বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতার হওয়ার পর কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি-র আইনজীবী দাবি করেছিলেন যে, পেঁয়াজের খসার মতোই পরতে পরতে দুর্নীতি সামনে আসবে ক্রমশ। ইতিমধ্যেই সেই দুর্নীতি মামলায় আরও কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সেই মামলায় সিবিআই-এর রিপোর্ট দেখে এবার বিস্ময় এবং ক্ষোভ প্রকাশ করলেন কলকাতা হাইকোর্টের আরও এক বিচারপতি। চাকরির নিয়োগ দুর্নীতির শিকড় উপড়ে ফেলতে এবার বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের পাশে দাঁড়ালেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুও।
বৃহস্পতিবার স্কুল সার্ভিস কমিশনের গ্রুপ ডি সংক্রান্ত একটি মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর এজলাসে রিপোর্ট পেশ করেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই। সেই রিপোর্ট দেখে তিনি রীতিমতো স্তম্ভিত। এদিন তিনি বলেন, ‘বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করছেন, এবার আমিও তাঁর সঙ্গে সামিল হচ্ছি।’
বৃহস্পতিবার রাজ্যের স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় সিবিআই-এর একটি রিপোর্টের বিশদ বিবরণ দেখে বিস্ময় ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিচারপতি বসু। তিনি বলেন, ‘এটা তো তো ভয়ঙ্কর একটি পরিসংখ্যান। একের পর এক যা বেরোচ্ছে তা তো ভয়ঙ্কর পরিসংখ্যান। এটা তো হিমশৈলের চূড়ামাত্র।’ রাজ্যের সরকারি স্কুলগুলিতে টাকার বিনিময়ে নিয়োগ হচ্ছে বলেই অভিযোগ। ইতিমধ্যেই বেআইনিভাবে চাকরি পাওয়া অনেকের চাকরি গিয়েছে। তবে, এখনও যারা বেআইনিভাবে চাকরিতে বহাল রয়েছেন, তাঁদেরও চাকরি যাবে বলে গতকালই হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।
আর এবার টাকার বিনিময়ে চাকরি পাওয়ার বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুও। তিনি এদিন বলেন, ‘শিক্ষক এঁরা? এঁরা সমাজ গড়বেন? এর শেষ কোথায় জানি না। এর শেষ কোথায় জানি না। আগামী সময়ে ছাত্ররা প্রশ্ন করবে, আপনার কী যোগ্যতা? আদালত সব জঞ্জালকে আগে সরাবে। গোটা প্যানেলটাই তো খারিজ করা উচিত। দুর্নীতি করে যাঁরা চাকরি পেয়েছেন, ফল তাদের ভুগতেই হবে। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের পাশাপাশি দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমিও সামিল হচ্ছি।’
কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর কথায়, এভাবে চাকরি পাওয়ায় গোটা সমাজের বিশ্বাসকে নষ্ট করা হয়েছে। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের কালের হুঁশিয়ারির পর, আজ বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর এই মন্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। তাঁর মতে, যাঁরা দোষী তাঁদের প্রত্যেকের চাকরি যাওয়া উচিত। তিনি আরও বলেছেন যে, ‘হতে পারে কেউ মিষ্টি বিতরণ করেছেন। সেটা যাঁরা খেয়েছে, তাঁদের বের করতে হবে। আমরা সমাজকে কলুষতামুক্ত করার যুদ্ধে সামিল।’ এই মামলায় সিবিআইকে পার্টি করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।