বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ খোদ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে তাঁর মতো করে কাজ করে যাওয়ার বার্তা দিয়েছেন বলেই জানালেন, কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশেই শাসকদলের একাধিক নেতার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তে নেমেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এর জেরে প্রধান বিচারপতির কাছে তাঁর নামে অভিযোগের চিঠিও গিয়েছে।
এই প্রসঙ্গে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় নিজেই বলেছেন যে, ‘আমার বিরুদ্ধে কয়েক জন আইনজীবী প্রধান বিচারপতিকে চিঠি দিয়েছেন। সেই চিঠিতে লেখা হয়েছে, একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে আমি কাজ করছি। অথচ চিঠিতে কেউ লিখল না, আমার জন্য কত দুর্নীতিগ্রস্ত মানুষ জেলে রয়েছেন, গ্রেফতার হয়েছেন।’
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় আরও জানিয়েছেন যে, আইনজীবীরা না বললেও, খোদ মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে কাজে উৎসাহ দিয়েছেন বলেই জানিয়েছেন। মঙ্গলবার একটি মামলার শুনানি চলাকালীন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘নিউ সেক্রেটারিয়েটের অনুষ্ঠানের দিন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সামনাসামনি হয়েছিলাম। আরও বিচারপতিরাও ছিলেন। সামনে আসাতে আমি হাত জোড় করে বললাম, আমি অভিজিৎ গাঙ্গুলি। উনি বললেন, ও! আপনিই অনেক অনেক কিছু করছেন। আপনি আপনার মত কাজ করুন। আমি বলি, আমি যদি কিছু কথা বলতে পারতাম। উনি বললেন, এখন তো সুযোগ নেই। আপনি ভালো করছেন, আপনি আপনার মতো চালিয়ে যান। এরপরেও দালালরা সব বকে যাচ্ছে। ব্রিফ লেস সব। একটা মামলা নিয়ে আসতে বলুন।’
এদিনও বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর বিরুদ্ধে করা অভিযোগ নিয়ে বার বার নিজের ক্ষোভের কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আড়াই বছরে ৯৫টি রায় দিয়েছি। তার মধ্যে দেড় বছর কোর্ট বন্ধ ছিল। অনেক ঘরে অর্ডার পেন্ডিং থাকে। খোঁজ নিন। ওইদিন সেদিন ভিড়ের পিছন দিকে পেপারওয়েট নিয়ে দাঁড়িয়েছিল। এই কারণে আমি সেদিন ভিডিও করতে বলেছি। ওদিকে জ্যাঠামশাই এসে বলে গেলেন, আর সেটাই শেষ কথা হয়ে গেল!’
বিভচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় স্পষ্ট বলেন, ‘মামলা কোনটা আগে শুনব না পরে শুনব, সেটা বাছাইয়ের এক্তিয়ার আমার আছে। আর সেটা আমি করতে পারি।’ পাশাপাশি তিনি বলেন, ‘আমি না কি একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে মামলা নিয়ে মাতামাতি করি।’ তাঁর কথায়, `আমি দুর্নীতি পেলে সেটা বন্ধ করার চেষ্টা করি।’
প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহেই কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবীদের একাংশ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির প্রকাশ শ্রীবাস্তবকে ওই চিঠি লেখেন। সে ঠিঠির সত্যতা অবশ্য বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল যাচাই করে দেখেনি। তবে, উক্ত চিঠি প্রসঙ্গে সোমবার নিজেই মন্তব্য করেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। উল্লেখ্য, কয়েক দিন আগে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে দাঁড়িয়ে কিছু বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন আইনজীবী অরুণাভ ঘোষ। যা নিয়ে বিবাদ তৈরি হয় অরুণাভ এবং বিচারপতির মধ্যে। তবে, তর্কাতর্কির শেষে অরুণাভকে বিচারপতির উদ্দেশে বলতে শোনা যায়, ‘আপনি এক জন সৎ মানুষ।’