বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ বালিগঞ্জ উপনির্বাচনে জয়ী তৃণমূল প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয় শপথগ্রহণ নিয়ে জটিলতা, ধোঁয়াশা কাটল না। কে পাঠ করাবেন শপথবাক্য? উত্তর এখনও অধরা। রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় শনিবার এক টুইট বার্তায় জানিয়েছেন যে, পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বাবুল সুপ্রিয়কে শপথবাক্য পাঠ করাবেন।
কিন্তু আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় শপথবাক্য পাঠ করাতে অস্বীকার করেছেন। তিনি মনে করেন, স্পিকার থাকতে, এই কাজ তাঁর করা মানে, পরোক্ষে স্পিকারকে অসম্মান করা। অন্যদিকে, স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় এই প্রসঙ্গে জানিয়েছে, ‘রাজ্যপাল সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাই কিছু বলব না। তবে, সংসদীয় রীতি বলে একটা শব্দ আছে, সেটা সকলের মনে রাখা উচিত।’
এদিকে, ইতিমধ্যেই বিধানসভায় স্পিকারকে দিয়ে শপথবাক্য পাঠ করানোর আর্জি জানিয়েছিলেন বাবুল সুপ্রিয়। এবার টুইটে তাঁর জবাব দিলেন রাজ্যপাল। শপথ নিয়ে বাবুল সু্প্রিয়র ট্যুইট সংবিধানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এমনটাই অভিযোগে জানিয়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়।
রবিবার বাবুলের অনুরোধ খারিজ করে দেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। তাঁর মতে, ভারতীয় সংবিধানের ‘১৮৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আমার ক্ষমতার ভিত্তিতে ডেপুটি স্পিকারকে শপথবাক্য পাঠ করানোর দায়িত্ব দিয়েছি। তাঁর কাছ থেকে বাবুল শপথগ্রহণ করবেন।’
অন্যদিকে, বাবুল শপথগ্রহণের জট কাটাতে সম্প্রতি নিজেই উদ্যোগী হন। টুইটার মারফত ধনকড়কে অনুরোধ করে তিনি লেখেন, ‘সুব্রত মখোপাধ্যায়ের প্রয়াণের পর থেকে বালিগঞ্জ বিধায়ক শূন্য। শপথবাক্য পাঠ করাতে দয়া করে স্পিকারকে অনুমতি দিন, যাতে আমি কাজ শুরু করতে পারি।’ কিন্তু বাবুলের এই অনুরোধ ফিরিয়ে দিলেন ধনকড়। শপথ বাক্য পাঠ করানো নিয়ে এই টানাপড়েনের মধ্যে বাবুল সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন যে, ছেলেকে শপথ নিতে দেখতে চেয়েছিলেন তাঁর বাবা। কিন্তু এই ঝামেলার মধ্যে সেটা না দেখেই আমেরিকা চলে যেতে হল তাঁকে। বিমানের হাতে শপথবাক্য পাঠ করতে পারলে ভাল হত বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে, স্পিকার থাকা সত্ত্বেও কেন ডেপুটি স্পিকারকে শপথবাক্য পাঠ করানোর দায়িত্ব দিতে চাইছেন রাজ্যপাল ধনখড়? রাজনৈতিক মহলের মতে, এর নেপথ্যে রয়েছে রাজ্যপাল এবং বিধানসভার স্পিকারের মধ্যে বারবার তৈরি হওয়া সংঘাত। চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারি, বিধানসভা চত্ত্বরে দাঁড়িয়েই পরস্পর সংঘাতে জড়ান রাজ্যপাল ও স্পিকার। তবে, এই ইস্যুতে রাজ্যপালের পাশেই দাঁড়িয়েছে রাজ্য বিজেপি প্রতিবারের মতোই।
কাজেই এখনও জট কাটল না বাবুল সুপ্রিয়র শপথগ্রহণ নিয়ে। স্পিকার নাকি ডেপুটি স্পিকার, শেষ পর্যন্ত বাবুলকে শপথবাক্য কে পাঠ করাবেন, সেদিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল।