীকাল তামিলনাড়ুর ১৩ জেলা এবং শুক্রবার ঐ রাজ্যের বারোটি জেলায় কমলা সর্তকতা জারি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার তিরুভাল্লুর, কাঞ্চিপুরম, চেংগালপাত্তু, ভিল্লুপুরম, কাল্লাকুরিচি, কুড্ডালোর, আরিয়ালুর, পেরামবালুর, মায়িলাদুথুরাই, তাঞ্জাভুর, তিরুভারুর ও নাগাপট্টিনামে এই জেলাগুলিতে ভারে বৃষ্টির সতর্কতা রয়েছে। অন্যদিকে শুক্রবার তিরুভাল্লুর, চেন্নাই, কাঞ্চিপুরম, চেংগালপাত্তু, ভিল্লুপুরম, তিরুভান্নামালাই, রানিপেট, ভেল্লোর, তিরুপাত্তুর, কৃষাণগিরি, ধর্মপুরী ও সালেমে এই জেলাগুলিতে অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করেছে হাওয়া অফিস।
আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে খবর, এই ঘূর্ণিঝড় বৃহস্পতিবার এর মধ্যে তৈরি হতে পারে। তামিলনাড়ু ও পুদুচেরি উপকূলে আছরে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে এই ঘূর্ণিঝড়ের। জানা গিয়েছে বৃহস্পতিবার সকালে ৯০ থেকে ১০০ কিলোমিটার গতিবেগে এই ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়তে পারে। যদিও পশ্চিমবঙ্গের প্রভাব সরাসরি পড়বে না বলেই জানানো হয়েছে।
হাওয়া অফিস আরো জানিয়েছে, দক্ষিণ পূর্ব বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে গেলেই ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। উল্লেখ্য, এই নয়া ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করা হয়েছে মান্দাস। নাম দিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরশাহী। যার অর্থ ভেলা।
বুধবার রাত থেকেই তামিলনাডু, পুদুচেরি করাইকাল এবং অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলে এর প্রভাব পড়তে শুরু করবে। ভারী বৃষ্টি এমনকী ঝোড়ো হাওয়া বইতে শুরু করবে। বুধবার ভারী বৃষ্টির সঙ্গে ৬০ থেকে ৭০ কিলোমিটার গতিবেগে দমকা ঝড়ো হাওয়া বইতে পারে। বৃহস্পতিবার এই দমকা ঝোড়ো হওয়ার পরিমাণ আরও বাড়বে। সকালের দিকে এটি স্থলভাগে প্রবেশ করতে পারে। শনি- রবিবার পর্যন্ত এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব থাকবে।
মৌসম ভবন জানাচ্ছে, দক্ষিণ আন্দামান সাগরে ঘূর্ণাবর্ত আজই নিম্নচাপে পরিণত হচ্ছে। মঙ্গলবার এর মধ্যে এই নিম্নচাপ গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে। বুধবার তা আকার নেবে অতি গভীর নিম্নচাপে। দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে বুধবার রাতে অথবা বৃহস্পতিবার সকালেই এই ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়বে। পশ্চিমা উত্তর-পশ্চিম দিকে থাকবে এর অভিমুখ।