বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ ক্রমশ আতঙ্ক বাড়াচ্ছে ডেঙ্গু। বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যাও। এবার ডেঙ্গুর গ্রাসে পরপর দুই শিশু। একই দিনে ডেঙ্গু কেড়ে নিল দুটি শিশুর প্রাণ। বিধাননগরে মৃত্যু হল ৮ বছরের শিশুকন্যা ঋত্বিকা সাউয়ের। বিধাননগর পুরনিগমের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব নারায়ণতলার বাসিন্দা ঋত্বিকা বেশ কিছুদিন ধরেই জ্বরে আক্রান্ত ছিল বলেই জানা গিয়েছে।
পরিবার সূত্রে খবর, মঙ্গলবার তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় বিসি রায় শিশু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ঋত্বিকাকে। রাতেই মৃত্যু হয় ঋত্বিকার। একইদিনে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৯ বছরের শিশু জিসান রাজারও। তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র জিসান হাওড়া পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের পিলখানা সেকেন্ড বাই লেনের বাসিন্দা। গত ৩ নভেম্বর জিসানের জ্বর হয়। রক্ত পরীক্ষা করার পর জানা যায় যে, সে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত। এরপরই তাকে কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি করা হয়। কিন্তু দ্রুত জিসানের প্লেটলেট কমতে শুরু করে। অবস্থার দ্রুত অবনতি হওয়ার পর, বুধবার সকালেই জিসানের মৃত্যু হয়।
ডেঙ্গুর বাড়বাড়ন্ত এবং শিশু মৃত্যুর ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই আতঙ্কিত মানুষ। উল্লেখ্য, গত সেপ্টেম্বরে বিধাননগর পুর এলাকাতে ডেঙ্গুতে মৃত্যুর হয় ৩৭ বছরের এক মহিলার। মৃত মহিলার নাম সঙ্গীতা দেবী। তিনি বিধাননগর পুরনিগমের পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত দশদ্রোন এলাকার বাসিন্দা। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার পরে ভিআইপি রোডের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। এদিকে, ডেঙ্গুতে একের পর এক মৃত্যুর ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে পুরসভার ভূমিকা নিয়েও।
এদিকে, এদিন হাওড়ার শিবপুরেও এক মহিলার ডেঙ্গুতে মৃত্যুর খবর মিলেছে। জানা গিয়েছে, ৫০ বছরের রেহানা বেগম জ্বরে আক্রান্ত হন এবং গত ২২ অক্টোবর থেকে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। এরপর থেকেই তাঁর প্লেটলেট কমতে থাকে। এমনিতেই তাঁর আগে থেকেই কিডনির সমস্যা ছিল। তাঁর সঙ্গে আবার ডেঙ্গুতেও আক্রান্ত হন। এর জেরে ক্রমশ ওই প্রৌঢ়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। শেষে হাসপাতালে মৃত্যু হয় রেহানা বেগমের। এখনও পর্যন্ত এই নিয়ে হাওড়া এলাকায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
বুধবারই চেতলায় কাউন্সিলর কাজরি বন্দ্যোপাধ্যায়কে সঙ্গে নিয়েই ডেঙ্গু পরিস্থিতি খতিয়ে দেখলেন কলকাতার মেয়র। জমা জল থেকে আগাছা পরিষ্কার করার বিষয় সবই খতিয়ে দেখেন তিনি। পাশাপাশি ড্রোন উড়িয়ে ভবানীপুর এলাকার বাড়িগুলি পরীক্ষার ব্যবস্থা হবে বলেও জানান তিনি। উল্লেখ্য, রাজ্যের সে সব জায়গায় ডেঙ্গুর প্রকোপ সবথেকে বেশি, তার মধ্যে কলকাতা এবং বিধাননগর অন্যতম। এদিকে, ডেঙ্গু সম্পর্কে মানুষ সচেতন না হলে, প্রয়োজনে ‘গ্রেফতারি পরোয়ানা’ জারি করার ব্যাপারেও এদিন হুঁশিয়ারি দেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। এদিন এ প্রসঙ্গে ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘নির্মীয়মাণ প্রায় সকল বাড়িগুলি খতিয়ে দেখব। যদি দেখি কোনও বাড়িতে জল জমে রয়েছে সেই বাড়িগুলিতে স্টপ-ওয়ার্ক নোটিস পাঠাব। তারপর সেগুলিকে পরিস্কার করতে বলব। পাশাপাশি তার খরচ-খরচার সঙ্গে আমাদের খরচা যোগ করব। এরপরও দেখি যদি কাজ না হয় মিউনিপ্যাল কোর্ট থেকে গ্রেফতারি পরোয়ানা জন্য আর্জি জানাব।’