বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ অবশেষে জল্পনাই সত্যি হল। এসএসসি দুর্নীতি মামলায় ইডির হাতে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার হয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর গ্রেফতারির পর থেকেই বিরোধীরা দাবি করে আসছিল তাঁকে মন্ত্রিত্ব থেকে সরানোর জন্য। এদিকে, পার্থ ঘনিষ্ঠ অর্পিতার টালিগঞ্জ এবং বেলঘরিয়া দুই জায়গার ফ্ল্যাট থেকে প্রায় ৫০ কোটি টাকা উদ্ধারের পর সেই দাবি আরও জোরালো হয়। তৃণমূলের অন্দরেও পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অপসারণের দাবি জোরালো হয়। এদিকে, ইডি-র সূত্রে খবর, টানা জেরায় ভেঙে পড়ে অর্পিতা জানিয়েছেন যে, এই সব টাকাই নাকি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। তাঁর লোকেরাই অর্পিতার ফ্ল্যাটে টাকা রেখে যেত। তিনি এও জানিয়েছেন যে, যে ঘোরে টাকা রাখা থাকত, সেই ঘরে তাঁর প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল।
এদিকে, জল্পনা ছিল আজই মন্ত্রিসভার বৈঠকে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে। বাস্তবে হলও তেমনটাই। চারটি দফতরের মন্ত্রিত্ব থেকে সরানো হল তাঁকে। জানা গিয়েছে, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পরিবর্তে সেই চারটি দফতরের মন্ত্রিত্ব সামলাবেন মুখ্যমন্ত্রী নিজেই। এই সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে নবান্নের পক্ষ থেকে লিখিত বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। এদিকে, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মন্ত্রিত্ব থেকে অপসারণ প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, ‘আমাদের দল কঠোর। কষ্ট করে রাজনীতি করতে হয়। আমরা পার্থ চ্যাটার্জিকে মন্ত্রিত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছি।’
জানা গিয়েছে, শিল্প-বাণিজ্য, তথ্যপ্রযুক্তি, পরিষদীয় এই চার দফতরের মন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে সরিয়েছে রাজ্য সরকার। এক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে মুখ্যসচিব জানিয়েছেন, এই সব দফতরগুলি এখন থেকে মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্বেই থাকবে।
প্রসঙ্গত, এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রথম থেকেই নাম জড়িয়েছিল পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। এই মামলায় একাধিকবার তাঁকে তলব করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই ও ইডি। চলতি মাসের ২২ জুলাই পার্থর নাকতলার বাড়িতে পৌঁছে ইডি অধিকারিকরা টানা প্রায় ২৭ ঘণ্টা জেরার পর ২৩ তারিখ সকালে গ্রেফতার করা হয় পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। পাশাপাশি শুক্রবার তল্লাশি চালানো হয় মোট ১৩ টি জায়গায়। এর মধ্যে ছিল অর্পিতার টালিগঞ্জের ফ্ল্যাটও। শনিবার তাঁকেও গ্রেফতার করা হয়। পার্থ ঘনিষ্ঠ অর্পিতার টালিগঞ্জের ফ্ল্যাট থেকে সেদিন প্রায় ২২ কোটি উদ্ধার হয়েছিল। এরপর গতকাল বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয় প্রায় ২৮ কোটি টাকা। হাইকোর্টের নির্দেশে এই মুহূর্তে পার্থ-অর্পিতা উভয়কেই ১০ দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে রেখেছে ইডি।
এরপরই পার্থকে নিয়ে আলোচনা শুরু হয় দলের মধ্যে। পরিষদীয় মন্ত্রী হিসেবে পার্থবাবুর গাড়ি ছিল বিধানসভায় যাতায়াতের জন্য। মঙ্গলবার রাতে বিধানসভায় তাঁর গাড়ি জমা দেওয়া হয়। তখনই তাঁকে মন্ত্রিত্ব থেকে সরানোর জল্পনা শুরু হয়। সেই জল্পনাই সত্যি হল। এবার কি দলীয় পদ থেকেও সরানো হবে? এই প্রশ্নের উত্তরের অপেক্ষায় এখন বাংলা।