বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ রাজ্যে এসএসসি নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে ইতিমধ্যেই ইডি-র হাতে গ্রেফতার পার্থ চট্টোপাধ্যায়। রাজ্যের মন্ত্রীর গ্রেফতারিতে স্বাভাবিকভাবেই চরম অস্বস্তিতে পড়েছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। সূত্রের খবর, এর মধ্যেই দলের অন্দরে মহাসচিবের পদত্যাগের দাবি উঠছে। দীর্ঘ ২৭ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর এদিন সকাল ১০ টা নাগাদ গ্রেফতার করা হয় রাজ্যের শিল্পমন্ত্রীকে। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে এই মুহূর্তে ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হয়েছে। সূত্রের খবর তাঁকে নিজেদের হেফাজতে চাইতে পারে ইডি।
আজ ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলার আগে জোকার ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য। এরপর সেখান থেকে বেরিয়ে তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। গ্রেফতারির পর হাসপাতাল থেকে বেরিয়েই সাংবাদিকদের সামনে এই প্রথম মুখ খোলেন তিনি। যদিও ইডি-এ গ্রেফতারি নিয়ে কোনও কথা বলেননি তিনি। তাঁকে সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে প্রশ্ন করা হয় যে, তিনি দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন কিনা? ওই প্রশ্নের জবাবে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘যোগাযোগ করেছিলাম। পাইনি।’
কেন্দ্রীয় সংস্থাকে আক্রমণ করলেও, দলের সঙ্গে এই ঘটনার কোনও সম্পর্ক নেই বলে আগেই তৃণমূল নেতৃত্বে পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানানো হয়েছে। এদিকে, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতারির পর তাঁর পদত্যাগের জল্পনা যেমন বেড়েছে দলের অন্দরে তেমনই তাঁর গ্রেফতারির পর মন্ত্রিসভায় রদবদলের সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছে। শনিবার সকালে বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানান যে, ‘গ্রেফতারির খবর জানার পর মন্ত্রিসভায় রদবদল সংক্রান্ত পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
শুক্রবার সকালেই মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাকতলার বাড়িতে হানা দেয় ইডি। শুধু পার্থ একা নয়, মোট ১৩ টি জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালায় ইডি-র আধিকারিকরা। এর মধ্যে পার্থ ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাটেও তল্লাশি চালানো হয়। অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকেই কয়েক কোটি টাকা, ৫০ লক্ষ টাকার সোনার গয়না, বৈদেশিক মুদ্রা উদ্ধারের পাশাপাশি এবং আরও বেশ কিছু সম্পত্তির হদিশ পায় ইডি। সূত্রের খবর, তাঁর বাড়ি থেকে উচ্চশিক্ষা দপ্তরের খামও পাওয়া গিয়েছে। এছাড়াও ওই বাড়ি থেকে ২০টি মোবাইল ফোনও মিলেছে বলে ইডির দাবি। যে পরিমাণ নগদ পাওয়া গিয়েছে, তা ব্যাঙ্ককর্মীদের দিয়ে যন্ত্রের সাহায্যে গোনা হয়। ইডি সূত্রের খবর, ওই টাকা স্কুলে বেআইনি নিয়োগে নেওয়া ঘুষের অংশ বলেই প্রাথমিকভাবে মনে করছেন তাঁরা।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার থেকে দীর্ঘক্ষণ রাজ্যের বর্তমান শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে তল্লাশি এবং জিজ্ঞাসাবাদের পর শনিবার সকালে তাঁকে গ্রেফতার করেন ইডি-র আধিকারিকরা। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮ টা নাগাদ পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাকতলার বাড়িতে আসেন ইডি-র আধিকারিকরা। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় আর্থিক লেনদেন নিয়ে অভিযান চালায় ইডি। এরপর পার্থর নাকতলার বাড়িতে রাতভর জিজ্ঞাসাবাদের পর শনিবার মন্ত্রীকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার করা হয়েছে অর্পিতাকেও। ইডি-র তরফে অভিযোগ, টাকার উৎস নিয়ে বারবার বয়ান বদলেছেন মন্ত্রী। পাশাপাশি তাঁর বিরুদ্ধে তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগও রয়েছে। এরপরই শিল্পমন্ত্রীর গ্রেফতারির সম্ভবনা জোরালো হয়। অন্যদিকে, তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগ রয়েছে অর্পিতার বিরুদ্ধেও।