বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ বাংলাদেশের ওষুধ দেওয়া হচ্ছে কাঁথির হাসপাতালে। কিন্তু কোথা থেকে এল বাংলাদেশের ওষুধ? তা নিয়েই ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এবার সেই বিতর্কে মুখ খুলল রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ওই ওষুধ বাংলাদেশের তরফ থেকে ভারত সরকারকে দান করা হয়েছিল৷ সেই ওষুধই কেন্দ্র সরকার রাজ্যকে দিয়েছিল৷ কলকাতার সেন্ট্রাল মেডিক্যাল স্টোর ঘুরে সেই ওষুধই গেছে পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি হাসপাতালেও৷
স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে সব ওষুধই বৈধ। পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি মহকুমা হাসপাতালের বহির্বিভাগ থেকে বাংলাদেশের তৈরি ডক্সিসাইক্লিন ক্যাপসুল দেওয়া হয়েছিল রোগীদের। ডক্সিসাইক্লিইন নামে ওই অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধটির রাংতার গায়ে গণপ্রজাতান্ত্রিক বাংলাদেশ, বাংলাদেশের সম্পদের মতো নানা লেখা ছিল৷ পাশাপাশি সেফ্রাডিন নামে বাংলাদেশে তৈরি আরও একটি ওষুধও রোগীদের দেওয়া হচ্ছিল রাজ্যের হাসপাতালে। এদিকে, মঙ্গলবার সেই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই শুরু হয়ে যায় জোর বিতর্ক। ভারতে তৈরি ওষুধ না দিয়ে, কেন বাংলাদেশের তৈরি ওষুধ দেওয়া হল রোগীদের, এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। এরপরই এই বিতর্কে মুখ খুলে যাবতীয় প্রশ্নের উত্তর দেয় স্বাস্থ্য ভবন।
ওষুধের পাতাগুলির ওপরে লেখা ছিল ‘বাংলাদেশ গণপ্রজাতন্ত্রি সরকারের সম্পদ। ক্রয় বিক্রয় আইনত অপরাধ।’ এই ওষুধ কোথা থেকে এল সে নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে বিভিন্ন মহলে। এরপর তদন্ত কমিটি গঠন করে ঘটনার তদন্ত শুরু করে নন্দীগ্রাম জেলা স্বাস্থ্য দফতর। তবে, ওই ওষুধগুলির মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়নি এখনও। সেই ওষুধে রুপোলি অংশে লেখা ২০২৪ সালে ওই ওষুধের মেয়াদ শেষ হবে।
অন্যদিকে, ওই ওষুধগুলি সম্পর্কে কিছুই বলতে পারেননি হাসপাতালে সুপার। তিনি জানিয়েছিলেন, রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকেই ওই ওষুধ সরবরাহ করা হয়। বাংলাদেশের ওষুধ কোথা থেকে এল তা নিয়ে এরপর তদন্তের দাবি জানান তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারীও৷ খোঁজ শুরু করে স্বাস্থ্য দফতরও।
এ প্রসঙ্গে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গত ৩ জুন কেন্দ্রীয় সরকারের অধীন সংস্থা বাংলাদেশের ওই ওষুধগুলি রাজ্য সরকারকে পাঠিয়েছিল। আরও বলা হয় যে, ওই ওষুধগুলি বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রকের থেকে সাহায্য হিসেবেই এদেশে পাঠানো হয়েছিল। এ প্রসঙ্গে এদিন রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী জানিয়েছেন, ‘সাহায্য হিসেবে পাওয়া বাংলাদেশের ওই ওষুধ রাজ্যের সেন্ট্রাল মেডিক্যাল স্টোর থেকে গত ৫ ও ৭ জুন হাওড়া, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর ও নন্দীগ্রাম স্বাস্থ্য জেলায় পাঠানে হয়েছিল। এই সব ওষুধ বৈধ এবং তা যথাযথ নিয়ম মেনেই সরবরাহ করা হয়েছে।’ কাজেই এর মধ্যে বিতর্কের কিছু নেই বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।
অন্যদিকে, নন্দীগ্রাম জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্য ষড়ঙ্গী বলেন, ‘বাংলাদেশের ওষুধ নিয়ে যে আতঙ্ক ছড়ানো হয়েছিল, তা ঠিক নয়। সরকারি হাসপাতালের পক্ষ থেকে কোনও অবৈধ ওষুধ দেওয়া হয়নি রোগীদের। এই সব ওষুধ ‘যশ’-এর সময় সাহায্য হিসেবে পাঠিয়েছিল বাংলাদেশ সরকার। জেলার বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে সেই ওষুধ কয়েকজনকে দেওয়া হয়েছে।’