কয়েক মাস আগেই মারা গিয়েছেন স্বামী। তিন সন্তানকে নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছিলেন `মা`। যার মধ্যে একজন আবার বিশেষভাবে সক্ষম। কোনওমতে চলত সংসার। প্রায় দিনই অভুক্ত কাটাতে হত৷ সন্তানদের মুখে দুমুঠো খাবার তুলে দেওয়ার জন্য তাই ছেলের শিক্ষকের কাছে হাত পাততে বাধ্য হন ওই মহিলা। কিন্তু তার বদলে তিনি পেলেন একরাশ ভালোবাসা, সঙ্গে ৫১ লক্ষ টাকাও। নেপথ্যে রয়েছে ফেসবুক।
কেরালার পালাক্কডের বাসিন্দা বছর ৪৬-এর সুভদ্রা স্বামীকে হারিয়েছেন গত অগাস্টে। তারপর থেকে তিন সন্তানকে নিয়ে কোনও মতে সংসার চালাচ্ছেন। সন্তানদের মানুষ করতে একাই চালাচ্ছেন লড়াই। এভাবে চলতে চলতে যখন বাধ ভাঙে তখন অভুক্ত সন্তানদের মুখে খাবার তুলে দেওয়ার জন্য ছেলে অভিষেকের শিক্ষকের কাছ থেকে ৫০০ টাকার সাহায্য চান তিনি।
গিরিজা হরিকুমার নামে ওই শিক্ষক এরপর ওই মহিলাকে সাহায্য করার পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্টও করেন। ওই পরিবারের দুর্দশার কথা তুলে ধরে মহিলার জন্য কিছু সাহায্য চান। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ক্রাউডফান্ডিং গঠন করেন। তিনি পোস্টে সুভদ্রার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের বিবরণও শেয়ার করেন, এরপর ঘটে মিরাকেল।
পরিবারের দুর্দশা দেখে ওই মহিলার জন্য মানুষজন এই পোস্টে বিপুল সাড়া দেন। সকলেই এগিয়ে আসেন সুভদ্রার জীবন যুদ্ধে সামিল হতে। পোস্টটি রীতিমত ভাইরাল হয় এবং দুই দিনের মধ্যে, অনুদান বাবদ ৫১ লক্ষ টাকা মহিলার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা পড়ে।
এতটাকা একসঙ্গে পেয়ে আপ্লুত সুভদ্রাও। তিনি বলেন, “আমি জানি না কিভাবে আপনাদের সকলের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করব। এক মুঠো চাল ছাড়া সেদিন আমার কাছে কিছু ছিল না। এই টাকায় আমি সন্তানদের ভালভাবে মানুষ করব”।
এই ঘটনায় মানুষজনের এভাবে এগিয়ে আসায় অভিভূত শিক্ষকও। গিরিজা বলেন, “আমার কাছে সন্তানদের মুখে খাবার তুলে দেওয়ার জন্য ৫০০ টাকা চেয়েছিলেন ওই মহিলা এবং আমি ওনাকে ১০০০ টাকা দিই, এবং ওনার দুর্দশায় পাশে থাকার চেষ্টা করি। একি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করি এবং ক্রাউডফান্ডিং গঠন করি। তাতে মানুষজন ব্যপক সাড়া দিয়েছেন”। সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে নেটিজেনরা শিক্ষকের এই প্রয়াসের প্রশংসা করছেন।