বংনিউজ২৪×৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ ফের মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের সাক্ষী শহর কলকাতা। এক বৃদ্ধার গলায় ছুরির কোপ, এরপর গলার নলি কেটে খুনের অভিযোগ উঠল ১৩ বছরের নাবালকের বিরুদ্ধে। এই ভয়ানক খুনের ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বাগুইআটি চত্বরে। ঘটনায় গ্রেফতার অভিযুক্ত নাবালক।
জানা গিয়েছে, বুধবার সন্ধ্যায় ঘটেছে বাগুইআটির অর্জুনপুর এলাকায়। মৃতার নাম সরস্বতী সরকার (৬০)। সূত্রের খবর, অভিযুক্ত নবালক নাতির বন্ধু। তার বাড়ি সরস্বতী দেবীর বাড়ির ঠিক পাশেই। প্রায়শই বৃদ্ধার বাড়িতে যাতায়াত ছিল অভিযুক্তর। বৃদ্ধাকে দিদা বলে ডাকত সে। তাকে দিয়ে ওই বৃদ্ধা বাড়ির অধিকাংশ কাজই করাতেন বলে জানা গিয়েছে। এদিনও একটি কাজ করে দিতে বলেছিলেন তিনি। কিন্তু কী এমন হল যার জন্য ‘দিদা’কে খুন করার মত পদক্ষেপ নিতে হল নাতিকে?
প্রাথমিক তদন্তে জানা যাচ্ছে, ঘটনার ঠিক আগেই মুড়ি খেতে খেতে বৃদ্ধার সঙ্গে টিভি দেখছিল ওই নাবালক। তার পকেটে ছিল আম ও একটি ছুরি। ঠিক সেই সময় তাকে একটি কাজ করতে বলায় সে সেটি করতে অসম্মত হয়। এর জেরে শুরু হয় পারস্পরিক বচসা। অভিযুক্তর বয়ান অনুযায়ী, একটি ধারালো ছুরি বৃদ্ধার গলায় ঠেকাতেই তাঁর গলার নলি কেটে যায়। এরপরই ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় নাবালক।
এই মর্মান্তিক ঘটনার সেভাবে কোনও প্রত্যক্ষদর্শী নেই বললেই চলে। তবে প্রতিবেশী এক মহিলার বয়ানে উঠে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। প্রতিবেশী মহিলা জানিয়েছেন, হঠাৎই এক গোঙানির শব্দ তাঁর কানে আসে। এরপর বারান্দায় বেরিয়ে বৃদ্ধার বাড়ির দিকে তাকাতেই দেখেন গ্রিল ধরে দাঁড়িয়ে আছেন ‘মাসিমা’। তখনও তিনি বুঝতে পারেননি যে তাঁর গলা কেটে গিয়েছে। মহিলা বেঁধেছিলেন কোন কারনে হয়ত অসুস্থ বোধ করছেন বৃদ্ধা। এরপরই আসল ঘটনার কথা সামনে আসে।
প্রতিবেশী আরও জানান, কথা বলতে বলতে হঠাৎই বৃদ্ধা বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করতে থাকেন। তখনই তিনি খেয়াল করেন বৃদ্ধার সারা শরীর রক্তে ভেসে যাচ্ছে। অপেক্ষা না করে তড়িঘড়ি বাকি প্রতিবেশীদের জড়ো করেন তিনি। তখনও সরস্বতী দেবী কথা বলার মত অবস্থায় ছিলেন। হাসপাতালে যাওয়ার আগে পাড়ার ছেলেদের সমস্ত কথাই বলে যান। এমনকি প্রতিবেশী ওই নাবালকের নামও জানিয়ে যান তিনি। এরপর আরজিকর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
ইতিমধ্যেই ঘটনায় অভিযুক্ত নাবালককে গ্রেফতার করেছে বাগুইআটি থানার পুলিশ। চলছে জিজ্ঞাসাবাদ। জিজ্ঞাসাবাদে এটুকু স্পষ্ট যে ওই নাবালক বৃদ্ধার গলায় ছুরির কোপ মেরে নলি কেটে দিয়েছে। তবে এই মর্মান্তিক কাজ করার পেছনে ঠিক কী কারণ রয়েছে তা এখনও স্পষ্ট নয়। সবটাই আশঙ্কা করা হচ্ছে। সেটা জানতেই চলছে তদন্ত। জানা গিয়েছে, বিধাননগর জুভেনাইল আদালতে তোলা হবে নাবালককে।