বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ আজ একুশে জুলাই। তৃণমূল কংগ্রেসের শহিদ দিবস। দলের কাছে এই দিনটা এক ঐতিহাসিক দিন। আজ, ২১ জুলাইয়ের শহিদ সমাবেশ কলকাতায় ধর্মতলার বুকে। করোনা অতিমারীর কারণে গত ২ বছর করা যায়নি ২১ জুলাইয়ের সমাবেশ। কিন্তু এবার ঐতিহাসিক সেই সমাবেশ হচ্ছে পুরনো জায়গা ধর্মতলাতেই। ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল জয় পেয়ে তৃতীয়বার বাংলার ক্ষমতা এসেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এই জয়ের পর প্রথম শহিদ দিবসের সমাবেশ। তাই উত্তেজনা তুঙ্গে। ইতিমধ্যেই একে একে অনেকই বক্তব্য রেখেছেন। কিছুক্ষণ আগেই বক্তব্য রাখলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যের জন্য অধীর আগ্রহে বৃষ্টি মাথায় নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন অগণিত মানুষ। কি বললেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়?
এদিন পৌনে ১২ টা নাগাদ সভাস্থলে পৌঁছান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কালো গাড়িতে তিনি সভাস্থলে পৌঁছন। প্রথমেই শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। দুপুর ১২ টা নাগাদ ওঠেন শহিদ স্মরণের মঞ্চে। এদিন অভিষেকের পরনে ছিল গাঢ় নিল রঙের পাঞ্জাবী, গলায় সাদা উত্তরীয়। মঞ্চে উঠেই মুষ্টিবদ্ধ হাত উঁচু করে উপস্থিত অসংখ্য জনতাকে অভিবাদন জানান। এরপরই বৃষ্টি মাথায় নিয়ে শুরু হয় তাঁর বক্তব্য।
এদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘বৃষ্টি আমাদের শুভ। প্রতিবার ২১ জুলাই বৃষ্টি হয়। বৃষ্টি যখনই হয়, বিরোধীরা ধরাশায়ী হয়।’ এদিন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ বলেন, ‘২০১৯ সালে যখন একুশের সভা করেছিলাম, আপনাদের মনে একটা আশঙ্কা ছিল, যে দলের প্রত্যাশিত ফল হবে কিনা, সেদিন জেদ নিয়ে মাঠে নেমেছিলাম’।
এদিন অভিষেকের বক্তব্যে একদিকে যেমন ছিল কেন্দ্রের প্রতি তীব্র আক্রমণ, তেমনই ছিল দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে গুরুত্বপূর্ণ কিছু বার্তা। অভিষেক বলেন, ‘একুশ শুধু আবেগ অনুভূতি নয়, একুশ কেবল জনসমর্থনের মাপকাঠি নয়, একুশ মানে চলার আশা, মানুষের প্রত্যাশা। একুশ হার না মানার মানসিকতা। তৃণমূল কংগ্রেস করে খাওয়ার জায়গা নয়, মানুষের জন্য ভাবতে হবে।’ তাঁর কথায়, ‘তৃণমূল করতে হলে দলের প্রতি অনুগত থেকে নিঃস্বার্থভাবে কাজ করতে হবে। হয় ঠিকাদারি করুন নয় তৃণমূল করুন।’
অভিষেক মোদী-শাহের প্রতি কটাক্ষের সুরে বলেন, ‘মোদী শাহের ঘোড়াকে বাংলায় বেঁধে রেখেছে মমতা। মায়ের সম্মান রক্ষার্থে যত দূর বুক চিতিয়ে যেতে হয় যাব। কী বলেছিল, আপকি বার ২০০ পার। মোদী ও শাহের অশ্বমেধের ঘোড়াকে বাংলায় বেঁধে রেখেছেন মমতা। তা চলতে পারছে না। মুখ থুবড়ে পড়ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যদি কেউ ভাবে, যে মুখ দেখিয়ে পঞ্চায়েতের আসন পাব, দাদার জলের বোতল বয়ে পঞ্চায়েতের আসন পাব, এর ওর কাছের লোক হিসাবে আসন পাব, আপনাকে মানুষ যদি সার্টিফিকেট দেয়, তাহলেই টিকিট পাবেন। আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি, মানুষের পাশে থাকলে, তবেই পঞ্চায়েতের আসন। নতুন তৃণমূলে ধান্দাবাজদের জায়গা নেই।’ তিনি এও স্পষ্ট করেছেন যে, ‘এই তৃণমূল নতুন তৃণমূল। এখানে কোনও মীরজাফর-গদ্দার-বেইমান নেই।’
অন্যদিকে, একশো দিনের টাকা নিয়েও তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক কেন্দ্রের তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘কেন্দ্রের কাছে হাত পাতব না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে, তৃণমূলকে সময় দিন। বাংলার নামেই বাংলার প্রকল্প হবে। বাংলা এখন মডেল হয়ে দাঁড়িয়েছে।’ পাশাপাশি তিনি এও দাবি করেছেন আজ একুশের সভামঞ্চ থেকে যে, ‘আগামী ২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচনেও বাংলায় তো তৃণমূল জিতবেই। বাংলার বাইরে থেকেও লোকসভা কেন্দ্রেও জিতবে। তা সে ত্রিপুরা হোক, মেঘালয় হোক। তৃণমূল জিতবে।’