বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ বিধানসভার পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি বা পিএসি-র চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দিলেন মুকুল রায়। এদিন ইমেলে পদত্যাগপত্র পাঠান বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে। গত শুক্রবারই বিধানসভার অধিবেশন শেষ হওয়ার পর, অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় ৪১ টি কমিটির মেয়াদ আরও এক বছর বাড়িয়ে দেন। কাজেই অধ্যক্ষের এই পদক্ষেপের পরে পিএসি-র চেয়ারম্যান পদে মুকুলেরও মেয়াদ এক বছর বৃদ্ধি পায়। কিন্তু এর মধ্যেই সোমবার পদত্যাগের ইচ্ছাপ্রকাশ করে বিধানসভার অধ্যক্ষকে ইমেল করেন মুকুল রায়।
এদিকে, বিধানসভা সচিবালয় সূত্রের খবর, শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে তিনি ইস্তফা দিয়েছেন। যদিও স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘চিঠি আমার হাতে আসেনি। হয়তো সচিবালয়ে দিয়েছেন। আমি চিঠি পেলে খতিয়ে দেখে, তবেই বলব সেটা গ্রহণ করা হবে কিনা।’ উল্লেখ্য, ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির টিকিটে কৃষ্ণনগর উত্তর কেন্দ্রে জয়লাভ করে বিধায়ক হন মুকুল রায়। একুশের নির্বাচনেই তৃতীয়বার রাজ্যের ক্ষমতায় আসে তৃণমূল কংগ্রেস। এদিকে, বিজেপি বিধায়ক হওয়ার পর, নতুন করে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে সখ্যতা তৈরি হয় মুকুল রায়ের।
এখানেই শেষ নয়, সখ্যতা এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে, পুত্র শুভ্রাংশু রায় এবং তিনি নিজে ফের তৃণমূলে ফেরেন। পুরনো দলে তাঁদের স্বাগত জানিয়েছিলেন খোদ তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেদিন মুকুল রায়কে উত্তরীয় পরিয়ে স্বাগত জানাতে দেখা গিয়েছিল তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
এরপর তাঁকে পিএসি-র চেয়ারম্যান করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উল্লেখ্য, মুকুলকে এই পদের চেয়ারম্যান করা নিয়ে আপত্তি তুলেছিল বিজেপি। তবে শিবির বদলের পরও মুকুল রায় ছিলেন পিএসির চেয়ারম্যান। এই বিষয়কে কেন্দ্র করে বঙ্গ রাজনীতিতে নানা তর্ক, সমালোচনা শুরু হয়। মুকুল রায় কোন রাজনৈতিক দলের, তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। রাজ্য রাজনীতিতে এতদিন ধরে, সাধারণত এই পদটি পেয়েছে বিরোধী দলের বিধায়ক। এদিকে, তৃণমূলের যোগ দেওয়ার পরেও, বিজেপির বিধায়ক পদ ছেড়েছিলেন না মুকুল রায়। এই পরিস্থিতিতে মুকুলের বিধায়ক পদ খারিজের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরেই সরব রাজ্য বিজেপি। তাঁর বিধায়ক পদ খারিজের দাবিতে কখনও স্পিকার, কখনও আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে বিজেপি।
অন্যদিকে, আদালতের নির্দেশে ইতিমধ্যেই দু’বার স্পিকার জানিয়েছেন, মুকুল এখনও বিজেপিতেই রয়েছেন। তাই তিনি বিজেপির বিধায়ক। তৃণমূলে যোগ দেওয়ার কোনও প্রমাণ নেই। এর মধ্যেই এবার পিএসি’র চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দিলেন তিনি।