বংনিউজ২৪×৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ ফ্ল্যাটে কোটি কোটি টাকা গচ্ছিত রাখায় শনিবার সকালেই আটক করা হয় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে। দিনভর ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদের পর শনিবার সন্ধ্যায় তাঁকে গ্রেফতার করে ইডি। এরপর শারীরিক পরীক্ষার উদ্দেশ্যে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় জোকা ইএসআই হাসপাতালে।
শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টা নাগাদ হরিদেবপুরের ফ্ল্যাট থেকে অর্পিতাকে বের করে আনেন ইডির আধিকারিকরা। কিন্তু ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে আসার সময় অর্পিতা বারবার চিৎকার করে একটাই কথা বলতে থাকেন, “আমি কোনও অন্যায় করিনি। আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। জোর করে আমার ফ্ল্যাটে ঢোকা হয়েছে। কী অভিযোগে গ্রেফতার করা হচ্ছে তার কোনও উত্তর দেননি ইডি আধিকারিকরা। আদালতে যাব।”
এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতিকান্ডে শুক্রবার আচমকাই রাজ্যের ১৩ টি জায়গায় হানা দেন ইডির আধিকারিকরা। অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের হরিদেবপুরের বিলাসবহুল ফ্ল্যাটেও তল্লাশি চালায় ইডি। তাঁর ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয় নগদ ২১ কোটিরও বেশি টাকা। মেলে ২০ টি মোবাইল ফোন, ৫৪ লক্ষ টাকার বৈদেশিক মুদ্রা এবং ৭৯ লক্ষ টাকার সোনা। এর পাশাপাশি ৮ টি সম্পত্তির দলিলও উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
কিন্তু কীভাবে তাঁর ফ্ল্যাটে এলো এত বিপুল পরিমাণ টাকা? যদিও এই প্রশ্নের কোনও উত্তর দিতে পারেননি তিনি। তবে ইডি সূত্রে খবর, লাগাতার জিজ্ঞাসাবাদে ওই বিপুল পরিমাণ টাকা লেনদেনের বিষয়ে বিস্ফোরক দাবি করেছেন অর্পিতা। তিনি জানিয়েছেন, প্রথমক্ষেত্রে এসএসসি চাকরি প্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা নিত দালালরা। পরবর্তীকালে সেই টাকা দালাল মারফত সরকারি কর্মচারী, আমলার হাত ঘুরে নেতা ও মন্ত্রীদের কাছে পৌঁছে যেত। অর্থাৎ পুরো প্রক্রিয়াটাই চলত একটি চেন সিস্টেমের মাধ্যমে।
এদিন অর্পিতার বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া বিপুল পরিমাণ টাকা বাজেয়াপ্ত করে ইডি। পরে সেই টাকা সংগ্রহ করার জন্য রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া তরফ থেকে পাঠানো হয় একটি ট্রাক। তাতে অন্ততপক্ষে ৪০-৪৫ টা ট্রাঙ্ক ছিল। কোনও ট্রাঙ্কে ২০০০ টাকার নোট আবার কোনও ট্রাঙ্কে ৫০০ টাকার নোট ভর্তি করে নিয়ে যাওয়া হয়। এর আগে বহু ক্ষেত্রে সিবিআই অথবা ইডি বিপুল পরিমাণ টাকা উদ্ধার করলেও এভাবে ট্রাঙ্কে করে টাকা নিয়ে যাওয়ার ঘটনা একপ্রকার নজিরবিহীন।