বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ইতিমধ্যেই গ্রেফতার হয়েছেন মানিক ভট্টাচার্য। তাঁর গ্রেফতারির সঙ্গে সঙ্গে নিয়োগ দুর্নীতির শিকড়ে পৌঁছাতে চাইছে ইডি। জানা গিয়েছে, গ্রেফতারের পরে আজ তাঁকে আদালতে পেশ করা হয়। সোমবার রাতে জিজ্ঞাসাবাদের পরে মানিক ভট্টাচার্যকে গ্রেফতার করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
এরপর মঙ্গলবার আদালতে পেশ করা হয় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যকে। এদিন আদালতে মানিককে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানান এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। বিচারক তাঁকে ১৪ দিনের ইডি হেফাজতের নির্দেশ দেন। রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তদন্তে যোগ্য প্রার্থীদের বঞ্চিত করে অযোগ্যদের চাকরি দেওয়া এবং সেই সংক্রান্ত আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত বেশ কিছু তথ্য-প্রমাণ হাতে এসেছে বলেই আদালতে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থা ইডি। যদিও এই তদন্ত এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। সেই কারণেই মানিক ভট্টাচার্যকে হেফাজতে নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে বলেই আদালতে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
মানিক ভট্টাচার্যকে এদিন নিজেদের হেফাজতে নিতে চেয়ে আদালতে চাঞ্চল্যকর দাবি করেছে ইডি। ইডি দাবি করেছে যে, পাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতির ছেলের নামে ব্যাঙ্কে ২ কোটি ৬৮ লাখ টাকা রয়েছে বলেই তাঁরা জানতে পেরেছেন। মানিকের কয়েকজন আত্মীয়ের নামেও অ্যাকাউন্টের হদিশ মিলেছে বলেই দাবি করেছে ইডি। এখানেই শেষ নয়, কেন্দ্রীয় সংস্থার পক্ষ থেকে এও দাবি করা হয়েছে যে, যারা টাকা ঘুষ দিয়েছিল, শুধুমাত্র তাঁদেরই চাকরি দেওয়া হয়েছিল। পাশাপাশি ইডি-র তরফে আদালতে দাবি করা হয়েছে যে, মানিক ভট্টাচার্যের কম্পিউটারে ৬১ জনের নাম পাওয়া গিয়েছে।
উল্লেখ্য, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ্যে আসছে। ইডি সূত্রে খবর, মানিকের মোবাইল থেকে যে কথোপকথন উদ্ধার করা হয়েছে, তাতে রয়েছে দুই রহস্যজনক নাম পাওয়া গিয়েছে। বলা বহাল সংক্ষিপ্ত নাম, আর তা হল DD আর RK।
এদিকে, মানিককে গ্রেফতার করার পর, তাঁর মোবাইল বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি। সূত্রের খবর, সেই মোবাইল ঘেঁটে বের করা হয়েছে হোয়াটসঅ্যাপের কথোপকথন। সেই কথোপকথনে RK নামের কারও সঙ্গে কথা বলেছেন মানিক। তাঁকে তিনি বলেছেন, ‘তালিকা অনুমোদিত হয়েছে, অনুমোদন করেছে DD।’ কিন্তু কে এই রহস্যময় ডিডি? তিনি কেনই বা তালিকা অনুমোদন করলেন? সেটাই এই মুহূর্তে বড় প্রশ্ন।
উল্লেখ্য, এর আগেই নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে ভয়ঙ্কর নানা অভিযোগ উঠেছে মানিক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে। টেটে সাদা খাতা দেওয়া সত্ত্বেও চাকরি দেওয়া হয়েছে অযোগ্যদের। সঠিক নিয়ম ও পদ্ধতি মেনে টেটের মেরিট লিস্ট বেরোয়নি বলেও অভিযোগ। প্রাইমারি বোর্ড প্রশ্নে ভুল থাকার পরেও সকলের নম্বর বৃদ্ধি করা হয়নি। এইসব অভিযোগের ভিত্তিতেই মানিক ভট্টাচার্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পাশাপাশি স্বজনপোষণের অভিযোগ উঠেছে। যে নিয়োগের তালিকা নিয়ে মূল অভিযোগ, সেই তালিকা নিয়েই কি হোয়াটসঅ্যাপে মানিকের সঙ্গে কথা হচ্ছিল? মানিককে জেরা করে এবার সেটাই জানতে চায় ইডি।
মানিক ভট্টাচার্যকে গ্রেফতারের পর এদিন তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় জোকা ESI হাসপাতালে। এরপরে আদালতে নিয়ে আসা হয় তাঁকে। এদিকে, আদালত চত্বরে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি পৌঁছতেই গোল বাধে। ‘চোর চোর’ বলে স্লোগান উঠতে শুরু করে। পাশাপাশি আদালত চত্বরে জুতো হাতে বিক্ষোভ দেখান বিজেপির মহিলা কর্মীরা।