রিল বানানোর সময় পাশে চলে এসেছিল একটি পথকুকুর। ইনস্টাগ্রাম ইনফ্লুয়েন্সার কাজল কিরণ ওই কুকুরটিকে এক লাথি মেরে তাড়িয়ে দেন। তারপরই ক্ষোভে ফুঁসছে নেটদুনিয়া। এহেন কাজলের ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইলের ফলোয়ার সংখ্যা 1,21,000। কিন্তু তাঁর এই হাসতে-হাসতে একটা কুকুরকে লাথি মারার বিষয়টি নেটিজ়েনরা এক্কেবারেই ভাল চোখে দেখছেন না।
পশুপ্রেমীরাও সরব হয়েছেন এই নিন্দাজনক ঘটনায়। এ বিষয়ে তাঁরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগও জানিয়েছেন। বিদিত শর্মা নামে এক ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা টুইটারে লিখেছেন, “একটা অবলা প্রাণীর প্রতি এতটা সংবেদনশীল কীভাবে হতে পারেন? আপনি ওদের ভালবাসতে নাই পারেন, তা বলে তাদের আঘাত করবেন না।” তারণা সিং নামের এক সমাজকর্মী লিখছেন, “কী ভয়ঙ্কর এহং অমানবিক। নিজেদের ছবি বা ভিডিয়োর লাইক পেতে আমরা কি এতটাই নীচু মানসিকতার হতে পারি? এরকম একটা ঘৃণ্য কাজে তরুণ প্রজন্মকে আমরা কি শিক্ষা দিচ্ছি?”
এদিকে নিন্দাজনক এই ঘটনায় বিতর্ক বাড়তেই ভিডিয়োটি ডিলিট করে দেন কাজল। ক্ষমা চেয়ে দাবি করেন, তিনিও পশুপ্রেমী। ভিডিয়োর ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, “বন্ধুরা, এই নির্দয় কাজের জন্য আমি সত্যিই ক্ষমাপ্রার্থী। হিট অফ দ্য মোমেন্টে আমি এমনটা করে ফেলেছিলাম। আমার এই কাজের জন্য খুব অনুতপ্ত, সেই সময় বুঝতে পারিনি। এখন থেকে আমি আর কোনও প্রাণীর ক্ষতি না করার শপথ নিলাম।”
অ্যানিম্যাল হোপ অ্যান্ড ওয়েলনেস নামক এক NGO-র তরফে বলা হয়েছে, “একদমই মজাদার ঘটনা ছিল না। খুবই বিরক্তিকর। ভিডিয়ো দেখে মনে হয়েছে, ঘটনাটি আপনার এবং আপনার চারপাশের মানুষজনের কাছে মজার ছিল, কিন্তু আমাদের অনেকের কাছেই নয়। আপনি কীরকম মানুষ, তা দেখিয়েছেন। তাই এখন আর অন্য মানুষ সাজার ভান করতে যাবেন না। একটা বিষয় নিশ্চিত করুন, যাতে আর কখনও কোনও পশুর পাশে আপনাকে না দেখা যায়।”
আরও একটা ভিডিয়ো পোস্ট করে আবারও ক্ষমা চান কাজল। সেই ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, পথকুকুরদের বিস্কুট খাওয়াচ্ছেন তিনি। পুনরায় তিনি দাবি করেন যে, পশুদের যথেষ্ট ভালবাসেন। পাশাপাশি এ-ও জানান যে, এই নতুন ভিডিয়োটি অনেক পুরনো। কুকুরকে লাথি মারার ওই ঘটনার অনেক আগে এটি শুট করা হয়েছিল বলে আরও যোগ করেছেন কাজল।
তিনি আরও একটি ভিডিয়ো আপলোড করেছেন। সেখানে কাজল দাবি করেছেন, তাঁর মৃত্যুর পর কীভাবে মানুষ তাঁকে মনে রাখবে, সেই বিষয়টি। ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, তিনি পথকুকুরকে পানীয় জল দিচ্ছেন এবং রাস্তায় ভিক্ষুক, বিশেষভাবে অক্ষম ব্যক্তি, শিশু এবং আর্থিকভাবে সংকটে রয়েছেন, এমন মানুষদের সাহায্য করছেন। কাজলের কথায়, “সারাজীবন আমি অন্যদের জন্য ভাল কাজ করেছি। কিন্তু লোকজন পড়ে আছেন সেই একটা ভুল ধরতেই।”