বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে এবার স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিশ আনলেন দলত্যাগী চার বিধায়ক। তাঁদের অভিযোগ বিধানসভার ভিতরে বিধায়ককে হুমকি দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী।
এদিকে, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে আনা এই অভিযোগ ইতিমধ্যেই গ্রহণ করেছেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। নোটিশ গ্রহণের পাশাপাশি তিনি শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে ওঠা এই অভিযোগ খতিয়ে দেখার আশ্বাসও দিয়েছেন বলাই জানা গিয়েছে। এই বিষয়টি খতিয়ে দেখবে বিধানসভার প্রিভিলেজ কমিটি। আর রাজ্যের বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সত্যি প্রমাণিত হলে, তাঁকে বড় শাস্তির মুখে পড়তে হতে পারে। এমনটাই মনে করছে রাজ্যের রাজনৈতিক মহলের একটা বড় অংশ।
শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে রায়গঞ্জের বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী, কালিয়াগঞ্জের বিধায়ক সৌমেন রায়, বাগদার বিশ্বজিৎ দাস এবং বিষ্ণুপুরের বিধায়ক তন্ময় ঘোষ এই স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিশ এনেছেন। এরা চারজনেই বিধানসভা নির্বাচনের পরে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছে। যদিও রাজ্য বিধানসভায় এখনও তাঁরা খাতায়কলমে বিজেপির বিধায়ক।
জানা গিয়েছে, বুধবার বিধানসভা অধিবেশন চলাকালীন শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন দুই বিধায়ক। ঠিক কী ঘটেছিল সেদিন বিধানসভার ভিতরে? রায়গঞ্জের বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী জানিয়েছেন, ‘স্বরাষ্ট্র দফতরের বাজেট নিয়ে বুধবার অধিবেশনে আলোচনা আলোচনা চলছিল। এদিন শুভেন্দু অধিকারীর বক্তৃতা চলাকালীন আমি-সহ চার বিধায়ক তাঁর বিরোধীতা করি। এরপর তিনি অধিবেশন ওয়াকআউট করেন। আর বেরিয়ে যাওয়ার সময় আমায় হুমকি দিয়ে যান। শুভেন্দু বলেন, কালই আমার বাড়িতে আয়কর দফতর যাবে।’ অন্যদিকে, কালিয়াগঞ্জের বিধায়ক সৌমেন রায় আরও গুরুতর অভিযোগ করেন শুভেন্দুর বিরুদ্ধে। তিনি বলেন যে, ‘আমাকে গুলি করে মারার হুমকি দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা।’
দুই বিধায়কের এই অভিযোগ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন খোদ বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। অধ্যক্ষ বলেন, ‘অভিযোগ অত্যন্ত গুরুতর, সদস্যদের নিরাপত্তার পাশাপাশি ব্যবস্থা নিচ্ছি।’ এই ঘটনায় কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তাহলেই বুঝুন কে আয়কর দফতর চালায়, কেই বা চালায় সিবিআই। মুখ্যমন্ত্রীই ইঙ্গিত দেন শুভেন্দুর বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিস আনা উচিত।’ যদিও যার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ, সেই শুভেন্দু অধিকারী সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। উল্টে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘আগে তো ওরা প্রমাণ করুক আমি ওই কথা বলেছি!’ একই তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে বলেছেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী কান দিয়ে দেখেন, চোখ দিয়ে শোনেন৷’
তবে, মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যের পরেই চার বিধায়ক বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিস দিয়েছেন। বাগদার বিশ্বজিৎ দাস, রায়গঞ্জের কৃষ্ণ কল্যাণী, বিষ্ণুপুরের বিধায়ক তন্ময় ঘোষ ও কালিয়াগঞ্জের সৌমেন রায় ওই নোটিসে সাক্ষর করেছেন। এদিকে চার বিধায়কের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে রাজ্য সরকার। স্পিকার তাঁদের পাঠানো নোটিস গ্রহণও করেছেন বলেই খবর। আজ বিধানসভায় সেকথা জানিয়েও দিয়েছেন স্পিকার। অভিযোগ প্রমাণিত হলে, তাঁর পদও হারাতে পারেন শুভেন্দু।