বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ আচমকাই বেসুরো! এবার দলের বিরুদ্ধে একরাশ জমে থাকা ক্ষোভ উগরে দিলেন দেবাংশু ভট্টাচার্যকে। আগামিকাল ২ মে তৃণমূল সরকারের তৃতীয়বার সরকার গঠনের বর্ষপূর্তি। এদিকে, ঠিক তার আগেই পুরনো তৃণমূল এবং নব্য তৃণমূল নিয়ে বিতর্ক উসকে দিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের এই জনপ্রিয় যুবনেতা। রবিবার নিজের ফেসবুক ওয়ালে দেবাংশুকে বিতর্কিত মন্তব্য করতে দেখা যায়।
ঠিক কী লিখেছিলেন দেবাংশু? যুব তৃণমূলের এই নেতা ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘গতবছর ঠিক আজকের দিন পর্যন্ত রাজ্যে যে তৃণমূলটা ছিল, সেটাই নিষ্কলুষ, ধান্দাবাজহীন, অকৃত্রিম, প্রকৃত তৃণমূল। তারপর তো বন্যা এল! গঙ্গার জল, ড্রেনের জল সব মিলেমিশে একাকার! তবুও জলে একটা স্ট্রং ফিল্টার আছে বলেই বিশ্বাস। তারা পেছনের সারিতেই থাকবেন, সেটাও বিশ্বাস করে দলের কর্মীরা।’
যদিও এই পোস্ট করার কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি তা ডিলিট করেও দেন। তবে, ডিলিট করলেও, তিনি যে এই পোস্টে আদতে দলবদলকারীদের দিকেই ইঙ্গিত করেছেন তিনি, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। ২০২১-এর ২ মে বিধানসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণা হয়। বিপুল সংখ্যা গরিষ্ঠতা নিয়ে তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় আসে তৃণমূল কংগ্রেস। এরপর থেকে শাসকদলে ফের ‘ঘরছাড়া’দের ঘরে ফেরার পালা শুরু হয়। যারা নির্বাচনের আগে দল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েছিলেন, তাঁরা ফের এক এক করে ফিরতে শুরু করেন। সেই তালিকায় প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, সব্যসাচী- সহ অনেক নেতা, বিধায়ক, সাধারণ তৃণমূল কর্মী রয়েছেন। শুধু ঘরছাড়ারাই নন, তৃণমূলে যোগ দেন বিজেপির অনেকেই।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, রবিবার ফেসবুক পোস্টে এই ঘটনাকেই টার্গেট করেছেন তৃণমূলের এই জনপ্রিয় যুবনেতা। এদিকে, দেবাংশুর এই পোস্টের পরে, স্বাভাবিকভাবেই শুরু হয় বিতর্ক। রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার কটাক্ষের সুরে বলেন, ‘হতাশ হয়ে লিখেছেন হয়ত, বাচ্চা ছেলে। আগে বলেছিলেন, এরা যদি তৃণমূলে ফিরতে চায়, দরজার সামনে শুয়ে পড়ব। এদের তৃণমূলে ফেরা আটকাব। এরপর দেখা গেল, উনি পাপশ হয়ে শুয়ে থাকলেন, আর যারা তৃণমূল থেকে বেরিয়েছিলেন তারা পা মুছে ঢুকে গেলেন। সেজন্য হতাশা বেড়ে গিয়েছে। যোগা করতে বলুন।’
নিজের পোস্ট ঘিরে বিতর্কের জেরে অবশেষে সেই পোস্ট ডিলিট করে দেন দেবাংশু ভট্টাচার্য। আগের পোস্ট ডিলিট করে নতুন একটি পোস্ট করেন। সেখানে তিনি লেখেন, ‘শেষ পোষ্টের অর্থ হয়ত ঠিকঠাক বোঝাতে পারিনি। অকারণ বিতর্ক হচ্ছে। তাই পোস্ট ডিলিট করলাম। কর্মীরাই দলের সম্পদ। সবাইকে নিয়ে চলতে হবে। তৃণমূল কংগ্রেস শৃঙ্খলাবদ্ধ দল। দলের সিদ্ধান্তের উপর ভরসা রাখতে হবে। এই দলে কর্মীদের স্বার্থ সবার আগে দেখা হয়। কারণ, এই দলের নেত্রীর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।’