বংনিউজ২৪×৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ ওরফে কেকে’র অকাল প্রয়াণের পর ছ`দিন ইতিমধ্যেই অতিক্রান্ত। এখনও যেন কেউ বিশ্বাস করতে পারছেন না যে তিনি আর নেই। এবার প্রয়াত সঙ্গীতশিল্পীকে শ্রদ্ধা জানাতে অভিনব উদ্যোগ নিয়েছে উল্টোডাঙ্গার কবিরাজ বাগান পুজো কমিটি। জানা গিয়েছে, ৫৭ তম বর্ষে পুজোর থিম হিসেবে পুজোর মন্ডপে ফুটে উঠবে কেকে’র শেষ অনুষ্ঠানের দৃশ্য। নজরুল মঞ্চের আদলেই সেজে উঠবে মন্ডপ।
প্রতিবছর কবিরাজ বাগানের পুজোর থিম নিয়ে চিন্তাভাবনা করার দায়িত্বে থাকেন কলকাতা কর্পোরেশনের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের পৌর পিতা অমল চক্রবর্তী। তাঁর পরিকল্পনা মতোই সেজে ওঠে পুজো মণ্ডপ। গত ৩১ মার্চ, নজরুল মঞ্চে কেকে’র কনসার্ট দেখতে যাওয়ার আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু জরুরী কাজ পড়ে যাওয়ায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেন না। এটাই যে কেকে’র শেষ অনুষ্ঠান হবে তা কোনওদিন কল্পনাও করতে পারেননি অমল বাবু। শিল্পীকে শেষবার চোখের সামনে থেকে দেখার সুযোগ হাতছাড়া হওয়ার আক্ষেপ এখনও রয়েছে তাঁর। আর ঠিক সেই কারণেই পুজোর থিম হিসেবে কেকে’র শেষ অনুষ্ঠানে দৃশ্য ফুটিয়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
জানা গিয়েছে, ২০২২-এর দুর্গাপুজোয় কবিরাজ বাগানের মণ্ডপ তৈরি হবে নজরুল মঞ্চের আদলে। মন্ডপ জুড়ে সাজানো থাকবে কেকে’র একাধিক মূর্তি। সিলিকন দিয়ে তৈরি এই মূর্তিগুলি সৃষ্টি করবেন কুমোরটুলির শিল্পী মন্টি। ইতিমধ্যেই এই দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়েছে তাঁর হাতে। কলকাতায় আসার আগে কেকে’র পোস্ট করা সেলফি থেকে শুরু করে রবীন্দ্রসদনে গান স্যালুটে তাঁকে বিদায় জানানোর প্রতিটি মুহূর্তের ছোঁয়া থাকবে মন্ডপে। এমনকি যে ২০ টি গান তিনি নজরুল মঞ্চে গেয়েছিলেন, তা সবসময় বাজতে থাকবে মণ্ডপে।
প্রসঙ্গত, গত ৩০ ও ৩১ মে, পরপর দু’দিন কলকাতায় অনুষ্ঠান ছিল কেকে’র।কলকাতার বুকে আয়োজিত কেকে’র কনসার্ট নিয়ে ভক্তদের মাঝে উত্তেজনার কমতি ছিল না। কত মানুষ যে কেকে-কে ভালোবাসে, তাঁর গান শুনতে পছন্দ করে তা নজরুল মঞ্চে ভক্তদের উপচে পড়া ভিড়ই প্রমাণ করেছে। ৩১ মে নজরুল মঞ্চে অত্যন্ত পেশাদারিত্বের সঙ্গে একের পর এক গান গেয়ে যান কেকে। এক মুহূর্তের জন্যও বোঝা যায়নি তিনি অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন। কিন্তু কিছু ঘণ্টার মধ্যেই আসে সেই চরম দুঃসংবাদ।
জানা যায়, শো চলাকালীনই অসুস্থবোধ করছিলেন কেকে। মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা আগেও স্ত্রীকে ফোন করে জানান, তাঁর কাঁধ এবং হাতে অসম্ভব ব্যথা করছে। সেদিন মঞ্চে থাকাকালীন স্পটলাইট বন্ধ করতে অনুরোধ করেন তিনি। কিছুক্ষণ ছাড়াছাড়াই ঘাম মোছেন, জল খান। এরপর অনুষ্ঠান শেষে ফিরে যান কলকাতার একটি পাঁচতারা হোটেলে। সেখানেই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। কিছুক্ষণের মধ্যে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।