বিয়েবাড়ি মানেই হইহট্টগোল, হাসি-মজা। আর তার সঙ্গেই সবচেয়ে বড় আকর্ষণ খাওয়াদাওয়া। বিয়েবাড়ির খাওয়াদাওয়া মানে এক এলাহি ব্যাপার। কত আয়োজনই না থাকে সেখানে। তবে এর মধ্যেই উদ্বেগের বিষয় হল, খাবারের অপচয়। প্রায় অধিকাংশ বিয়েবাড়িতেই দেখা যায় খাবারের বেশ বড় একটা অংশের অপচয় হচ্ছে৷ পরিমাণের থেকে বেশি খাবার নিয়ে তা এঁটো প্লেটেই ফেলে রাখছেন আমন্ত্রিতরা আর সেই খাবারের ঠাঁই হচ্ছে ডাস্টবিনে। ফলে নষ্ট হচ্ছে অনেকটা পরিমাণ খাবার।
এবার ঠিক সেরকমই আরেক দৃশ্য ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়। উঠে এসেছে এমন এক ছবি যেখানে দেখা যাচ্ছে, কীভাবে এই এলাহি বিয়েবাড়িগুলিতে কিলো কিলো খাবার ডাস্টবিনে ফেলে নষ্ট করা হয়! ছবিটি শেয়ার করেছেন অবনীশ শরন নামে এক আই.এ.এস আধিকারিক। সেখানে দেখা যাচ্ছে, বিয়েবাড়ির বাইরে একটি ডাস্টবিনের সামনে বসে এক সাফাইকর্মী। তাঁর সামনে সারি দিয়ে সাজানো সাদা রঙের এঁটো প্লেট, মাটিতে ডাঁই করা কিলো কিলো খাবারের স্তূপ! আর যুবকটি সেগুলি পরিষ্কার করতে ব্যস্ত। এই দৃশ্য ভাইরাল হতেই জোর চর্চা শুরু নেটদুনিয়ায়।
ছবিটির মাধ্যমে ওই সরকারি আধিকারিকটি সাধারণ মানুষকে এক জোরালো বার্তা দিয়েছেন। ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, `আপনার ওয়েডিং ফোটোগ্রাফার যে ছবিটি তুলতে পারেননি। খাদ্যের অপচয় বন্ধ করুন।` আর বেশ নাড়িয়ে দিয়েছে নেটিজেনদের। ছবিটি দেখে ইতিমধ্যেই উঠেছে তুমুল নিন্দার ঝড়। সমালোচনায় মুখর হয়েছেন মানুষ। একাংশ বলছেন, এভাবে অতিরিক্ত খাবার নষ্ট না করে তা অভাবী, দরিদ্র মানুষের মুখে তুলে দিলে তাতে অন্তত কিছু মানুষের পেট ভরবে। অপচয় বন্ধ করে তাই বাড়তি খাবার বিতরণ করা উচিত। আবার অনেকের মতে, যারা এভাবে খাবার অপচয় করে তাদের বিরুদ্ধে কড়া আইন নিয়ে আসা প্রয়োজন। নাহলে এদের হুঁশ ফিরবে না।
সত্যিই তো! ভারতের মতো এক দেশে, যেখানে প্রতিদিন দেশের একটা বড় অংশের মানুষই ঠিকমতো খেতে পায় না, দু`মুঠো খাবার জোটে না তাদের, সেখানে এভাবে খাবারের অপচয় খুবই দৃষ্টিকটু। বিশেষ করে দেশের বিত্তবান সব পরিবারের নানা অনুষ্ঠানে সে পরিমাণে খাবার নষ্ট হয়, তা দেখে হতবাক হয়ে যেতে হয়! একদিকে মানুষ পেট ভরে খেতে পাচ্ছেন না, অন্যদিকে ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়া হচ্ছে খাবার, এ দৃশ্য দেখলে ক্ষোভ জাগাটাই স্বাভাবিক৷ এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে সরকারি ওই আধিকারিকের পোস্ট করা ছবিটি যেন নতুন করে ফের প্রশ্ন তুলে দিল। চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, আজও কীভাবে খাবারের অপচয় হয়ে চলেছে দেশে৷