সাপকে কে না ভয় পায়! সাপের কথা উঠলেই যেন গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে, সকলেই যেন শিউরে ওঠেন। তবে জানেন কি আমাদের এই দেশেই রয়েছে এমন এক গ্রাম যেখানে বিয়ে যৌতুক হিসেবে বাড়ি-গাড়ি বা সোনা-গয়না নয়, দেওয়া হয় ২১টা সাপ! শুনতে অদ্ভুত লাগলেও এটাই সত্যি! এমন কাণ্ড যা দেখলে চক্ষু চড়কগাছ হবেই!
ঝাড়খণ্ডের কোবরার সোহাগপুর গ্রামে নিয়মই এটা৷ কোনও পরিবারের মেয়ের বিয়ে দিলে ২১টা সাপ বিয়েতে যৌতুক হিসাবে দেওয়া হয়ে থাকে৷ প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, মেয়েকে পণ হিসাবে সাপ দেওয়ার কারণে শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে সাপের খেলা দেখিয়ে পরিবারের আয় হতে পারে কেননা এই প্রজাতির মানুষদের জমি নেই।
কোন জাতি বা প্রজাতির তাও জানা নেই তাই সংরক্ষণের সুবিধা পাননা তাঁরা ৷ ভারতে বিভিন্ন ধরনের জাতি বা প্রজাতির মানুষ বসবাস করে থাকেন। তাঁদের জাতি-ধর্ম ও বর্ণ আলাদা, ভাষা আলাদা কিন্তু সবার একটা পরিচয় আমরা ভারতবাসী৷ কোবরা জেলার করতালা ব্লকের সোহাগপুর গ্রামে বেশ কয়েক বছর ধরে এই রীতিনীতি চলছে।
২১টি সাপ পণ হিসাবে দিয়ে বিয়ে না দিলে সেই বিয়ে কেউ মানে না বা বিয়ে সম্পন্নও হয় না ৷ এই আজব নিয়মে দেখে বন দফতরও বেশ কয়েকবার আইন প্রয়োগ করে সাপেদের মুক্ত করেছে। তবে বিয়েতে পণ হিসাবে ২১ সাপের প্রথা কমে বর্তমানে দাঁড়িয়েছে ১১টি সাপ। সবরা সমাজ জঙ্গলে থেকে এই বিষাক্ত সাপ ধরে সাপের বিষ দাঁত ভেঙে নিজেদের সংগ্রহে রাখে৷ বাড়ি বাড়ি সাপের খেলা দেখিয়ে রুজি রুটির ব্যবস্থা করে থাকে।
এখানে প্রতিদিনই কোনও না কোনও বাড়িতে সাপের দেখা পাওয়া যায় ৷ অনেক সময়ে সাপের কামড়ের ফলে মানুষদের চিকিৎসার বদলে ঝাড়ফুঁকের ফলে প্রাণ গিয়েছে। গ্রামেরই এক বাসিন্দা সুনীল জানিয়েছেন, সরকারি সহায়তায় তাঁদের রেশন কার্ড তৈরি হয়েছে কন্তু এখনও তাঁদের কোনও জায়গা জমি নেই৷ কারোর কাছেই জাতি শংসাপত্র নেই এখানে ৷ সেই কারণেই সংরক্ষণ বলে কোনও প্রশ্ন নেই। যদিও কোবরা জেলায় সাপের সংখ্যা আগের থেকে বেড়েছে।