বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ পঞ্চায়েত নির্বাচনের আর বেশি দেরি নেই। আর এই পঞ্চায়েত নির্বাচনকে মাথায় রেখেই তৃণমূল সুপ্রিমোর জেলা সফর শুরু হতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে গত ২ দিন ধরে মুকুল রায়ের উপস্থিতি নতুন করে রাজনৈতিক মহলে শোরগোল ফেলে দিয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি ফের একবার জোড়াফুল শিবিরে সক্রিয় হচ্ছেন মুকুল রায়?
একুশের বিধানসভা নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের বিপুল জয়ের পরেই ছেলের সঙ্গে গেরুয়া শিবিরে ভাঙন ধরিয়ে ফের পুরনো দলেই ফিরে এসেছিলেন মুকুল রায়। সেদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেকের সঙ্গে একসাথে দেখা গিয়েছিল মুকুল রায়কে। এরপর তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে কম প্রশ্ন ওঠেনি। জল অনেক দূর গড়ায়। তাঁর বিধায়ক পদ নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। তিনি আদতে কোন দলের সঙ্গে আছেন, তা নিয়ে বারবার প্রশ্ন ওঠে। তবে, সেই ঘটনার পর থেকে তাঁকে আর সেভাবে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে দেখা যায়নি। তবে, এবার ফের তাঁর উপস্থিতি রাজনৈতিক অন্দরমহলে শোরগোল ফেলে দিয়েছে।
উল্লেখ্য, একসময় তাঁকে তৃণমূলের চাণক্য বলে অভিহিত করা হত। নেত্রীর ডান হাত ছিলেন এই মুকুল রায়। মুকুল রায়ের সেই রাজনৈতিক জ্ঞান সমৃদ্ধ ক্ষুরধার মস্তিস্ককেই কি তাহলে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে কাজে লাগাতে চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? গত কয়েদিনে মুকুল রায়ের রাজনৈতিক গতিবিধি অন্তত সেইদিকেই ইঙ্গিত করছে বলে অনুমান রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। যদিও এর সূত্রপাত হয়েছিল বেশ কয়েকদিন আগেই। বহুদিন পর এবারে ভাইফোঁটা উপলক্ষে ‘দিদি’র থেকে ফোঁটা নিতে যান মুকুল রায়। এরপর মঙ্গলবারই কৃষ্ণনগরে পৌঁছানোর পর থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডানে-বামে দেখা যাচ্ছে মুকুল রায়কেই।
মঙ্গলবার কৃষ্ণনগর সার্কিট হাউজে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কয়েকটি বৈঠকেও অংশগ্রহণ করেন মুকুল রায়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের অন্যান্য নেতারাও। এদিনের অনুষ্ঠান মঞ্চেও উপস্থিত ছিলেন তিনি। উল্লেখ্য, নদিয়ার বেশ কয়েকটি জায়গায় নিজেদের ক্ষমতা হারিয়েছে তৃণমূল। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে রানাঘাট-সহ বেশ কয়েকটি জায়গায় বাজিমাত করেছে পদ্ম শিবির। এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনে মুকুল রায়কে হাতিয়ার করেই সেই সমস্ত হারানো জায়গা ফিরে পেতে চাইছেন তৃণমূল সুপ্রিমো, এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
তাই রাজনইতিকভাবে নিস্ক্রিয় থাকলেও রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে গুরুত্বপূর্ণ মুখ হিসেবে উপস্থিত থাকছেন মুকুল রায়। এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক বলেন, ‘পঞ্চায়েতে তৃণমূল খুব ভালো ফল করবে। তৃণমূলেই আছি। নতুন করে কোনও দায়িত্ব আমাকে দেওয়া হয়নি।’
এদিকে, PAC কমিটি নিয়ে বিতর্কে বিধানসভায় দুই দফার শুনানি শেষে বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন মুকুল রায় দল পরিবর্তন করেননি, তিনি বিজেপিতেই রয়েছেন। সেই সিদ্ধান্তের পর সেভাবে প্রকাশ্যে তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে দেখা যায়নি মুকুল রায়কে। তবে, এই মুহূর্তে সব জল্পনা শেষে পঞ্চায়েতের আগে তৃণমূলে তাঁর সক্রিয়তা নিয়ে জোর জল্পনা। পরপর দুদিন তৃণমূল নেত্রীর সঙ্গে বৈঠকে ও সভায় মুকুলের উপস্থিতি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ ও ইঙ্গিতপূর্ণ বার্তাবহ বলে মনে করছে রাজনৈতিকমহল।