বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ মৌসম ভবনের সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুযায়ী, পশ্চিম মধ্য ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরের উপর প্রবল গতিতে আছড়ে পড়তে চলেছে ঘূর্ণিঝড় অশনি। জানা গিয়েছে শক্তি বাড়িয়ে ভয়ঙ্কর থেকে অতি ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে চলেছে ‘অশনি’। গত ৬ ঘণ্টায় প্রায় ২৫ কিলোমিটার বেগে প্রায় পশ্চিম-উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়েছে এই ঘূর্ণিঝড়। এদিকে, আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলছে, আজ ৯ মে ভারতীয় সময় ভোর সাড়ে ৫ টা কেন্দ্রীভূত হয়েছিল ঘূর্ণিঝড় অশনি।
জানা গিয়েছে, পশ্চিম কেন্দ্রীয় এবং সংলগ্ন দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ থেকে প্রায় ৮৭০ কিমি পশ্চিম-উত্তর-পশ্চিমে, পোর্ট ব্লেয়ার-এ, ৭৩০ কিমি পশ্চিম-উত্তর-পশ্চিমে, আবার ৫৫০ কিমি দক্ষিণ-পূর্বে অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনম এবং ৬৮০ কিমি দক্ষিণ-দক্ষিণ-পূর্বে ওড়িশার পুরী শহরে এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব বেশি দেখা যাবে। এই ঘূর্ণিঝড় ১০ মে মঙ্গলবার পর্যন্ত উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে উত্তর অন্ধ্রপ্রদেশ ও ওড়িশা উপকূল থেকে পশ্চিমকেন্দ্র এবং সংলগ্ন উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে যাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। এরপরে উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে ফিরে এসে ওড়িশা উপকূলে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরের দিকে অগ্রসর হতে পারে বলে জানা গিয়েছে।
জানা গিয়েছে, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় এই ঘূর্ণিঝড় ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়বে। এই মুহূর্তে অশনির গতিবেগ ঘণ্টায় ২১ কিলোমিটার। কিন্তু ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হলেও, এই সাইক্লোন আদৌ শেষ পর্যন্ত স্থলভাগে আছড়ে পড়বে কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয়। আবহাওয়াবিদদের বেশিরভাগের মতেই, সমুদ্রেই শক্তি হারিয়ে ফেলবে এই ঘূর্ণিঝড়।
তবে বাংলায় এর সরাসরি প্রভাব না পড়লেও, এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বাংলায় মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বৃষ্টির পূর্বাভাস জারি করা হয়েছে। সোমবার সকাল থেকেই কলকাতায় বৃষ্টি শুরু হয়েছে। হাওয়া অফিস জানাচ্ছে, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের জেলাগুলিতে মঙ্গলবার থেকে চলতি সপ্তাহের বৃহস্পতিবার পর্যন্ত হালকা বৃষ্টির সম্ভবনা রয়েছে। বুধ এবং বৃহস্পতিবার পূর্ব মেদিনীপুর, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ভারী বৃষ্টির পূ্র্বাভাস জারি করা হয়েছে। মঙ্গলবার থেকে সমুদ্রে যেতে মৎস্যজীবীদের নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
এই ঘূর্ণিঝড়ের জেরে মঙ্গল থেকে বৃহস্পতি দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির পাশাপাশি ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে বলে জানাল আবহাওয়া দফতর। দক্ষিণবঙ্গের সব জেলাতে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হবে। তার সঙ্গে ৩০-৪০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। ১১ এবং ১২মে উপকূলের তিন জেলা যথাক্রমে পূর্ব মেদিনীপুর, দুই ২৪ পরগনায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ভারী বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। পাশাপাশি অন্যান্য জেলায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি এবং তার সঙ্গে ৪০-৫০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে বলে জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর।
সোমবার সন্ধের মধ্যে মৎস্যজীবীদের সমুদ্র থেকে ফেরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে। মঙ্গলবার থেকে সমুদ্রে যেতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। একইভাবে দিঘা, মন্দারমনি সমুদ্রতটে যাওয়া নিয়ে পর্যটকদের জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে।
এদিকে, অশনির আগমের মাঝেই সোমবার কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টি শুরু হয়েছে আজ সকাল থেকেই। আধ ঘণ্টার বৃষ্টিতে শহরের বিভিন্ন এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। বৃষ্টিতে জলমগ্ন সেন্ট্রাল এভিনিউ, সেক্টর ফাইভের মতো বেশ কিছু এলাকা। এর জেরে নিত্য যাত্রীদের অসুবিধায় পড়তে হয়।