বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ সুখবর! আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগেই বড় উপহার কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারের তরফে। লক্ষ্মিবারেই রাজ্য সরকারের কোষাগারে ঢুকল প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকা। প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ আবাস যোজনায় ৮ হাজার ২০০ কোটি টাকা পাল রাজ্য সরকার। রাজ্যে মোট ১১ লক্ষ বাড়ি নির্মাণের জন্য এই টাকা বরাদ্দ করেছে কেন্দ্র।
জানা গিয়েছে, ৮ মাস পরে এই টাকা এল রাজ্য সরকারের হাতে। ১১ লক্ষ বাড়ি নির্মাণের জন্য খরচ হবে প্রায় ১৩ হাজার কোটি টাকা। প্রকল্পের নিয়ম মোতাবেক, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পে মোট খরচের ৪০ শতাংশ দেবে রাজ্য এবং ৬০ শতাংশ দেবে কেন্দ্র সরকার। সেই অনুযায়ী, ১১ লক্ষ বাড়ি তৈরির জন্য রাজ্যকে ৮ হাজার ২০০ কোটি টাকা দিল কেন্দ্রের মোদী সরকার।
প্রসঙ্গত, একের পর এক বঞ্চনার অভিযোগ আসছিল কেন্দ্রের বিরুদ্ধে। ১০০ দিনের কাজ থেকে আবাস যোজনার টাকা কেন্দ্রের মোদী সরকার দিচ্ছে না বলে বারবার অভিযোগে সরব হয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে অন্যান্য মন্ত্রী এবং বিধায়করা। এই নিয়ে শাসক-বিরোধী গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব লেগেই রয়েছে। এর মধ্যেই কেন্দ্রের পক্ষ থেকে রাজ্যকে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে রাজ্যকে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার প্রকল্পের টাকা দেওয়ার ঘটনা বিশেষ তাৎপর্যমূলক।
এই টাকা দেওয়ার পিছনে পঞ্চায়েত ভোট বড় ‘ফ্যাক্টর’ বলে দাবি করেছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। তাঁদের মতে, কেন্দ্রের পক্ষ থেকে আবাস যোজনার টাকা পাঠানোর ঘটনায় বিজেপির হাতে এল বড় অস্ত্র। বিশেষ করে, বুধবার পুরুলিয়ার জনসভায় মিঠুন চক্রবর্তীর আবাস যোজনায় ঘর দেওয়া নিয়ে প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরের দিনই কেন্দ্রের পক্ষ থেকে রাজ্যের কোষাগারে টাকা ঢোকার ঘটনা বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ।
উল্লেখ্য, বুধবার পুরুলিয়ার লুধুড়কা গ্রামের জনসভায় উপস্থিত সকল মানুষের সমস্যার কথা জানতে চান বিজেপি নেতা মিঠুন চক্রবর্তী। জবাবে উপস্থিত অনেকেই আবাস যোজনার ঘর না পাওয়ার কথা জানান মহাগুরু-কে। সেই সঙ্গে কেন্দ্র সরকার টাকা দিচ্ছে না বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন অনেকেই। তখন তাঁদের আশ্বস্ত করে বিজেপি নেতা মিঠুন চক্রবর্তী বলেন, ‘সড়ক যোজনা, ১০০ দিনের কাজের টাকা, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ঘর- সব পাবেন। কেউ বঞ্চিত হবেন না।’
এখানেই শেষ নয়, টাকা নিয়ে আশ্বাস্ত করার পাশাপাশি, ১০০ দিনের কাজের টাকা, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ঘর না পাওয়ার জন্য নাম না করে রাজ্য সরকারকেই দায়ী করেন মিঠুন। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ঘর দেওয়ার জন্য আবাস যোজনা করেছেন। কিন্তু এখানে কাকে টাকা পাঠাবে? এরা সবাই তো নিয়ে বসে আছে। কেন্দ্র তার জন্য হিসাব চেয়েছে। কিছুদিনের জন্য টাকা আটকে রেখেছে। হিসাব দিলেই টাকা দিয়ে দেবে।’
উল্লেখ্য, মহাগুরু মিঠুন চক্রবর্তীর এই প্রতিশ্রুতির পরদিনই কেন্দ্রের পক্ষ থেকে প্রায় ৮ মাস পরে রাজ্যের কোষাগারে আবাস যোজনার টাকা আসল। এই ঘটনা বিজেপির হাতে যে বড় অস্ত্র তুলে দিল, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহই নেই। অন্যদিকে, আগামী ৫ ডিসেম্বর দিল্লি যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুখোমুখি হওয়ার আগেই কেন্দ্রের তরফে আবাস যোজনার টাকা ঢুকে গেল। এটাও তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়। তবে, অনেকে আবার এটাও মনে করছেন যে, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এই টাকা ঢোকা রাজ্য সরকারের উন্নয়নকেই এগিয়ে নিয়ে যাবে।