প্রত্যেক বেকার যুবক যুবতীরই স্বপ্ন থাকে চাকরি পেয়ে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর। মোটা বেতনের চাকরি কীভাবে নিজেদের ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিত করা যায় সেই লক্ষ্যেই পড়াশোনা চালিয়ে যান তাঁরা৷ তবে এঁদের মধ্যেও এমন অনেকেই রয়েছেন যাঁরা চাকরি নয়, বরং ব্যবসা করতে ইচ্ছুক। নিজের ছোট্ট ব্যবসা খোলার জন্য পড়াশোনা ছেড়ে দিতেও পিছপা হন না তাঁরা। এরকমই একজন হলেন, ২২ বছর বয়সী সঞ্জিত কোন্ডার। স্রোতের উল্টোদিকে হেঁটেই আজ নিজের ছোট্ট ব্যবসা দাঁড় করিয়ে ফেলেছেন তিনি৷ শুধু তাই নয়, সেই ব্যবসাই তাঁকে করে তুলেছে কোটপতি।
অন্ধ্রপ্রদেশের নেল্লোরের বাসিন্দা সঞ্জিত পড়তে গিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার একটি প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়ে। লা ট্রোব ইউনিভার্সিটিতে বিবিএ পড়ার জন্য ভর্তিও হন তিনি। কিন্তু মাঝপথে পড়াশোনা ছেড়ে শুরু করেন চায়ের ব্যবসা। মেলবোর্নে খোলেন ‘ড্রপআউট চায়ওয়ালা’। এখন সে দেশে কোটি টাকার ব্যবসা করেন এই ভারতীয় যুবক। সোশ্যাল মিডিয়ায় একথা নিজেই জানিয়েছেন সঞ্জিত।
অস্ট্রেলিয়ায় বিবিএ পড়ার সময়ই চায়ের দোকান খোলার মনস্থির করেন ২২ বছর বয়সী সঞ্জিত কোন্ডার। এরপর পড়াশোনা ছেড়ে অস্ট্রেলিয়ার যে শহরে যেখানে কফি অত্যন্ত জনপ্রিয়, সেই মেলবোর্নের স্বাদ বদল করার জন্য শুরু করেন চায়ের ব্যবসা। আর মাত্র এক বছরেই কোটি টাকার মালিক হয়েছেন এই ভারতীয় ছাত্র। সঞ্জিত তাঁর প্রথম স্টার্ট-আপ ‘ড্রপআউট চায়ওয়ালা’ তৈরি করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।তাঁরএই গল্প এখন ভাইরাল নেটদুনিয়ায়।
এখন সঞ্জিতের চায়ের প্রেমে মজে গোটা মেলবোর্ন। শহরের ব্যস্ত CBD (সেন্ট্রাল বিজনেস ডিস্ট্রিক্ট) এলাকায় এলিজাবেথ স্ট্রিটে অবস্থিত সঞ্জিতের চায়ের স্টল। প্রতিদিন সকাল- সন্ধ্যে চা খাওয়ার জন্য সেখানে মানুষের ঢল নামে। চা ছাড়াও সিঙ্গারাও পাওয়া যায় এই স্টলে। সঞ্জিত জানিয়েছেন, ওই দেশের মানুষেরা চা’কে বেশ সহৃদয় গ্রহণ করেছে। তিনি ভারত থেকে চা আমদানি করেন। অস্ট্রেলিয়াবাসীরা ‘ড্রপআউট চাইওয়ালা’-এর ‘মশলা চা’ খেতে বেশি পছন্দ করেন। যদিও ওই দেশের প্রবাসী ভারতীয়দের মধ্যে ‘ড্রপআউট চাইওয়ালা’-এর ‘বম্বে কাটিং চা’ বেশি ভালবাসেন বলে জানিয়েছেন এই ভারতীয় যুবক।
সঞ্জিতের চায়ের দোকানে যে সকল কর্মচারী রয়েছে তারা সকলেই ভারতীয়। পড়াশুনার ফাঁকে অতিরিক্ত উপার্জনের আশায় অনেকেই কাজ করেন সেখানে। এখন একটা থেকে তিন তিনটে চায়ের দোকানের মালিক সঞ্জিত। তাঁর এই প্রতিষ্ঠানটি এক বছরে এক মিলিয়ন ডলারে পরিণত হয়েছে। মাত্র এক বছরের ব্যবসায়ে এক মিলিয়ন (অস্ট্রেলিয়ান) ডলারের কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে তাঁর এই সংস্থা। অর্থাৎ প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি টাকার মালিক সঞ্জিত।