মাঝেমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন সব কাহিনী ভাইরাল হয় যা আমাদের অনুপ্রেরণা যোগায়৷ এমন কিছু মানুষের কাহিনী তুলে ধরা হয়, যাঁরা হাজার প্রতিকূলতা সত্ত্বেও হাল ছাড়েননি। জীবনের প্রতি পদক্ষেপে নিয়ে চলেছেন চ্যালেঞ্জ। সেই সকল আমাদের ভাবাতে বাধ্য করে।
তেমনই এবার নেটমাধ্যমে উঠে এক মা`য়ের কাহিনী। জীবনযুদ্ধের লড়াইয়ে টিকে থাকার জন্য তিনি সম্বল করেছেন অ্যাপ ক্যাবকে। কিন্তু ক্যাচ চালানোর সময় সঙ্গে থাকে তাঁর একরত্তি সন্তানও। ছোট্ট শিশু কন্যাকে সামনের সিটে বসিয়েই যাত্রীদের নিয়ে সফর করেন তিনি। সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া এই ছবি হৃদয় ছুঁয়ে গিয়েছে নেটিজেনদের। অ্যাপ ক্যাব চালাচ্ছেন মা, পাশের সিটে ঘুমাচ্ছে মেয়ে। এই ছবি নিমেষেই ভাইরাল হয়ে গিয়েছে নেটদুনিয়ায়।
ছবিটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেন এক যাত্রী। যেখানে পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি মহিলা উবার ক্যাব চালককে মা`য়ের দায়িত্ব পালন করতেও দেখা গিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম লিঙ্কডইন-এ ক্লাউডসেকের সিইও রাহুল শশী শেয়ার করেছেন। তিনি তার পোস্টে উল্লেখ করেছেন, তিনি যখন ক্যাব বুক করেছিলেন তখন তিনি জানতেন না যে একজন ‘মা’ ড্রাইভার হিসাবে তাকে নিতে আসবেন। তিনি বেঙ্গালুরুতে একটি উবার ক্যাব বুক করেছিলেন, কিন্তু কে তাকে নিতে আসছে তার কোনও ধারণা ছিল না। রাহুল বলেছেন যে, ক্যাবটি এসে যখন সামনে থামল, তখন সেখানে একজন মহিলা চালকের আসনে বসেছিলেন, পাশের সিটে একটি সুন্দর বাচ্চা মেয়েকে ঘুমোতে দেখে অবাক হয়েছিলেন। রাহুল সেই মহিলা ক্যাব চালকের কাছে জানতে চান মেয়েটি কে? তখন ক্যাব চালক তাকে জানান মেয়েটি তার নিজের সন্তান।
রাহুলকে ওই মহিলা জানান তাঁর নাম নন্দিনী। তিনি নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে উপার্জন করতে চান। করোনার আগে তিনি একটি খাবারের ব্যবসা শুরু করেছিলেন। কিন্তু অতিমারী সব কিছুই কেড়ে নিয়েছে। জমানো অর্থও প্রায় শেষ। সম্বল বলতে এই গাড়ি। তাই তিনি উবারের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন কিছু বাড়তি উপার্জনের আশায়। এই কাজে তিনি ১২ ঘণ্টা সময় দেন। নন্দিনীর মতে, কোনও কাজই ছোট বা বড় নয়। তাঁর স্বপ্নপূরণ করতে তিনি কঠোর পরিশ্রম করতেও রাজি।
নন্দিনীর কথায় এতটাই ক্যাব যাত্রী রাহুল এতটাই অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন যে, তিনি তার সঙ্গে একটি ছবি তোলার অনুরোধ করেন। পরে ঘটনার বিবরণ সহ সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করেন তিনি। মেয়েকে নিয়েই জীবন যুদ্ধে নামতে হয়েছে ওই মহিলাকে। আর সেই দৃশ্য মন ছুঁয়ে নিয়েছে নেটপাড়ার। মহিলার এই হার না মানা লড়াইয়ের কাহিনী এখন ঝড়ের বেগে ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়। উবার ইণ্ডিয়ার সিইও প্রভজিত সিং নিজেও ওই মহিলাকে সাহায্য করার জন্য যোগাযোগ করেছেন। মহিলার পরিশ্রম আর জেদের ভূয়সী প্রশংসাও করেছেন।