কথায় বলে, ইচ্ছে থাকলেই উপায় হয়৷ ইচ্ছেশক্তি ও মনের জোরে বহু অসম্ভব, কঠিন কাজকে অনায়াসেই সম্ভব করে ফেলা যায়। সে কথাই ফের একবার প্রমাণ করলেন এক বৃদ্ধা। বয়স কবেই সেঞ্চুরি পার! তবুও এই বয়সে বিছানায় শুয়ে-বসে না থেকে রীতিমতো দৌড়-ঝাঁপ করে বেড়াচ্ছেন তিনি। শুধু তাই নয়! সম্প্রতি ১০০ মিটার দৌড়ে সোনা জিতে সকলকে তাকও লাগিয়ে দিলেন! সেই সঙ্গে দেখিয়ে দিলেন স্বপ্নপূরণের জন্য বয়স বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না।
হরিয়ানার বাসিন্দা রামবাঈ দেবী। বয়স এখন ১০৫ বছর৷ আর এই বয়সেই এএফআই (AFI) আয়োজিত জাতীয় স্তরের একটি প্রতিযোগিতায় দৌড়ে পূর্বের সব রেকর্ড ভেঙে দিলেন তিনি। মাত্র ৪৫.৪০ সেকেন্ডে ১০০ মিটার দৌড় সম্পূর্ণ করেন তিনি। অবশ্য তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী কেউই ছিলেন না। একাই ওই প্রতিযোগিতায় নামেন বৃদ্ধা৷ আর দৌড় শেষ করেই তাই জিতে নেন সোনার পদক।
ভাদোদরায় অনুষ্ঠিত অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশন অব ইন্ডিয়া আয়োজিত (Athletics Federation of India) ন্যাশনাল ওপেন মাস্টার্স অ্যাথলেটিক্সে (National Open Masters Athletics Championships) বয়সভিত্তিক ১০০ মিটার রেসে অংশ নিয়েছিলেন রামবাঈ দেবী৷ এই প্রতিযোগিতার ৮৫ বছরের উর্ধ্বে বিভাগে অংশ নেন এই বৃদ্ধা। তবে প্রতিযোগী হিসেবে তিনি ছিলেন একাই। আর কেউই ৮৫ বছরের উর্ধ্বে ১০০ মিটার দৌড়ে অংশ নেওয়ার মতো ছিলেন না। তবে তাতে কি! প্রতিযোগিতায় নেমে মাত্র ৪৫.৪০ সেকেন্ডে দৌড় সম্পূর্ণ করে সোনা জিতে নেন রামবাঈ। সেই সঙ্গে গড়ে ফেলেন নয়া জাতীয় রেকর্ড।
এর আগে এই প্রতিযোগিতার ১০০ মিটারে সোনা জয়ের রেকর্ড ছিল ১০১ বছর বয়সী মান কৌরের ঝুলিতে। ৭৪ সেকেন্ডে রেস সম্পূর্ণ করেছিলেন তিনি। সেই রেকর্ড এবার ভেঙে ফেললেন ১০৫ বছরের রামবাঈ। প্রতিযোগিতার শুরু থেকে শেষ অবধি তাঁকে উৎসাহে ভরিয়ে তোলেন গ্যালারিতে উপস্থিত দর্শকরা। আর তিনি সোনা জেতার পর হাততালিতে ফেটে পড়ে গোটা গ্যালারি।
রামবাঈয়ের জন্ম ১৯১৭ সালের ১ জানুয়ারি। তবে বার্ধক্যের সীমান্তে পৌঁছেও তিনি দারুণ ফিট৷ এই ফিটনেসের সিক্রেট কী? বৃদ্ধা জানিয়েছেন তাঁর খাওয়া-দাওয়া। তিনি সম্পূর্ণ নিরামিষভোজী। প্রত্যহ দিনে দু’বার খাঁটি দুধের সঙ্গে বাজরার রুটি খান তিনি। সঙ্গে থাকে ২৫০ গ্রাম ঘি ও ৫০০ গ্রাম দই। তবে ভাত বিশেষ খান না। চুরমা খেতে ভালোবাসেন।
যাই হোক, জাতীয় রেকর্ড গড়েও কিন্তু বসে থাকতে নারাজ রামবাঈ দেবী। এবার তিনি চান আন্তর্জাতিক স্তরের প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে। কারণ নিজের স্বপ্নপূরণ করতে চান। আগে সুযোগ হয়নি। কিন্তু এখন সুযোগ যখন এসেছে তা হাতছাড়া করতে চান না তিনি৷ তাঁর এই মানসিক দৃঢ়তা ও ইচ্ছাশক্তি দেখে নেটিজেনরা ইতিমধ্যেই তাঁকে `সুপার দাদি` আখ্যা দিয়েছেন।