রাজ্যে ক্রমশই বাড়ছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গ মশার কামড়ে মারাত্মক হারে এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষজন। এমনকি মৃত্যুর খবরও শোনা যাচ্ছে৷ বলাই বাহুল্য, ডেঙ্গুর এই বাড়বাড়ন্ত রীতিমতো চিন্তায় ফেলে দিয়েছে রাজ্যের প্রশাসন থেকে রাজ্যবাসী, সকলকেই।
কথায় বলে, ডেঙ্গুর মশা দিনের বেলা কামড়ায়! দুপুর বেলার দিকেই এই উপদ্রব বাড়তে শুরু করে। বিজ্ঞানের ভাষায়, মশা কাউকে বেশি কামড়ায় আবার কাউকে কম। অনেকে আবার মজার ছলে বলে থাকেন, যাদের রক্ত মিষ্টি তাঁদের নাকি মশা বেশি কামড়ায়। যাই হোক এই মশার কামড় কিন্তু বেশ চিন্তার বিষয়। গবেষণা বলছে, যাদের শরীরে অত্যধিক ঘাম হয় তাদের মশা কামড়ানোর সুযোগ অনেক বেশি। কারণ মানুষের ঘামের সঙ্গে ল্যাকটিক অ্যাসিড এবং অ্যমেনিয়ার গন্ধ থাকে। মশা এই গন্ধে খুব আকৃষ্ট হয়। তাই মশার কামড় থেকে বাঁচতে নির্দিষ্ট কিছু উপায় অবলম্বন করতে হবে।
সাধারণত বাচ্চারা যারা বাইরে খেলতে যায় তাঁদের এইসময় ফুলহাতা জামা পড়ানো খুব দরকার। মস্কুইটো রেলেপেন্ট ক্রিম ব্যবহার করতে হয়। যাদের শরীরে অত্যধিক ঘাম হয় তাদের যেহেতু মশা কামড়ানোর সুযোগ বেশি থাকে, তাই ঘাম কমিয়ে ফেলতে হবে। সুগন্ধি ব্যবহার করলে ভাল। যাদের শরীর থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড বেশি নির্গত হয় তাঁদেরও মশা বেশি কামড়ায়। মশার মস্তিষ্কের সঙ্গে এক গভীর যোগ রয়েছে CO2 -র। এটি নাকি মশাকে আকৃষ্ট করে। তাই সাবধানে থাকতে হবে।
বাড়িতে বা বাইরে একেবারেই কালো রঙের পোশাক পড়বেন না। কালো বা নীল এই রঙের পোশাক মশাকে খুব আকৃষ্ট করে। এছাড়াও, বিকেলের আগে আগে বাগান কিংবা খোলা ছাদ এসব জায়গায় ঘুরবেন না। বাড়িয়ে জানলা দরজা বন্ধ রাখুন।
অন্তঃস্বত্তারা এইসময় একটু সাবধানে থাকবেন। তাঁর কারণ, শরীরে ইস্ট্রোজেন হরমোনের গন্ধ এই সময় মশাদের আকর্ষণ করে। যারা অ্যালকোহল বেশি খান, তাদের মশা কামড়ানোর সম্ভাবনা বেশি। শরীর গরম থাকলে ঘাম হবে, তাই ভাবনা চিন্তা করে এইসময় অ্যালকোহলের প্রতি নজর দিন।
মনে রাখবেন, মশার ধুপ শরীরের পক্ষে একেবারেই ভাল নয়। তাই বিকল্প হিসেবে উইন্ডো নেট অথবা রাতে শোয়ার সময় মশারী ব্যবহার করুন। এছাড়াও মশার হাত থেকে বাঁচতে বাড়ির এবং এলাকার সর্বত্র পরিষ্কার রাখতে হবে। জল জমতে দেওয়া চলবে না। নর্দমা পরিষ্কার রাখুন। আগাছা বোন জঙ্গল এগুলো কেটে ফেলা প্রয়োজন। শুধু তাই নয়, মশা মারার কীটনাশকও দিতে হবে।