বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ বুধবার ভোরে ভয়াবহ ভূমিকম্পে পুরোপুরি বিধ্বস্ত আফগানিস্তান। অসংখ্য মানুষের মৃত্যুর পাশাপাশি আহতের সংখ্যাও অগণিত। সেই সঙ্গে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও অনেক বেশি। এই পরিস্থিতিতে আফগানিস্তানের পাশে থাকার আশ্বাস দিল ভারত।
আফগানদের জন্য যথাসম্ভব সাহায্যের আশ্বাস দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি এও জানিয়েছেন যে, সেদেশের আম জনতার কাছে ত্রাণ পৌঁছে দিতে প্রস্তুত ভারত। উল্লেখ্য, বুধবার ভোরে ভয়াবহ ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে আফগানিস্তান। রিখটার স্কেলে এই কম্পনের মাত্রা ছিল ৬.১। জানা গিয়েছে, বুধবার ভোরে আচমকাই কম্পন অনুভূত হয় আফগানিস্তানের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে। এই কম্পনের উৎসস্থল ছিল খোস্ত শহর। খোস্তের ৪৪ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে প্রবল কম্পন অনুভূত হয়। এর জেরে ভেঙে পড়ে একাধিক বাড়ি।
আফগানিস্তানের দুর্যোগ মোকাবিলা বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে, বুধবার ভোরেই ভূমিকম্প হয়েছে। জানা গিয়েছে, সব মিলিয়ে আফগানিস্তান, পাকিস্তান এবং ভারতের প্রায় ৫০০ কিলোমিটার অঞ্চল এই ভুমিকম্পের কবলে পড়েছে। যদিও বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে আফগানিস্তান। এই ভূমিকম্পের সবথেকে ভয়ঙ্কর প্রভাব পড়েছে আফগানিস্তানের পাকতিকা জেলায়। তালিবান প্রশাসনের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের প্রধান মহম্মদ নাসিম হাক্কানি বুধবার জানিয়েছিলেন যে, এই পাকতিকা জেলাতেই অধিকাংশ বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আবার এই ভূমিকম্পের উৎসস্থল খোস্ত জেলার নানগরহর অঞ্চলেও একাধিক মানুষের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে ইতিমধ্যেই। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী মৃতের সংখ্যা ইতিমধ্যেই হাজার ছাড়িয়েছে।
এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে শোকপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নিজের টুইটার হ্যান্ডেলে তিনি লেখেন যে, আফগানিস্তানে বিধ্বংসী ভূমিকম্পের খবরে আমি গভীরভাবে দুঃখিত। প্রাণহানির ঘটনায় আমি মর্মাহত। এই কঠিন সময়ে আফগানিস্তানের পাশে আছে ভারত। দ্রুত সমস্ত ধরনের ত্রাণ সামগ্রী পাঠাতে আমরা তৈরি।’
এদিকে, আফগান সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক হেদায়াতুল্লা পাক্তিন জানিয়েছেন যে, আফগানিস্তানের এই অঞ্চলগুলির সাধারণ মানুষ খুবই দরিদ্র। তাঁরা পাথর, মাটি ও অন্যান্য উপাদান সংগ্রহ করেই বাড়ি বানান। পাকা বাড়ি এখানে দেখা যায় না। তাই ভূমিকম্পের জোরালো ধাক্কায় সব বাড়িই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উল্লেখ্য, আফগানিস্তানে তালিবান ক্ষমতায় আসার পর থেকেই গুরুতর অর্থনৈতিক সংকট চলছে সেদেশে। অধিকাংশ প্রদেশেই ন্যূনতম প্রয়োজনীয় জিনিসের অভাব রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বুধবারের এই ভয়াবহ ভূমিকম্প কার্যত দিশেহারা দেশটি। এই ক্ষয়ক্ষতি পূরণ করতে গিয়ে আরও গভীর সমস্যায় পড়তে হবে সেদেশের সরকারকে। এমনটাই মনে করা হচ্ছে।
এদিকে, আফগানিস্তানের সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যাচ্ছে, একের পর এক বাড়ি প্রায় মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। সারি দিয়ে রাখা হয়েছে মৃতদেহ। আবার কোথাও দেখা যাচ্ছে হেলিকপটারের মাধ্যমে চলছে উদ্ধারকাজ। তালিবান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের আধিকারিক সালাউদ্দিন আয়ুবি জানিয়েছেন, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাকতিয়া প্রদেশ। গতকালের ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তার মোকাবিলাত আন্তর্জাতিক মঞ্চের কাছে সাহায্য চেয়েছে তালিবান।