বংনিউজ২৪×৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED)-এর রেড চলছিল কলকাতায়। জনৈক অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বাড়িতে তল্লাশি চালাতেই উদ্ধার হল নগদ ২০ কোটি টাকা। টালিগঞ্জের নিকটবর্তী হরিদেবপুরের ডায়মন্ড সিটি সাউথের অভিজাত আবাসনের ওই ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালায় ইডি। বিছানা ও আলমারি থেকে উদ্ধার হয় এই বিপুল পরিমাণ টাকা।
ইডি এবং ব্যাঙ্ক আধিকারিকদের সহায়তায় নগদ টাকা গুনে দেখা যায় ওই ফ্ল্যাটে ২০ কোটি টাকা গচ্ছিত ছিল। নগদ টাকার পাশাপাশি মিলেছে ২০ টি মোবাইল ফোনও। উদ্ধার হয়েছে বহু সোনা এবং বৈদেশিক মুদ্রা। প্রেস বিবৃতি দিয়ে ইডি জানিয়েছে, অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হওয়া নগদ ২০ কোটি টাকার সঙ্গে এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতির যোগ রয়েছে। কিন্তু কে এই অর্পিতা মুখোপাধ্যায়? জানা গিয়েছে, তিনি ওড়িয়া ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে যুক্ত। এমনকি বেশ কিছু ছবিতেও অভিনয় করেছেন তিনি।
শুক্রবার রাত ৮ টা ১০ নাগাদ একটি ট্যুইট করে ইডি। ট্যুইটে অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া টাকার পাহাড়ের ছবি দিয়ে লেখা হয়, ‘পশ্চিমবঙ্গের স্কুল সার্ভিস কমিশন এবং পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে নেমে বেশ কয়েকটি জায়গায় তল্লাশি চালানো হচ্ছে।’ জানা গিয়েছে, এদিন তল্লাশিতে ৫০০ এবং ২০০০ টাকার নোট মিলিয়ে অন্তত নগদ ২০ কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে।
ইডি সূত্রে খবর, এদিন অর্পিতার ফ্ল্যাটে তিনটি নোট গোনার মেশিন নিয়ে যাওয়া হয়। ব্যাঙ্ক আধিকারিকদের সহায়তায় শুরু হয় টাকা গোনার কাজ। কিন্তু এই বিপুল পরিমাণ অর্থ কোথা থেকে এলো তাঁর ফ্ল্যাটে? যদিও ইডির ধারনা, এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গে এর নিবিড় যোগ রয়েছে। তবে সেটি এখনও প্রমাণসাপেক্ষ।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার সকালে এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় রাজ্যের তৎকালীন শিল্পমন্ত্রী তথা প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাকতলার বাড়িতে তল্লাশি চালায় ইডি। ইডির সঙ্গে উপস্থিত ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনীও। বাড়ির বাইরে মোতায়েন ছিল কলকাতা পুলিশের একটি দল। এদিন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ির রক্ষীদের ফোন বাজেয়াপ্ত করে চলে লাগাতার তল্লাশি। দুর্নীতিতে আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত বিষয় খতিয়ে দেখতেই তৃণমূল নেতার বাড়িতে ইডি তল্লাশি চালায় বলে খবর। ইডির তল্লাশির হাত থেকে রেহাই মেলেনি শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরে অধিকারীর। তাঁর বাড়িতেও হানা দেয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। সব মিলিয়ে রাজ্যের মোট ১৩ একটি জায়গায় তল্লাশি চালায় ইডি।
প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গের স্কুল সার্ভিস কমিশন এবং পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের নিয়োগের ক্ষেত্রে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে অনুত্তীর্ণ এবং কম নম্বর প্রাপ্ত পরীক্ষার্থীদের চাকরিতে নিয়োজিত করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। এই বিষয়ে মামলাকারীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ইডি। তাতে স্পষ্ট, এই পুরো দুর্নীতির নেপথ্যে শিক্ষা দফতরের একাংশ যুক্ত রয়েছেন এবং তাঁরা আর্থিকভাবে ব্যাপক লাভবান হয়েছেন। পুরো বিষয়টিতে তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে পার্থ চট্টোপাধ্যায় কোনওভাবে যুক্ত ছিলেন কিনা এবং তিনি আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে অবগত ছিলেন কিনা তা খতিয়ে দেখতেই মন্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে ইডি।