বংনিউজ ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ জয় যত বেশি আসবে, ততোই বেশি নম্র হতে হবে। শুধু তাই নয়, আরও বেশি করে মানুষের উপর বিশ্বাস রাখতে হবে। সোমবার রাজ্যের চার পুরনিগমে জয় লাভের পর, শিলিগুড়ি যাওয়ার আগে ঠিক এমন বার্তাই দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিধানসভা ভোটের পর ফের বিরোধী শিবিরে বড় ধাক্কা। বিধাননগর, আসানসোল, চন্দননগর, শিলিগুড়ি-এই চার পুরনিগমের ভোটে বিরোধীরা প্রায় ধুয়েমুছে সাফ। উল্লেখ্য, এবার প্রথম শিলিগুড়ি পুরনিগমে বোর্ড গঠন করতে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেস।এদিকে, এই জয়ের পর, দলীয় কর্মী- সমর্থকদের আরও বেশি নম্র হওয়ার বার্তা দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন শিলিগুড়ি যাওয়ার আগে কলকাতা বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান যে, এবার তাঁর সরকারের প্রধান লক্ষ্য রাজ্যে শিল্পায়ন। একই সঙ্গে কর্মসংস্থান আরও বাড়ানোরও লক্ষ্য তৃণমূল সরকারের। সেকথাও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন তিনি বলেন যে, ‘আমি মানুষের কাছে কৃতজ্ঞ। বিধাননগর, শিলিগুড়ি, আসানসোল, চন্দননগর, কলকাতা কর্পোরেশনে মানুষ পাশে থেকেছেন। আগামিদিনে আরও ১০০র উপরে পুরসভার ভোট আছে। সাধারণ মানুষের পরিষেবা, বাংলার সবুজায়ন, শিল্প সমৃদ্ধ করা, মায়ের সম্মান, ছাত্র যুবদের সম্মান, শ্রমিক কৃষকের ভালবাসা, সর্বধর্ম সমন্বয়ের মধ্যে দিয়ে সংস্কৃতি সম্প্রীতির মধ্যে দিয়ে আমরা করে চলেছি এবং করে যাব। যত জিতব আরও তত বেশি নম্র হতে হবে। আরও বেশি করে মানুষের উপর বিশ্বাস রাখতে হবে। আগামিদিন আমার ডেস্টিনেশন ইন্ডাস্ট্রি। কাজের সুযোগ বাড়ানো।’
মুখ্যমন্ত্রী বলেন যে, ‘সাধারণ মানুষকে পরিষেবা দেবে পুরসভা। সরকারের হাতে অনেক কাজ রয়েছে। এদিকে, আগামিকাল থেকেই রাজ্যে শুরু হচ্ছে দুয়ার সরকার ক্যাম্প। রাজ্য সরকারের সব সামাজিক প্রকল্প যাতে ঠিকঠাক চলে তা সবাইকে দেখতে হবে। কোভিড চলে গেলেও সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। এই জয় পুরোপুরি মানুষকে উত্সর্গ করছি। আজ শিলিগুড়ি যাচ্ছি। কোচবিহারের আমার কর্মসূচি রয়েছে। ট্রাইবাল ডেভেলপমেন্ট কাউন্সিলের মিটিংও আছে। আজ পঞ্চানন বর্মার জন্মদিন। ওখানে পৌঁছে তাঁর মূর্তিতে মাল্যদান করব।’
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, শিলিগুড়ি পুর নিগমের মত ৪৭ টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৩৭ টি ওয়ার্ডে জয়ী হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। বাকিগুলির মধ্যে বিজেপির দখলে ৫ টি, বামেদের দখলে রয়েছে ৪ টি এবং একটি রয়েছে কংগ্রেসের দখলে। এই পুরনিগমে উল্লেখযোগ্য জয় হয়েছে তৃণমূল প্রার্থী গৌতম দেবের। তিনিই এই পুরনিগমের আগামী মেয়র। আজই কলকাতায় সেকথা পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
অন্যদিকে বিধাননগর পুরনিগমের ৪১টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৩৯টিতে জয়ী হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থীরা। একটি পেয়েছে কংগ্রেস এবং একটি নির্দল। তবে, এই পুরনিগমের মেয়র কে হবেন, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই জোর জল্পনা শুরু হয়েছে গেছে। কারণ একদিকে কৃষ্ণা চক্রবর্তী রয়েছেন। যিনি এর আগে মেয়র ছিলেন। পাশাপাশি রয়েছেন সব্যসাচী দত্তও। যিনি আগে তৃণমূলে ছিলেন। কিন্তু একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপিতে যান। তবে, নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর ফের তৃণমূলে ফিরে এসেছেন। উল্লেখ্য সব্যসাচী দত্ত আবার কৃষ্ণা চক্রবর্তী মেয়র হওয়ার আগে সে দায়িত্ব সামলেছেন। তাই শেষপর্যন্ত কে এই পুরনিগমের মেয়রের দায়িত্ব পান সেদিকেই তাকিয়ে সকলে।
আবার আসানসোলে ১০৬টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৯১টি ঘাসফুলের দখলে এসেছে। বিজেপির পেয়েছে মাত্র সাতটি। বাকি দু’টি বাম, তিনটি কংগ্রেস এবং তিনটি নির্দল। বাকি চন্দননগরের ৩৩টি ওয়ার্ডের মধ্যে ভোট হয়েছে ৩২টি ওয়ার্ডে। একটি ওয়ার্ডের প্রার্থী মারা যাওয়ার কারণে ভোট স্থগিত হয়ে যায়। তবে, চন্দননগরেও সবুজ আবির উড়েছে। ৩২টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৩১টিতে জয়ী হয়েছে তৃণমূল, একটি পেয়েছে বামেরা।