শিশুদের চরিত্র ও ভবিষ্যৎ গঠনে স্কুলের গুরুত্ব অপরিসীম। ভবিষ্যতে শিশুরা কেমনভাবে গড়ে উঠবে বা তাদের আচরণ কেমন হবে তা তা শেখাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে স্কুল। তবে বর্তমানে অধিকাংশ স্কুলই কেমন অর্থ উপার্জনের দিকে নজর দিতে গিয়ে শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষা দিতেই ভুলতে বসেছে। এর মধ্যেই সম্প্রতি নজর কাড়ল মধ্যপ্রদেশের গ্রামের একটি স্কুল। সেই স্কুলের পড়ুয়ারা যেভাবে প্রশিক্ষণ পেয়ে আসছে তা দেখলে রীতিমতো অবাক হবেন!
স্কুলটি মধ্যপ্রদেশের সিংরাউলির বুধেলা গ্রামে অবস্থিত। নাম বীণা ভাদিনী পাবলিক স্কুল। প্রকৃতপক্ষে, এই স্কুলের ১০০ জন পড়ুয়া দুহাতে সমান ভাবে লিখতে পারদর্শী। শুধু তাই নয়, পাঁচটি ভাষাতেও রীতিমত ওস্তাদ পড়ুয়ারা। এই বিদ্যালয়ের শতাধিক পড়ুয়া দু’হাতে সমান তালে লিখতে সক্ষম। সেই সঙ্গে ৫টি বিভিন্ন ভাষাও রপ্ত করে ফেলেছে তারা। যার মধ্যে রয়েছে হিন্দি, সংস্কৃত, ইংরেজি, উর্দু এবং স্প্যানিশ।
বিদ্যালয়টি ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এখন পর্যন্ত এই স্কুল থেকে ৪৮০ জন শিক্ষার্থী স্নাতক হয়েছেন যারা দু হাতে লিখতে পারদর্শী। স্কুলের তরফে দাবি করা হয়েছে যে এই স্কুলের ছাত্ররা এক মিনিটের মধ্যে ২৫০ শব্দের একটি পাঠ্য অনুবাদ করতে পারে। শিক্ষার্থীদের নিয়মিত ক্লাসের পাশাপাশি এক ঘণ্টা যোগব্যায়াম ও ধ্যান শেখানো হয়।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক বীরাঙ্গদ শর্মা বলেন, "আমরা প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রাজেন্দ্র প্রসাদের অনুপ্রেরণায় পড়ুয়াদের গড়ে তোলার চেষ্টা করছি। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রাজেন্দ্র প্রসাদ, দুই হাতে সমান ভাবে লিখতে পারতেন। আমরা এটিকে অনুপ্রেরণা হিসেবে নিয়েছি এবং আমাদের বাচ্চাদের মধ্যে এই দক্ষতা তৈরি করতে উদ্যোগ নিয়েছি।"
স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র পঙ্কজ যাদব বলেন, “আগে আমি আমার ডান হাতে লিখতাম, তারপর আমি আমার বাম হাতে লিখতে শিখলাম। তৃতীয় শ্রেণিতে যখন আমি পড়ি তখন আমি দুহাতেই লিখতে পারি সমান ভাবে”। অপর এক পড়ুয়া আদর্শ কুমার বলেন, আমি যখন প্রাইমারিতে পড়তাম, তখন ডান হাতে লিখতাম, তারপর বাঁ হাতে লিখতে শিখেছি।
মনোবিজ্ঞানীরা পড়ুয়াদের এই দক্ষতা সম্পর্কে বলেছেন যে “আমাদের মস্তিষ্ক দুটি ভাগে বিভক্ত। বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের এমনভাবে প্রশিক্ষণ দেন যাতে তারা একই সময়ে মস্তিষ্কের উভয় অংশ ব্যবহার করতে পারে, সেটাকে কাজে লাগিয়েই এমন অসম্ভবকে সম্ভব করেছে মধ্যপ্রদেশের এই স্কুল।